Home শীর্ষ খবর ক্ষমতা এখন ওসিদের হাতে

ক্ষমতা এখন ওসিদের হাতে

আমলাতন্ত্র বলতে সাধারণত প্রশাসন ক্যাডার বোঝায়। আর বৃহত্তর পরিসরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতের ক্যাডারদের অন্তর্ভুক্ত করলে, পুলিশ ও অন্যান্য শাখাকে বিবেচনায় নিলে আমলাতন্ত্রের সুবিশাল লটবহর রয়েছে। যাদের হাতে অপরিসীম ক্ষমতা বলে সাধারণভাবে বলা হয়। কিন্তু বাস্তবতা আসলে এরকম হয়তো নয়। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কাঠামোতে ধস নামার কারণে আমলাতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রকৃত ক্ষমতা নিম্নগামী প্রবণতায় নামতে নামতে প্রায় নিচের ধাপে পৌঁছেছে।
অনেকেই বলেন, ক্ষমতা এখন বিভিন্ন সংস্থার ইন্সপেক্টর ও পুলিশের ওসিদের হাতে। এই ক্ষমতায় কোনো কোনো সংস্থা প্রধানের কিঞ্চিৎ নিয়ন্ত্রণ থাকলেও এজন্য মন্ত্রী-এমপি-সচিবের নাম ভাঙাতে হয়। এক্ষেত্রে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন একটি অধিদফতরের প্রধান। বদলি ও পোস্টিং বাণিজ্যে তাঁর বেপরোয়া কর্মকান্ড নিয়ে গণমাধ্যমে যে পিলে চমকানো খবর প্রকাশিত হয়েছে তাতে বিব্রত হয়েছেন খোদ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। অবশ্য তিনি কোনো ছাড় দেননি। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার মহাঅঘটনের বিষয়টি সংবাদপত্রের মাধ্যমে মন্ত্রী জানার আগে মন্ত্রণালয়ের বিরাট লটবহরের আমলারা কী করেছেন? আমলাদের প্রধান দায়িত্ব তো সুপারভাইজ করা। তারা কী করেছেন?
প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, বহু বছর ধরে সুপারভাইজের দায়িত্ব পালন করা হয় কদাচিৎ। যিনি সুপারভাইজ করবেন তিনি যদি অন্য ভাইজে আক্রান্ত হন তাহলে কি সঠিক কাজটি করা যায়! একটি নমুনা উদাহরণ, কক্সবাজার জেলার সাবেক এক এসপি প্রতি রাতে জুয়া খেলতেন এবং মাসিক নজরানার বাইরেও এই জুয়ার খরচ  মেটাতে হতো তাঁর নিয়ন্ত্রাণাধীন ওসিদের। কখনো গভীর রাতে তিনি টাকা চেয়ে ওসিদের ফোন দেওয়ার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন বলে রটনা আছে। পুলিশের এই রত্নটি এখন গুরুত্বপূর্ণ একটি রেঞ্জের ডিআইজিও হয়েছিরেন। টাকা নেওয়া ছাড়া ওই পুলিশ কর্মকর্তার হাতে কি কোনো ক্ষমতা থাকার কথা? ফলে এ ধরনের ইউনিট প্রধানের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তাদের ক্ষমতা ও দাপট বোধগম্য কারণেই অসীম।
এ ধারার ব্যতিক্রমও কিন্তু আছে। তবে ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত নয়, তেমনই ব্যতিক্রমী ধারার ইউনিট প্রধানরাও আসলে খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারেন না। বরং ব্যতিক্রমী ধারার ইউনিট প্রধানরা উল্লুক উপদ্রুত অরণ্যে চিত্রাহরিণের দশায় থাকারই কথা। তা হোক পুলিশে অথবা জনপ্রশাসনের অন্য ক্ষেত্রে। বলাবাহুল্য, এটি জনপ্রশাসন পরিচালনার জন্য অনিবার্য আমলাতন্ত্রকে ভিতর থেকে ফোকলা করে দিচ্ছে!
# দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত, ২২ এপ্রিল ২০২৪, শিরোনাম: “অধোগতির রাজনীতি এবং ক্ষয়িষ্ণু আমলাতন্ত্র”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

রাজনীতিতে রনো ভাইরা আর নেই

রিকশায় না এসে প্রাইভেট কারে আসা এবং ধানমন্ডির ফ্ল্যাটে থাকার বিষয়ে রনো ভাইয়ের লজ্জিত হওয়ার বিষয়টি আমাকে বহু বছর ধরে বহুবার আন্দোলিত করেছে। ধরাধাম...

যা অছে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির রিপোর্টে

দখিনের সময় ডেস্ক: ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালে দুবাই শহরে সাড়ে বাইশ কোটি ডলারের সম্পদ কিনেছেন ৩৯৪ জন। তবে আরও বিভিন্ন তথ্যাদি...

পুলিশের খপ্পরে মৌ চাষির ট্রাক, মরেছে পাঁচ লাখ টাকার মৌমাছি

দখিনের সময় ডেস্ক: দিনাজপুর থেকে ট্রাকে করে ২৫১ বাক্স মৌমাছি নিয়ে রাজবাড়ীতে আসছিলেন মৌচাষি মো. খলিফর রহমান। পথে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের মনসার বটতলা...

বরিশালে অচিরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর বসবে

দখিনের সময় ডেস্ক: বরিশাল শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম শেষ হলে অচিরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর বসবে। এ কথা জানিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ...

Recent Comments