সাধারণভাবে বলা হয়, আমলাতন্ত্রের মাধ্যমেই দেশ শাসিত হচ্ছে। কিন্তু চলমান ধারার ফলাফল এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব কী? জরুরি প্রশ্ন, সুশাসন কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? স্বীকৃত বিষয় হচ্ছে, সুশাসন নিশ্চিত করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং দক্ষ ও মেধাবী সরকারি কাঠামো এবং এ দুইয়ের সুষ্ঠু ভারসাম্যে নিশ্চিত করা। কিন্তু অনেকের বিবেচনায়, আমাদের দেশে এ ভারসাম্যের বিষয়টি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত লাগাতরভাবে। যে ধারার সূচনা করে গেছেন সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান।
এদিকে যাত্রাগানের বিবেকের মতো হলেও সত্য কথা, শক্তভাবে বলার বাম ধারার রাজনীতিক ও মুক্ত চেতনার বুদ্ধিজীবী শ্রেণি প্রায় বিলুপ্ত। বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, রাজনীতিবিদরা যতই পথভ্রষ্ট হোন না কেন, জনগণের কাছে তাদের কিছুটা হলেও দায়বদ্ধতা থাকে। জনগণের মুখোমুখি হতে হয় স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে। অনেক বছর পর হলেও গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বিষয়টি বেশ উপভোগ্য হয়েছে। জনগণের কাছে রাজনীতিকদের জবাবদিহি করার বিষয়টি থেকেই যায়। এদিকে আমলাদের জবাবদিহি করার বিধান রয়েছে শুধু তাদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছে, যা কালের আবর্তে কোথায় পৌঁছেছে তা বিবেচনা করা প্রয়োজন।
অনেকের বিবেচনায়, বিষয়টি কাজির গোয়ালের বাস্তবতার পর্যায়ে পৌঁছেছে অথবা নেমেছে। আর আমলাতন্ত্রে ক্রমাগত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ করা হলে যে চিত্র মিলবে সেটা কিন্তু স্বস্তিকর নয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন একটি সংস্থার প্রধানের অবসরে যাওয়ার মাসখানেক আগে ‘জ্ঞান অর্জনে’ বিদেশ সফরের চেষ্টা এবং বিদায়ী বদলি বাণিজ্যের যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা কিন্তু আমলাতন্ত্রের অনেক গভীরের নগ্নদশা স্পষ্ট করেছে। এরকম ঘটনা অনেক আছে। এরা খুবই ক্ষমতাধর। সব মিলিয়ে দেশে বিরাজমান ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক ধারায় আমলাতন্ত্রের ক্ষমতা অনেক বেড়েছে। কিন্তু এ বৃদ্ধি ধারণের অবস্থায় কি আমাদের আমলাতন্ত্র উন্নতি হয়েছে?
দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ২২ মার্চ ২০২৪। শিরোনাম, “লেজে কুকুর নাড়ে!