বরিশালের মেয়র হিসেবে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছেন গতকাল মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর)। তাঁর বর্ণাঢ্য যাত্রা হয়েছে কঠিন সময়ে। যাত্রা শুরু হলো পাহাড় সমান প্রত্যাশা পুরনের চাপ নিয়ে। বরিশালের মতো অনুন্ন্নত শহর কেন্দ্রিক একটি সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সমস্যা হচ্ছে অর্থের যোগান। এ সমস্যায় বরিশাল নিমজ্জিত। গত পাঁচ বছর যে সংকট ছিলো প্রকট। তবে এ দিক থেকে নতুন মেয়র অনেকটা ভাগ্যবান। বলা চলে মেয়র হিসেবে তার সূচনা হলো সোনার চামচ মুখে নিয়ে। মেয়রের মসনদে তার আসীন হবার আগেই জানাগেলো, বরিশাল নগরীর জন্য প্রায় ৭৯৭ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছেন সদাসয় সরকার।
এদিকে গত পাঁচ বছরে সরকারের পক্ষ থেকে কানাকড়িও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে জনশ্রুত আছে। অনেকের বিবেচনায় এর শানেনুজুল অর্থাৎ ‘কারণ ও উদ্দেশ্য’ অনেক গভীরে বলে মনে করা হয়। যেকোনো অনুন্নত সংস্থার জন্য অর্থের অভাব খুবই নিদারুণ সংকট। এরপরও সদ্য বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ নানান কৌশলে নগরবাসীর প্রত্যাশা পুরণের চেষ্টা করেছেন। তিনি আয় থেকে ব্যয় নির্বাহের অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্য কিংবদন্তীসম। আর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় তুলে আনার অসাধ্য সাধন এবং নগরীর দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন টেকসই মাত্রায় করার ক্ষেত্রে মেয়র সাদিক অনন্য দৃষ্টান্তÍ স্থাপন করেগেছেন। যতটুকু কাজ হয়েছে তার মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সাদিকের সমকক্ষ আর কোন মেয়রকে বিবেচনা করা হয় না বলে মনে করেন অনেকেই। পাশাপাশি নানান কৌশলে নগরীকে নাগরিক বান্ধব হিসেবে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে অনেকেই বলছেন। কিন্তু তার প্রধান সংকট ছিলো, সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ না পাওয়া। ফলে প্রধানমন্ত্রীর ভাইপুত হিসেবে তিনি তাঁর ক্যারিশমা দেখাতে পারেননি। অর্থ সংকটে হাবুডুবু খেতে খেতেই তার কেটেছে পুরো মেয়াদ। অই এক গান আছে না, ‘নাতি খাতি বেলা গেলো, শুতি পারলাম না!’ ফলে ‘আমরাই গড়ব আগামীর বরিশাল’ মেয়র সাদিকের এই বাসনা আর প্রস্ফুটিত হয়নি।
এদিকে সরকারি বরাদ্দ প্রেক্ষাপটে বিসিসির নতুন মেয়র চাঁদ কপাল নিয়ে গদীসীন হয়েছেন। এ নিশ্চয়ই আনন্দ সংবাদ। এ সংবাদে মিষ্টিও বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এতো আনন্দের মধ্যেও আশংকার দিকও আছে। তা হচ্ছে সরকারি বরাদ্ধের বিপুল অংকের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ কী সফল হবেন? এ ক্ষেত্রে যে দক্ষতার প্রয়োজন তা তাঁর নিজের এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের আছে কী? অনেকের বিবেচনায় এ এক মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন!
গত পাঁচ বছরে দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর উন্নয়নের দিক থেকে মডেল হিসেবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে বিবেচনা করা হয়। কেবল ইট পাথরের উন্নয়ন নয়, পরিবেশগত উন্নয়নের মডেল হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। ফলে রাজশাহীর তাপমাত্রা কমেছে অন্তত চার ডিগ্রী। এ সিটির মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে শহীদ হওয়া আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের পুত্র তিনি। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নতুন মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহও পঁচাত্তরের থিংকট্যাংকের নীল নকশায় ১৫ আগস্ট শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাতের পুত্র। এবং তিনি নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রাণে বেঁচেছেন ঘটনাচক্রে। শহীদ পুত্র হিসেবে খায়রুজ্জামান লিটন এবং আবুল খায়ের আবদুল্লাহ একই কাতারের। কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে, একজন ছিলেন রাজনীতিতে এবং অপরজন সময় কাটিয়েছেন ব্যবসায়। তাও বরিশালে নয়, খুলনায়। যে কারণে ১২ জুন মেয়র নির্বাচনের সুবাধে নগরবাসী আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে দৃশ্যত চিনলেও বোধগম্য কারণেই নগরবাসীকে তিনি সেই অর্থে এখনো চেনেন না। অবশ্য চেনার কথাও নয়। বিশেষ করে মেয়র নির্বাচনে মনোনয়ন পাবার পর তাঁর চারদিকে যারা জুটেছেন তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ‘ঘুঘু স্বভাবের’ ব্যক্তি ছিলেন। এদের মধ্যে একজনকে বলা হয়, বরিশালের মোশতাক। এদের আসলে চেনা কঠিন। এই বাস্তবতার বাইরে থাকার কথা নয় আবুল খায়ের আবদুল্লাহও। ফলে নির্বাচনের সময় কেউ কেউ তাকে ‘অন্ধের হাতি’ দেখিয়েছেন বলে রটনা আছে। আর ঘটনা হচ্ছে, নির্বাচনী প্রচারণায় অনেক ক্ষেত্রেই আওয়ামী রাজনীতি করা ব্যক্তির বাড়ি এড়িয়ে তাঁকে পাশের বাড়িতে নেয়া হয়েছে।
কারো কারো মতে, নির্বাচনের সময় মিসগাইড করার বিষয়টি আবুল খায়ের আবদুল্লাহ পরে কমবেশি টেরপেয়েছেন। আর দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়েছে তার স্ত্রীর কাছে। এরপরও সমস্যা হচ্ছে, আবুল খায়ের আবদুল্লাহ প্রচলিত অর্থে রাজনৈতিক প্রবণতার মানুষ নন। আর ফুল টাইম রাজনীতি করার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতার বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ। ফলে দাঁড়াচ্ছে এই, নগরের রাজনীতিতে তিনি হয়তো খুববেশী অবদান রাখতে পারবেন না। যেমন পারেননি সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব:) জাহিদ ফারুক শামীম। তবে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। হয়তো মেয়র হিসেবেও প্রশংসিত হবেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তবে এইটা সময়ই বলেদেবে। প্রত্যাশিত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এই বাস্তবতার পরও আবুল খায়ের আবদুল্লাহ হয়তো অন্যরকম সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন। তা হচ্ছে নগরের উন্নয়ন। কারণ, সরকারের তরফ থেকে তার অর্থের অভাব হবে না। যার বড় রকমের আলামত সবার কাছে স্পষ্ট হয়েছে ৯ নভেম্বর। কিন্তু এরপরও প্রশ্ন থেকে যায়। তা হচ্ছে, কতটা দক্ষতার সাথে তিনি এই অর্থ ব্যয় এবং ব্যবহার করতে পারবেন? তিনি কী উন্নয়নের নামে নগরীর খালগুলো হত্যা করে বক্স কালভার্ট নির্মাণ করবেন। যা করেছেন প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণ। নগরবাসীর কাছে স্পষ্ট, বরিশাল নগরীর জনভোগান্তির অন্যতম কারণ হচ্ছে, রাস্তা বন্ধ করে এবং খাল পঙ্গু করে মার্কেট নির্মাণ। এর চেয়েও ভয়াবহ হচ্ছে, খাল হত্যা করে বক্স কালভার্ট বানানো। নতুন মেয়র সড়কে লিপিস্টিক উন্নয়ন করার পথে হাটবেন কিনা তাও এক বড় প্রশ্ন। যে কাজ করার ক্ষেত্রে শীর্ষ নাম আহসান হাবিব কামাল। সবাই জানেন, মেয়র কামালের সময় সংস্কার করা রাস্তা বছর না ঘুরতেই গুটি বসন্ত রোগীর চেহারার মতো হতো। নতুন মেয়র কী বিগত দিনের ধারায় হাটবেন? এ প্রশ্ন অতি প্রকট!
অতীতের বাস্তবতায় বরিশালের নতুন নগরপিতা আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো প্রশ্ন সচেতন মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব প্রশ্নের উত্তরের জন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতেই হবে। তবে দীর্ঘ সময়ের জন্য নয় নিশ্চয়ই। কারণ একটি প্রবচন আছে, ‘সকালের সূর্যই বলে দেয়, দিনটি কেমন যাবে।’ ইংরেজিতে গালভরা উচ্চারণ, ‘মর্নিং শোজ দ্যা ডে।’ দেখাযাক, নগর পিতা আমাদের কোথায় নিয়ে যান। অথবা তিনি নিজে কোথায় যান!
এদিকে যারা অতি সাবধানী তারা মনে করেন, নতুন মেয়রের পথচলা হবে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এবং তার সাফল্যের সম্ভাবনা এবং ব্যর্থতার আশংকা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠের মতো কাছাকাছি অবস্থানে। যা নির্ভর করে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতার উপর। আগামী মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার অব্যাহত থাকলে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ হয়তো ঢাকার মেয়র আনিসুল হকের কাছাকাছি সফল হলেও হতে পারে। অন্যথায় কোথার জল কোথায় গড়াবে তা বলা কঠিন। কারণ, দেশের রাজনীতি এখন ‘কলা পাতার পানি’ দশায় আছে। এমনটাই মনে করেন পর্যবেক্ষক মহলের একটি অংশ।
দখিনের সময় ডেস্ক:
লাইফ সাপোর্টে থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির প্রথম সিনেমা ‘ভালোবাসা সীমাহীন’-এর পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল। গুলশানের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...
দখিনের সময় ডেস্ক:
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে টিকটক। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে টিকটক। যেখানে ‘ফিডস’ নেটওয়ার্কের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
আপনার কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য সুস্বাদু কোনো খাবার প্রয়োজন এবং সেইসঙ্গে অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইছেন? এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হতে পারে খেজুর।...
দখিনের সময় ডেস্ক:
লাইফ সাপোর্টে থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির প্রথম সিনেমা ‘ভালোবাসা সীমাহীন’-এর পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল। গুলশানের...
নয়ন সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজীর বিরুদ্ধে অনিয়ম,দুনীতি ও অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈশোম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গতকাল...
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.