ঘোষিত তপশিল অনুসারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ৭ জানুয়ারি। মনোনয়ন বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর এবং ভোট গ্রহণ ৭ জানুয়ারি। এই শিডিউল ধরেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে। ২৩ নভেম্বর শুরু হয়েছে বাছাই। এ ক্ষেত্রে মনোনয়ন ফরমের দাম কী কারণে ৫০ হাজার হয়েছে—তা একটি বড় প্রশ্ন। এর চেয়েও অনেক বড়, প্রায় মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন, কারা পাবেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন? এ প্রশ্নের প্রকৃত জবাব একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাই জানেন। তবে একাধিক সূত্র বলছে, এবার সোমারসেট মমের গল্পের প্যালেসটাইল টাইগার তথা প্রবীণ তকমার আমু-তোফায়েলের মতো নেতারা রয়েছেন তলানিতে। আর জয়জয়কার শামি-সাদিক-শান্তদের মতো তরুণ, মেধাবী ও তেজীদের। যারা নারায়নগঞ্জ-বরিশাল-ভোলার সীমানা ছাড়িয়ে আলোকিত ও অলোচিত।
বলা হচ্ছে, বিরাজমান বাস্তবতায় রাজনীতির আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা—সাধারণের কাছেও দৃশ্যমান। ফলে কেউই স্বস্তিতে নেই। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, নানান সংকট অধিকতর ঘনীভূত হচ্ছে। এই কঠিন বাস্তবতার বাইরে নয় দোর্দণ্ড প্রতাপের বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত পাল্টাচ্ছে দৃশ্যপট, যা রাজনীতিতে প্রচণ্ড দুর্যোগের আভাস দিচ্ছে। তা হতে পারে প্রচণ্ড বেগের ঘূর্ণিঝড় অথবা ভয়ংকর সুনামিসম। আবার দুটি একত্রেও ঘটতে পারে। অথবা ঘটতে পারে, একের পর এক। সূত্র বলছে, এই আশঙ্কাকে তিন পর্বে ভাগ করা যায়। এক. ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ তারিখ। দুই. ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের আগে অথবা ভোট গ্রহণের দিন। তিন. ভোট গ্রহণের এক মাসের মধ্যে। নির্বাচনের শিডিউল পেছালে রাজনৈতিক দুর্যোগও পেছাবে। প্রসঙ্গত, ২০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন প্রকারান্তরে নির্বাচনী শিডিউল পেছানোর সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনী শিডিউল পেছানোর উদাহরণ আছে। সূত্র বলছে, রাজনীতিতে প্রচণ্ড বেগে ঘূর্ণিঝড় এবং ভয়ংকর সুনামি আশঙ্কা বিবেচনায় রেখেই আগামীর পরিকল্পনা করছেন বিশ্বনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তার পরিকল্পনার আওতায়ই সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রশ্নে ফ্রন্ট লাইনে এসেছেন শামি-সাদিক-শান্তদের মতো তরুণ প্রজন্ম এবং অনেক পেছনে চলে গেছেন আমু-তোফায়েলের মতো বৃদ্ধ প্রজন্ম।
এদিকে একটি মহল বলছে, মনোনয়ন প্রশ্নে বৃদ্ধ গ্রুপ পিছিয়ে থাকলেও তাদের একেবারে বাদ দেওয়া হবে না। কিছু রাখা হবে। কারণ, দুর্যোগ কাটিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে টেকসই সরকার গঠন করা সম্ভব হলে নখদন্তহীন প্রবীণ নেতাদের লাগবে রাষ্ট্রীয় কাজে তরুণদের প্রশিক্ষিত করার জন্য। তরুণ হাতিকে প্রশিক্ষিত করার জন্য যেমন বয়স্ক হাতিদের ব্যবহার করা হয়। তবে সংখ্যায় এই প্রবীণ গ্রুপ খুব বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, পাল্টি খাবার ক্ষেত্রে বরাবরই প্রবীণরা চ্যাম্পিয়ন। যার বড় উদাহরণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সে সময় যারা প্রবীণ ছিলেন, তাদের মধ্যে মাত্র চারজন পল্টি খাননি। যে কারণে তারা একই বছর ৩ নভেম্বর নিহত হয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। বাকি প্রবীণরা দাঁত কেলিয়ে খন্দকার মোশতাকের পাশে দাঁড়িয়ে হেসেছেন। মন্ত্রী হয়েছেন। নানান দায়িত্ব পালন করেছেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে আবু সাইদ চৌধুরীর মতো জমিদারপুত্রও খুনি মোশতাকের অনুগত হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার আগে আবু সাইদ চৌধুরী ছিলেন রাষ্ট্রপতি।
এত অতীতে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই। বলতে গেলে এই সেদিনের ঘটনা। সামরিক বাহিনী সমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার পর প্রবীণদের মধ্যে জিল্লুর রহমান ও মতিয়া চৌধুরী ছাড়া কতজন শক্ত অবস্থানে ছিলেন, তা কারও অজানা নয়। সে সময় আওয়ামী লীগের চার প্রবীণ নেতা সংস্কারবাদী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। যদিও বাস্তবে তারা ‘চার কুচক্রী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। এই চার কুচক্রীর মধ্যে এক নেতা সে সময় প্রায়ই বলতেন, ‘নেত্রী যে ভুল করেছেন, তাতে আগামী ২০ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’ একপর্যায়ে তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন স্ত্রীর কাছে থাকার কথা বলে দেশ ত্যাগ করেছিলেন। দীর্ঘসময় সিঙ্গাপুরেই অবস্থান করেছেন। জনশ্রুতি আছে, সিঙ্গাপুরে বসেই তিনি ওয়ান-ইলেভেন সরকারের পালের গোদাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। শুধু তাই নয়—একে-ওকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই হাতে কামিয়েছেন। তিনি এখনো জীবিত ও বাগাড়ম্বর করার মতো সুস্থ আছেন। অন্য একজন বেঁচে থাকলেও স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় নিজ এলাকায় অন্তত চারটি চাঞ্চল্যকর খুনের অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক সংসদ সদস্যকে হত্যা করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে রক্ষীবাহিনী। এদিকে ওয়ান-ইলেভেন সময় বীরপুরুষ বনে যাওয়া চারজনের মধ্যে দুজন এরই মধ্যে না ফেরার অনন্ত যাত্রায় রয়েছেন। এই দুজনের মধ্যে একজন আবার রেলের ‘কালো বিড়াল’ হিসেবে খ্যাত। এদিকে সেই ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর কিংস পার্টির ট্যান্ডল হিসেবে যারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশালে দায়িত্ব পালনকারী একজন এরশাদের সামরিক সরকারের সময়ও বরিশালে ‘কঠো’ দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বজ্রপাতসম ঘটনার পর এবং ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় প্রবীণদের ভূমিকা আওয়ামী লীগ প্রধান পুরোমাত্রায় স্মরণে রেখেছেন বলে বলছেন বিভিন্ন মহল। এ কারণেই নাকি এবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া প্রশ্নে প্রবীণদের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনে তরুণ-মেধাবী-তেজোদীপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক বিশ্লেষক বলেন, যারা এখনো সূর্যদীঘল বাড়ি সিনেমা দেখে মোহিত হন তাদের দিয়ে আর যাই হোক—আগামী রাজনীতির মাঠে টেকা যাবে না। বরং প্রয়োজন তাদের, যারা সাম্প্রতিক জাওয়ান মুভি দেখে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা ও প্রতিহত করার কৌশল ঝালিয়ে নেন। এ প্রসঙ্গে একটি সূত্র বলছে, মাঠ প্রশাসনের ওপর ভরসা করে এবার আর নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সম্ভব হবে না। আর যাই হোক, ২০১৪ ও ১৮ সালের মতো কাণ্ড আগামীতে আর সম্ভব নয়। বরং এবার স্থানীয় সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের ওপর নির্ভর করা ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে বলছেন অনেকে। এবার ২০১৪ সালের মতো ১৫৪ আসলে বিনা ভোটে পাস অথবা ২০১৮ সালের মতো আবাবিল পাখির ভোটে পাস করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বরং এ গুড়ে বালি। আর ওপরের অহি দিয়েও তেমন অর্জনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কাজেই প্রার্থীদেরই নিজ নিজ দায়িত্ব নিতে হবে। এ জন্যই প্রয়োজন তরুণ এবং সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী প্রার্থী। কাজেই হুইলচেয়ারে অথবা লাঠি ভর দিয়ে চলা, হাঁপানি বা জটিল পাইলস রোগে আক্রান্ত প্রার্থীদের ভাগ্যে এবার মনোনয়নের শিকে ছেঁড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই সোনার পাথরবাটির মতো বিষয়।
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে তরুণদের প্রাধান্যের অর্থ এই নয় যে, বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে রণে লিপ্ত হতে হবে; বরং মেসেজ পরিষ্কার করতে হবে, জোর খাটাতে চাইলে বিনা চ্যালেঞ্জে যাবে না। আর বিএনপি নির্বাচনে না এলেও অন্য বিপত্তি আছে। তা হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত যৌথভাবে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করবে। এটি অনিবার্য। তখন কে প্রতিহত করবে? অনেকেই মনে করেন, সে সময় পুলিশ আসলে প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারবে না। বিজিবি-আনসার নামিয়ে জোর খাটাতে গেলে অনেক লাশ পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। আর নির্বাচনের দিন লাশ পড়লে তাতে অন্যরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জোর আশঙ্কা থাকে। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, সামগ্রিক অবস্থা পুরো মাত্রায় বিবেচনায় রেখেই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড এবং তালিকা অনেক আগেই প্রস্তুত হয়েছে। মনোনয়ন ফরম বিক্রি মানে দলের ফান্ড জোগাড় করার কৌশল। অনেকটা আন্ডা-আলুর ব্যবসায় সিন্ডিকেট কাণ্ডের তরিকা!
দখিনের সময় ডেস্ক:
নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...
দখিনের সময় ডেস্ক:
নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার নির্বাচন কমিশনার শপথ নেবেন রোববার। এদিন বেলা দেড়টায় নতুন ইসিকে শপথ পাঠ করাবেন প্রধান...
দখিনের সময় ডেস্ক:
অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...
দখিনের সময় ডেস্ক:
ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...
দখিনের সময় ডেস্ক:
নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.