Home আন্তর্জাতিক আর ঘোষণা নয়,পদক্ষেপ চান ফিলিস্তিনিরা

আর ঘোষণা নয়,পদক্ষেপ চান ফিলিস্তিনিরা

দখিনের সময় ডেস্ক:
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযানে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে রাফায় আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনি নারী সালওয়া আল-মাসরি মনে করেন, গত ৭ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজার ফিলিস্তিনিরা যে দুর্দশার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন— জাতিসংঘ আদালতের রায়ে তার পরিবর্তন ঘটার তেমন সম্ভাবনা নেই। উত্তর গাজার বাসিন্দা সালওয়া আল-মাসরির শরণার্থী জীবনের শুরু গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর। ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা থেকে প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের মতো সালওয়াও নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় আশ্রয় নেন। বর্তমানে শহরের দেইর আল বালাহ এলাকয় একটি অস্থায়ী শিবিরে থাকছেন সালওয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার জাতিসংঘভিত্তিক আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আদেশ দিয়ে রায় দেন। শরণার্থী শিবিরে নিজেদের তাঁবুর বাইরে খোলা আকাশের নিচে রান্নারত সালওয়া রয়টার্সকে রায়ের প্রতিক্রিয়া বলেন, ‘এই রায় একদম সঠিক এবং সময়োপযোগী। তবে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এসব সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখতে চাই, কার্যকর পদক্ষেপ চাই। কারণ, যতই দিন যাচ্ছে, গাজায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছে।’  গত ডিসেম্বরে জাতিসংঘের আদালতে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আর্জি জানিয়ে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। গত মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রাফায় সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা ঘোষণা দেন। মে মাস থেকে রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
এদিকে, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ঘোষণার পর অভিযান বন্ধে আবেদন করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে শুক্রবার এক রায়ে রাফায় অভিযান বন্ধ করার আদেশ দেন জাতিসংঘ আদালত। তবে আদালতের এই রায় প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা বলেছেন, হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের উদ্ধার করতে রাফায় অভিযান চালানো জরুরি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে। জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। গত সাত মাসের যুদ্ধে গাজায় ইতোমধ্যে ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। হতাহতদের ৫৬ শতাংশই নারী এবং শিশু। এছাড়া বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত সাত মাসে চারবার বাস্তুচ্যুত শাবান আবদেল রউফ রয়টার্সকে বলেন, ‘ইসরায়েল বৈশ্বিক জনমতকে পাত্তা দেয় না। মার্কিন প্রশাসন সবসময় তাদের পাশে আছে, তাই নিজেদের বরাবরই আইনের উর্ধ্বে বলে মনে করে ইসরায়েল।’ ‘আর দুঃখজনক হলেও সত্য হলো— ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হওয়া থেকে ফিলিস্তিনিদের বাঁচানোর জন্য বিশ্ব এখনও প্রস্তুত নয়।’
গাজায় ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। তবে এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধে এই রায় যথেষ্ট নয়। রাফায় আশ্রয় নেওয়া আরেক ফিলিস্তিনি নাবিল দিয়াব বলেন, ‘আমরা অতীতেও এমন অনেক ঘোষনা শুনেছি যেগুলো কেবল ঘোষণাই থেকে গেছে। তাই এখন আর সিদ্ধান্ত বা ঘোষণা নয়, আমরা বাস্তব পদক্ষেপ দেখতে চাই।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

১০ নম্বরেও নেই রাসেলস ভাইপার

দখিনের সময় ডেস্ক: সারাবিশ্বে যত রকমের বিষধর সাপ পাওয়া যায় সেই তালিকার ১০ নম্বরেও নেই বহুল আলোচিত রাসেলস ভাইপার। সেই সঙ্গে দেশে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম (সাপের...

পরীমণির সঙ্গে সমঝোতার জন্য চাপে আছেন নাসির মাহমুদ

দখিনের সময় ডেস্ক: মঙ্গলবার (২৫ জুন) ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন এই নায়িকা। ‍এরপরই সমঝোতা করার জন্য...

সারাদেশ যেন বেনজীরময় হয়ে গেছে

আলোচনার তুঙ্গে ওঠা নজিরবিহীন বেনজীর অতি সম্প্রতি আবার আলোচনায় এসেছেন। অবশ্য বেনজীর আহমেদ চাকরি জীবনের প্রায় আধা সময়ধরে আলোচনায় ছিলেন। আলোচনার কেন্দ্রে চলে যান...

অতিরিক্ত ডিআইজি রফিকুলের অবৈধ সম্পদের মধ্যে আছে জাহাজও

দখিনের সময় ডেস্ক: পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনের নামে করা অবৈধ সম্পদ জব্দের জন্য অনুমতি চেয়ে দুর্নীতি...

Recent Comments