শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ এবং আওয়ামী ঘরানার লোকজনের জন্য এটি নিঃসন্দেহে আনন্দের সংবাদ। কিন্তু নিরানন্দের খবর, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক বিরোধ তৃণমূলে তুঙ্গে উঠেছে। এমনকি নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে হেরে অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন নৌকার অনেক প্রার্থী। কোনো কোনো প্রার্থী নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ভোট কারচুপির রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সঙ্গে হয়েছে দৃশ্যমান সহিংসতা।
নির্বাচনের পর এক সপ্তাহেই সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় শতাধিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও দোকান, বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, তপশিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন-পরবর্তী এক সপ্তাহে সারা দেশে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে শতাধিক। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত এবং ২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
নির্বাচনের পর সহিংসতার খবর বেশি পাওয়া গেছে মুন্সীগঞ্জ, ঝিনাইদহ, মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, রাজশাহী, পিরোজপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, পটুয়াখালীসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলায়। এসব সংঘাত-সহিংসতার বেশিরভাগই ঘটেছে নৌকা প্রতীক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। যারা প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক। প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকেই নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসতে থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি আরও নাজুক হয় নির্বাচনের পর। সহিংসতা ছাড়াও নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থকরা আমন্ত্রণ পাচ্ছেন না। পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, শিরোনাম, ‘কোথায় যাচ্ছে আওয়ামী লীগ’