কলামের শিরোনাম দেখে যে কারও মনে একাধিক প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে দুটি প্রধান। এক. যেখানে সরকারি দফাদারকেও ‘স্যার’ বলার অঘোষিত বাধ্যবাধকতা দাঁড়িয়ে গেছে, সরকারি লোককে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন না করার ‘অপরাধে’ হেনস্তা হওয়ার প্রকাশিত ঘটনা অসংখ্য; সেখানে ওবায়দুল কাদেরের মতো সরকারের একজন ডাকসাইটে মন্ত্রীকে ‘ভাই’ বলছি কোন সাহসে? অন্তরে কী ভয়ডর বলে কিছু নেই! নাকি ১৯৯৬ সালে মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের রোষানলে পড়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান সৈয়দ বজলুল করিমের হাত হয়ে ১৮ দিনের স্মৃতি ভুলে গেছি?
দ্বিতীয় প্রশ্ন. নিজের লাশ উৎসর্গ করার মতো মহান হলাম কবে? যেখানে এই সেদিনও মরণোত্তর চক্ষুদানে আমার প্রচণ্ড অনীহা ছিল। ছিল ভয়ও। আর এখন পুরো লাশটাই দিয়ে দিতে চাচ্ছি! তাও আবার একজন মন্ত্রীকে। যার মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিনিয়ত অসংখ্য লাশ পড়ে সড়কে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, তার মন্ত্রণালয়ের নামের ‘সড়ক পরিবহন’ অংশটুকু বাদ দিয়ে ‘লাশ সৃজন’ সংযোজন করলে অধিকতর বাস্তবসম্মত হয়। এ ব্যাপারে কি মহান সংসদে একটি বিল আনার জন্য দাবিতে সোচ্চার হওয়া যায় না?
শুরুর বিষয়ে আসি। মন্ত্রীকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করা প্রসঙ্গে বিনীত নিবেদন এই যে, মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ‘ভাই’ বলার সাহস পেয়েছি চেনা-জানা-পরিচয়ের ওপর ভরসা করে। তাঁকে আমি কাছাকাছি থেকে প্রথম দিকে চিনি ১৯৮০ অথবা ৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার সমাবেশ থেকে। সেই সময়ে তিনি এক বক্তৃতায় ডাকসুর ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে উদ্দেশ্য করে আবেগঘন কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘ময়ূর সিংহাসনে বসে আছেন…।’ ইত্যাদি, ইত্যাদি। এর পরদিন বটতলার সমাবেশে প্রতিউত্তরে মাহমুদুর রহমান মান্না ধীরলয়ে বলেছিলেন, ‘ওটি ময়ূর সিংহাসন নয়, কাঠের চেয়ার। চাইলে আপনি গিয়ে বসে দেখতে পারেন।’
মান্না ভাইর এ কথার মধ্যে প্রচণ্ড বিদ্রুপের নির্দয় খোঁচা ছিল খুবই স্পষ্ট। উল্লেখ্য, ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়ে ওবায়দুল কাদের পরাজিত হয়েছেন। ফলে ভিপির চেয়ারে কীভাবে বসবেন! তবে নির্বাচনে তার পরাজয়ের সেই ধারা চিরকাল থাকেনি। ডাকসু ভিপি নির্বাচিত হতে না পারলেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন একাধিকবার। হয়েছেন প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী। জটিল সময়ে আওয়ামী লীগের মতো বিশাল দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে দক্ষতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। বলা হয় জিল্লুর রহমান, মতিয়া চৌধুরীসহ হাতেগোনা যে কয়েকজনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্নাতীতভাবে বিশ্বাস করেন তাদের মধ্যে ওবায়দুল কাদের একজন। জিল্লুর রহমান না ফেরার দেশে গেছেন। কিন্তু রেখে গেছেন দৃঢ়তা ও বিশ্বস্ততার অমর দৃষ্টান্ত। সম্ভবত সেই দৃষ্টান্তই ওবায়দুল কাদেরের চিরকালীন পাথেয়।
কাদের ভাই বলতেন,
‘এখনো সময় হয় নাই’
বলা প্রয়োজন, ওবায়দুল কাদেরের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসের ভিত্তি নিশ্চয়ই একদিনে সৃষ্টি হয়নি। এ প্রসঙ্গে ওয়ান ইলেভেনের সেই সময়কার পরিস্থিতিতে ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা অনেকেরই স্মরণে আছে। আর আমার স্মরণে আছে আরো অনেক আগের ঘটনা। কাদের ভাইর সাথে প্রথম ঘনিষ্ঠতা ১৯৯৬ সালে। তখন তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করতেন। সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ-এ কলাম লিখতেন, প্রধানত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রসঙ্গে। সে সময় আমি ছিলাম এ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। আমার প্রধান বিট ছিল রাজনীতি ও অপরাধ। ফলে রাজনীতিক এবং পুলিশ ও অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, আড্ডা দিতাম। আর আড্ডায় যারা খোলামেলা ছিলেন তাদের মধ্যে কাদের ভাই অন্যতম। তিনি বরাবরই খোলামেলা প্রবণতার মানুষ।
এদিকে সাপ্তাহিক সুগন্ধায় থাকাকালে সাংবাদিক আজিজুল হক বান্না ভাইর আওয়ামীবিরোধী তির্যক লেখায় পত্রিকাটির ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছিল। বান্না ভাই ছিলেন ফারুক-রশিদ চক্রের পে- রোলের সাংবাদিক। সে সময় সুগন্ধায় আওয়ামী ঘরানার যারা কলাম লিখতেন তারা ছিলেন ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ গোছের প্রবণতায় সতর্ক। তাদের লেখায় বান্না ভাইর লেখার ব্যালেন্স হচ্ছিল না। এ অবস্থায় কাদের ভাইর শরণাপন্ন হলাম। তিনি একবাক্যে রাজি হলেন। ফলে বান্না ভাই বেশ বেকায়দায় পড়লেন। আওয়ামীবিরোধী একতরফা ব্যাটিংয়ের সুযোগ তার আর থাকলো না। সুগন্ধায় সমানে চললো ওবায়দুল কাদেরের আওয়ামী গুণকীর্তন এবং আজিজুল হক বান্নার নিন্দার ধারা। অবশ্য দুজনের লেখার মান নিয়ে মাসুদ কামালের তুলনামূলক মতামত ছিল। সে জার্নালিজমের মেধাবী ছাত্র এবং লেখার মান প্রশ্নে বেশ খুঁতখুঁতে। তিনি সব সময়ই মতামত প্রকাশে অগ্রগামী। তার কথা মন দিয়ে শুনেছি, কিন্তু রাখিনি।
সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ ও সুগন্ধায় কাদের ভাইর লেখার বাইরে তাকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে চেনার সুযোগ হয়েছে দৈনিক বাংলার বাণীতে কিছুদিন চাকরি করার সুবাদে। শফিকুল আজিজ মুকুল ভাইর মাধ্যমে বাংলার বাণীতে যোগদান করেছিলাম। তখন কাদের ভাই ছিলেন বাংলার বাণীর সহকারী সম্পাদক। বলা বাহুল্য, সেই সময় বাংলার বাণী মানেই আওয়ামী রাজনীতির ধারক, এগিয়ে নেওয়ার বাহন। অফিসে অনির্ধারিত আড্ডায় কেউ কেউ কাদের ভাইকে বলতেন, শেখ হাসিনার সমালোচনা করে কিছু লেখেন। কিন্তু কাদের ভাই বলতেন, ‘এখনো সময় হয় নাই।’
অবশ্য ওবায়দুল কাদেরের সেই সময় আর হয়নি, হয়তো কখনো আর হবেও না। কারণ তিনি পাল্টাবার লোক নন। এমনকি তিনি মন্ত্রী হওয়ার পরও কিছুমাত্র পাল্টাননি। অথচ জিএম কাদের, জাহাঙ্গীর কবীর নানকসহ অনেককেই মন্ত্রী হওয়ার পর বেশ পাল্টে যেতে দেখেছি। যারা ক্ষমতার চেয়ারে বসে আচরণে পাল্টে যাওয়ার ধারায় অবগাহন করেন না তাদের মধ্যে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, শেখ সেলিম, তরিকুল ইসলাম, কর্নেল আকবর হোসেন, খ ম জাহাঙ্গীর, মির্জা আজমসহ অনেকেরই নাম বলতে পারবো।
কাদের ভাইর
পরামর্শ রাখিনি
কাদের ভাই না পাল্টানোর বিষয়ে অনেক ঘটনা আমার স্মৃতিতে আছে। একটি বলি। গত মেয়াদের প্রথম দিকে সুপারসনিক গতিতে চলছে সরকার। কাদের ভাই যোগাযোগমন্ত্রী। তার অফিসে গেলাম। তিনি ব্রিফ করছেন, অফিস কক্ষ সাংবাদিকে ভরপুর। আমি স্বভাবসুলভ প্রবণতায় কোনো রকম পেছনের দিকে গিয়ে দাঁড়ালাম। বসার মতো চেয়ার বা সোফা তো দূরের কথা, চেয়ারের কোনা-কানচিও ফাঁকা ছিল না। ব্রিফ শেষ হওয়ার পরও অনেক সাংবাদিক রয়ে গেছেন। চা-বিস্কুট আর খাজুরে আলাপ। তবে ভিড় অনেকটা কমেছে। এদিকে আমি পেছনেই দাঁড়ানো। এ সময় মনে হলো কাদের ভাই হাতের ইশারায় ডাকছেন। কিন্তু কনফিউশন ছিল। এ সময় কাঞ্চন কুমার দে বললেন, ‘কী ব্যাপার ভাই! কাদের ভাই ডাকে তো আপনাকে, দেখেন না?’ বুঝলাম আমার ধারণা সঠিক। কাছে গেলাম। কাদের ভাই বললেন, কোথায় আছো এখন? বললাম, কোথাও না, বেকার। তিনি বললেন, চলো কীভাবে? বললাম, খ্যাপ মাইরা চলি! তিনি সবাইকে শুনিয়ে বললেন, শোন আলম রায়হান কী বলে, খ্যাপ মাইরা চলে! এর পর একটু নিচু গলায় বললেন, ‘তুমি মাঝেমধ্যে আইসো।’
মন্ত্রী কাদের ভাইর পরামর্শ রাখিনি। যেমন এর আগে ‘মাঝেমধ্যে আসার’ জন্য এক সচিব বন্ধুর পরামর্শও আমলে নেইনি। এই বন্ধুটি ডাকসাইটে সচিব ছিলেন। মন্ত্রী কাদের ভাই এবং ওই বন্ধু সচিবের প্রতি আমার বিশেষ ধরনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আছে। এরপরও সাম্প্রতিক ঘটনায় কাদের ভাইর ওপর প্রচণ্ড রাগ না করে আর পারছি না! সড়কে লাশের মিছিল কাহাতক আর সহ্য করা যায়! লাশের মিছিলের কল্পনায় যেন নিজেকে খুঁজি! অসহ্য মনে হয়। আরো অসহ্য লাগে যোগাযোগমন্ত্রীর চেয়ারে বসে কাদের ভাই যখন মালিকদের অনুনয়-বিনয় করেন। বৈঠকে ‘শাজাহান ভাই’ বলে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। একই বৈঠকে আবার কথা বলেন যাত্রাগানের বিবেকের মতো। এ কারণে আমি তার ওপর প্রচণ্ড বিরক্ত। আরো বিরক্ত নানান উন্নয়নের নামে দেশে পানির সর্বনাশের ধারায়। মুখরোচক এই উন্নয়নে নানান কুফল আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নৌ-পথ সংকুচিত হয়ে সড়কের ওপর চাপ সীমা ছাড়ানো।
পোকার খাবারে পরিণত
হতে পারে কোনো মর্গে
পদ্মা ব্রিজ হওয়ার আগে বরিশাল-ঢাকা করতাম লঞ্চে। সেই পাট চুকে গেছে। নৌ-পথের পাট চুকিয়ে এখন সড়ক পথই ভরসা। সরকারি লোকদের ফ্রিস্টাইল দুর্নীতি এবং মালিকপক্ষের খামখেয়ালিতে তখন লঞ্চে যাতায়াতে মাঝেমধ্যে ‘পঞ্জ’ হারাবার অবস্থা হতো। এখন সড়কে জান যাওয়ার পরিস্থিতি হয়েছে। আর সড়কে প্রাণ গেলে যে কী দশা হয় স্বজনরা তা হাড়েহাড়ে টের পান।
শুধু তাই নয়, লাশ নিতে স্বজনদের বাপ-দাদার নাম ভুলে যাওয়ার অবস্থা হয়। যে কারণে সড়কে মারা গেলে আমার লাশ নেওয়ার জন্য স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়ুক- তা আমি চাই না। বরং সড়কে মারা গেলে আমার লাশটি কাদের ভাইকে উৎসর্গ করে গেলাম। আর এও জানি, আমার লাশের ব্যাপারে মন্ত্রীর কোনো আগ্রহ অথবা দায়বদ্ধ থাকবে না। থাকার কোনো কারণও নেই। তবে হয়তো ‘মন্ত্রীর মাল’ হিসাবে বিবেচনায় আমার লাশ দ্রুত আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম নিয়ে যাবে। অথবা নেবে অন্য কোনো সংস্থা। হয়তো আমার লাশ দাফন হবে যথাযথ ধারায়। মাটি চাপাও হতে পারে আরো অনেক লাশের সঙ্গে। অথবা অন্য কোনো বিভ্রমে হতে পারে দাহও। অথবা পড়ে থাকতে পারে কোনো হাসপাতালের হিমঘরে। অথবা পোকার খাবারে পরিণত হতে পারে কোনো মর্গে। তবে আমার লাশের পরিণতি বিষয়ে আমার মোটেই ভাবান্তর নেই। যেখানে সড়কে মৃত্যুভয় সদা তাড়া করে ফেরে, সেখানে লাশের পরিণতি নিয়ে ভয় পাওয়ার সুযোগ থাকে? ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের কী নেইল পলিশ নিয়ে ভাবার সময় থাকে? যার আছে তার থাক, আমার নেই!
# ঢাকাটাইমস-এ প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০২৪, শিরোনাম: ‘কাদের ভাইকে উৎসর্গ করলাম আমার লাশ’
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে...
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.