Home শীর্ষ খবর জল্লাদের চোখে জল, পালিয়ে গিয়ে যৌতুকের মামলা দিয়েছে নববধু

জল্লাদের চোখে জল, পালিয়ে গিয়ে যৌতুকের মামলা দিয়েছে নববধু

দখিনের সময় ডেস্ক:
কষ্টে আছেন আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান। তিনি বলেছেন, কারাগারের বাইরের জীবন এত জটিল কেন? জীবন এত কঠিন হবে জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম। ৪৪ বছর কারাবন্দি থেকে বাইরে এসে নানা প্রতারণায় পড়ে মনে হচ্ছে কারাগারেই ভালো ছিলাম। গতকাল সোমবার (১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিজের জেল-পরবর্তী জীবনের অভিজ্ঞতা ও নানা প্রতারণার ঘটনা জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন জল্লাদ শাহজাহান। ‍এ সময় তার চোখে জল আসে।
সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান বলেন, আমি জানতাম না এত প্রতারক বাংলাদেশে রয়েছে। আমি ২৩ বছর বয়সে জেলে গিয়েছি, ৪৪ বছর কারাভোগ শেষে এক অন্যরকম দেশ দেখছি। বাইরের লোকের সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না, তারা এতটুকু নির্দয় হতে পারে আমার জানা ছিল না। তিনি বলেন, কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে আমাকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। আর কারাগারে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন শুভাকাক্সক্ষীর কাছ থেকে আশীর্বাদ হিসেবে পাওয়া টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা আমি সাহায্য হিসেবে পাই। কিন্তু এখন আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। এখন কেউ আমাকে খাবার দিলে খাই, না দিলে না খেয়ে থাকি। আমার থাকার জায়গা নেই। ফুটপাতে, গ্যারেজে বা কেউ আশ্রয় দিলে সেখানে থাকি।
সংবাদ সম্মেলনে শাহজাহান জানান, জেল থেকে বের হয়ে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সাথী আক্তার (২৩) নামে একটি মেয়েকে বিয়ে করে প্রতারিত হয়েছি। ৫৩ দিনের মাথায় সে পালিয়ে গিয়ে আমার নামে যৌতুকের মামলা দিল। সে আমার জমানো টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। অথচ আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেওয়ার সময় স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়েছে, যার সব প্রমাণ আমার হাতে রয়েছে। তার পরও আমাকে যৌতুকের মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমি থানায় মামলা দিতে গেলেও বউয়ের নামে মামলা করা যায় না বলে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। পরে আইনজীবীর সহযোগিতায় রবিবার আদালতে আমার স্ত্রী, শাশুড়িসহ ছয়জনের নামে মামলা করেছি। আমি চরম অর্থনৈতিক সংকটে আছি। আমার কাজ করার মতো ক্ষমতা নেই, আয়-রোজগার নেই, অর্থের জোগানদাতা নেই, নিজের থাকার জায়গা নেই। ৪৪ বছর কারাভোগ শেষ করে এসে আমি এখন বাইরের মানুষকে বুঝতে পারছি না। যেখানেই যাচ্ছি প্রতারকের খপ্পরে পড়ছি।
সংবাদ সম্মেলনে জল্লাদ শাহজাহান বলেন, আমি আমার উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপির কাছে গিয়েছি কিন্তু কেউ আমাকে এক মুঠো ভাত দেয়নি, কাজ দেয়নি, সাহায্য-সহযোগিতা করেনি। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিত্তবানদের কাছে নিজের থাকার ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ জানান। জল্লাদ শাহজাহান বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য দরকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। কোনোটিই আমি পাচ্ছি না। আমি আমার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। তিনি বলেন, কারাগার থেকে বের হলে আমার ভাগনে নজরুল আমাকে অটোরিকশা কিনে দেবে বলে আমার টাকা মেরে দেয়। এরপর অনেক কষ্টে একটা চায়ের দোকান দিই। আমার সঙ্গে যে ছেলেটি দোকানে সময় দিত, সে চার মাস আমার সঙ্গে থাকার পর দোকানে থাকা ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

শীত নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

দখিনের সময় ডেস্ক: দেশের কোথাও কোথাও আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আবার কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়েছে...

শেখ হাসিনা গুজব ছড়িয়ে দুর্বৃত্তদের উস্কানি দিচ্ছে: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিদেশে বসে শেখ হাসিনা গুজব ছড়িয়ে দুর্বৃত্তদের উস্কানি দিচ্ছেন। ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্যই গত...

Recent Comments