Home মতামত রাজনীতিতে পথহারা বিএনপি

রাজনীতিতে পথহারা বিএনপি

বিএনপি নিয়ে ক্ষমতাসীনদের খিস্তিখেউড় প্রতিনিয়ত চলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। একটা নাটক আছে না, চলিতেছে সার্কাস। সরকারের অন্তত দুজন মন্ত্রী বিএনপি নিয়ে আল্লাহর ত্রিশ দিন কথা বলেন। কেবল ফেব্রুয়ারি মাসে বলেন আঠাশ দিন। অবশ্য চার বছরের মাধায় একদিন বেড়ে যায়। এ কারণে রাজনীতিতে পথহারা বিএনপি বেশ প্রচারণা পাচ্ছে। বিএনপির প্রচারনার দায়িত্ব যেনো সরকারই নিয়েছে।এ অবস্থায় দেশের সামগ্রিক রাজনীতি এবং সংসদ জনপ্রত্যাশা পূরণে কতটা ভূমিকা রাখতে পারছে? প্রসঙ্গত, রাজনীতি ও সংসদের এই মাজুর দশা এক দিনে হয়নি।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এ দেশের মানুষের আনন্দ-উল্লাসের বিপরীতে অবস্থানকারী অন্ধকারের শক্তি কেন্দ্রগুলো নীরবে যে বিষবৃক্ষের বীজ রোপণ করেছে তা দানব হিসেবে দৃশ্যমান হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। এরপর ’৭১-এ পরাজিত দেশি-বিদেশি শক্তির ব্লুপ্রিন্ট অনুসারে রাজনীতিকদের লেজ কাটার ধারা সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান সূচনা করেছিলেন। তিনি রাজনীতি ডিফিকাল্ট করার পাশাপাশি সংসদেরও দরপতনের ব্যবস্থা করেছেন। আর জিয়ার ধারাকে ষোলকলা পূর্ণ করার স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন জেনারেল এরশাদ। এ হচ্ছে এক হতাশার দিক। আর মহা হতাশার বিষয় হচ্ছে- ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের রাজনীতির ধারা শক্ত ভিত পাওয়ার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল তা বিনষ্ট হয়েছে ২০০১ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের নামে বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নগ্ন পক্ষপাতিত্বের তান্ডবের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হন বেগম খালেদা জিয়া। এখানেই শেষ নয়। ২০০১ সালে সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াত জোট পরবর্তী নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করার বাসনায় সবকিছু গুবলেট করে দেয়। সাজানো ফুলের বাগানে উল্লুক ঢুকে পড়লে যেরকম হয়। যার অনিবার্য ফল ওয়ান/ইলেভেনের অদ্ভুত সরকার। দুই বছরের মাথায় এই ধারার সরকারের কবল থেকে মুক্ত হয় দেশ। কিন্তু রাজনীতি মুক্ত হতে পারেনি। বরং রাজনীতিকদের লেজ কাটার ধারা যেন চলছে নিরন্তর। যার ছায়া পড়েছে রাজনীতি, সংসদ, প্রশাসনে। এমনকি পৌঁছেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। দেশ যেন জনসম্পৃক্ত ও জনপ্রত্যাশা পূরণের রাজনীতির উল্টোপথে ছুটছে। পাশাপাশি চলছে রাজনীতিবিদদের নানান বিষয়ে ক্ষয়িষ্ণু ধারা।
বলা হয়, রাজনীতিবিদদের মানদন্ড বিবেচিত হবে মানুষের আশা-আকাক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং জনগণের সেবায় অঙ্গীকারের মানদন্ডে। কিন্তু যখন অর্থকড়ি, স্থানীয় মাস্তানদের অর্থায়ন, সহিংসতার মাত্রা এবং অর্থের বিনিময়ে দলের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিয়মে দাঁড়িয়ে যায় তখন স্বভাবতই রাজনীতিকদের সম্মান ও মান হ্রাস পায়। বর্তমান সময়ে সাধারণভাবে ধরেই নেওয়া হয়, ইউপি থেকে মহান জাতীয় সংসদ পর্যন্ত একজন জনপ্রতিনিধি যে উন্নয়ন তহবিল পাবেন, তার পুরো অংশ নির্ধারিত খাতে ব্যয় হবে না। বরং অনেকটাই যাবে তার নিজের এবং আরও অনেকের পকেটে।
# দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত, ২২ এপ্রিল ২০২৪, শিরোনাম: “অধোগতির রাজনীতি এবং ক্ষয়িষ্ণু আমলাতন্ত্র”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতাদের সাক্ষাৎ

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...

স্কলারশিপ-এ পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ ১০০ বাংলাদেশি, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ স্কলারশিপে ১০০ বাংলাদেশিকে পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম...

জনসমর্থন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে বিএনপি

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...

নতুন সিইসি সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন, নিয়োগ পেলেন চার কমিশনারও

দখিনের সময় ডেস্ক: সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে...

Recent Comments