Home শীর্ষ খবর গাড়িতে আসার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন রনোভাই

গাড়িতে আসার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন রনোভাই

প্রায় দুই দশক আগে এসটিভি ইউএস নামে একটি টেলিভিশন আমেরিকা থেকে সম্প্রচারিত হতো। কিন্তু কার্যক্রম পরিচালিত হতো বাংলাদেশ থেকে। এতে মুখোমুখি নামে একটি টকশো সম্প্রচারিত হতো। হান্নান ফিরোজের মালিকানায় এ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের বর্তমান সম্পাদক নঈম নিজাম। নিজাম ভাইয়ের কারণে এসটিভি ইউএসের টকশোর উপস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। প্রডিউসার ছিলেন মোস্তফা কামাল। সরাসরি নয়, এ টকশো সম্প্রচার হতো ধারণ করে।
একদিনে একাধিক এপিসোড রেকর্ড হতো। আমি ছাড়াও উপস্থাপক ছিলেন সাংবাদিক কাশেম হুমায়ুন ও অকাল প্রয়াত পীর হাবিব। তিনজন থাকলেও প্রায় অর্ধেক অনুষ্ঠান আমি উপস্থাপনার সুযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে হয়তো নিজাম ভাইয়ের কোনো ইঙ্গিত ছিল। অথবা ছিল আমার প্রতি মোস্তফা কামালের পক্ষপাতিত্ব। অথবা এও হতে পারে, কাশেম ভাই ও পীর হাবিবের ব্যস্ততার কারণে আমি সুযোগ বেশি পেয়েছি। তখন আমি নাঈমুল ইসলাম ভাইয়ের আমাদের সময়-এর চিফ রিপোর্টার। আমার অন্য কোনো ব্যস্ততা ছিল না।
সকাল ১১টার দিকে অনুষ্ঠান রেকর্ডিং শুরু হতো। স্টুডিও ছিল সিদ্ধেশ্বরীতে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে। একদিন গেস্ট তালিকায় দেখলাম রনো ভাই আছেন, হায়দার আকবর খান রনো। আমার মনে পড়ল, তাকে রিসিভ করার জন্য মন্ত্রী আকবর হোসেনের ব্যস্ততার দৃশ্যপট। নির্ধারিত সময়ে আমি তাকে রিসিভ করার জন্য নিচে নামলাম। ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে তিনি আসলেন। হাসিখুশি একজন সাধারণ প্রবণতার অসাধারণ মানুষ। গাড়ি থেকে নেবে কুশল বিনিময়ের ফাঁকে রনোভাই বললেন, গাড়িটি আমার মেয়ের। শরীর ভালো না, এজন্য নিয়ে এসেছি। গাড়িতে আসার বিষয়ে তিনি অযাচিত ব্যাখ্যা দিলেন। মনে হলো, তিনি গাড়িতে আসায় বেশ খানিকটা লজ্জিত ছিলেন। এর কয়েক বছর পর তার অসুস্থতার খবর শুনে তাকে দেখতে গেলাম ধানমন্ডির এক ফ্ল্যাটে, সম্ভবত ৩২ নম্বর রোডে, অথবা কাছাকাছি কোনো সড়কে। আবারও রনো ভাইয়ের সেই লজ্জিত হওয়ার পালা। বললেন, ফ্ল্যাটটি আমার মেয়ের।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করিনি ফ্ল্যাটটি কার। জিজ্ঞেস করার কথাও নয়। কিন্তু তিনি নিজে থেকে ব্যাখ্যা দিলেন। কারণ যদি ভাবি, ‘করেন তো বাম রাজনীতি, ধানমন্ডির ফ্ল্যাটে থাকেন কীভাবে!’ বলাবাহুল্য, সেই ফ্ল্যাটটি আহামরি কিছু ছিল না। সাধারণ। অতি সাধারণও বলা চলে। এরপরও রনো ভাই লজ্জিত হয়েছেন। আর নিজের অসুস্থতা প্রসঙ্গে এটুকু বলেছেন, অক্সিজেন টানার ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্ষমতা প্রায় থার্টি পার্সেন্ট কমে গেছে। ক্রমে এ ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে যাবে। এরপর একটু হাসলেন। যেন তার অসুস্থতা বড় কোনো বিষয়ই নয়! কিন্তু বাস্তবতা মোটেই তা ছিল না। তিনি গুরুতর শারীরিক সংকটে ছিলেন।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
# দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত, ১৬ মে ২০২৪, শিরোনাম, “রনো ভাইকে লজ্জিত হতে দেখেছি”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

অতীতের মতো আগামীতেও অপচেষ্টা ব্যর্থ হবে: জামায়াত আমির

দখিনের সময় ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছে। তারা পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে অপচেষ্টা...

সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পরিকল্পনায় চিন্ময় কৃষ্ণ কাজ করছিল: নাহিদ

দখিনের সময় ডেস্ক: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পরিকল্পনা নিয়েই চিন্ময় কৃষ্ণ কাজ করছিল এবং সাম্প্রদায়িক উদ্দেশে এ...

চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে মিছিলের প্রস্তুতিকালে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের ৬ নেতা-কর্মী আটক

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রামে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি দাবিতে মিছিলের প্রস্তুতিকালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নগরীর...

যেভাবে আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করা হয়

দখিনের সময় ডেস্ক: বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনা সংঘের (ইসকন) নেতা অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার ও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে...

Recent Comments