মা নিয়ে অনেক গান-কবিতা-নাটক-গীত আছে, গদ্য-পদ্যে একাকার। এর বাইরেও চলে অনেক আদিখ্যেতা। কিন্তু কত শতাংশ মা বাস্তবে সমাদর-সম্মান-গুরুত্ব পান? বাস্তব চিত্র হতাশাজনক। একইভাবে পানি নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। বলা হয় পানি জীবন। পানি নিয়ে ভাবতে হবে, পানি বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র কী? এককথায়, ভয়ংকর!
মাদক যেমন আমাদের খেয়ে ফেলছে তেমনই আমরা পানি খেয়ে ফেলছি। এর সঙ্গে আছে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের পানি প্রত্যাহার। আর পানি ব্যবস্থাপনার নামে রাষ্ট্র যা করে চলেছে তা কতটা বাস্তবসম্মত সেটিও বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে অনেক আগেই। এর সঙ্গে চলে পানি হরিরলুট এবং পানি বিনষ্টের তান্ডব এবং রাষ্ট্রের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার শ্রাদ্ধ। এ ব্যাপারে একটি অতি ছোট উদাহরণ দেওয়া যাক।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি খুবই ছোট প্রকল্প, ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন (প্রথম পর্যায়) (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। বরাদ্দ ২ হাজার কোটি টাকা মাত্র! পানি মন্ত্রণালয়ের কাজের ক্ষেত্রে এ টাকা একেবারে নস্যি। তেজপাতাসম। কিন্তু এ প্রকল্পের কাজের নমুনায় সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ। খবর পেয়ে সতর্ক হলেন সদ্য সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। খোঁজখবরের ভিত্তিতে তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, ‘কাজের আগের ছবি, কাজের পরের ছবি এবং এক বছর পরের ছবি মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে হবে।’
নিশ্চয়ই তিনি আরও অনেক প্রকল্পের বিষয়ে এরকম নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে তার ওপর একটি মহল নিঃসন্দেহে রুষ্ট হয়েছে। কে জানে এ কারণেই তিনি এবার মন্ত্রিসভার বাইরে কি না।
বিনয়ের সঙ্গে বলে রাখা ভালো, মাদক কারবারি এবং পানি খাদকরা খুবই ক্ষমতাধর। বলা হয়, এদের হাত আসমান পর্যন্ত লম্বা। যে কারণে উল্লিখিত অতিক্ষুদ্র প্রকল্পেরও এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রকাশ্যে বলতে পারেন, ‘পাঁচটা সচিব আমার পকেটে থাকে।’ এই দম্ভোক্তি থেকে বোঝাই যাচ্ছে, পানির টাকা আসলে কোথায় যায়।
# বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪। শিরোনাম ‘পানি সমস্যায় বাংলাদেশ’