Home শীর্ষ খবর নায়িকা সুচন্দা কাহনে মন্ত্রিত্ব হারিয়েছিলেন মিজান চৌধুরী

নায়িকা সুচন্দা কাহনে মন্ত্রিত্ব হারিয়েছিলেন মিজান চৌধুরী

এক দলের এক নেতা দিলীপ বড়ুয়া সঠিক বলেছেন, নাকি বঞ্চিত হওয়ার ক্ষোভ থেকে প্রলাপ বকেছেন, তা নিয়ে  নিয়ে বিচার বিশ্লেষনেরও অবকাশ হয়তো আছে। সংশয়-সন্দেহ থাকতেই পার।  তবে এ ব্যাপারে প্রায় কারোরই সংশয় নেই, ভরা যৌবনেই পা দেওয়ার আগেই অপরাধ জগতে শামিল হয়েছেন অনোয়ারুল আজিম আনার। এবং নির্বাচনী রাজনীতিতে তার সূচনা কাউন্সিলর দিয়ে, তখন বলা হতো ওয়ার্ড কমিশনার। গালভরা আওয়াজ দেওয়া যায়, একেবারে তৃণমূল থেকে বেড়ে উঠেছেন জনপ্রতিনিধি আনার।
স্মরণ করা যেতে পারে, মিজানুর রহমান চৌধুরীর নির্বাচনী রাজনীতি শুরু হয়েছিল একেবারে তৃণমূল থেকে। এ ধারায় তিনি হয়েছেন সংসদ সদস্য, ছিলেন বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার সদস্য, হয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এরশাদ সরকারের আমলে। তারা ছিলেন অপরাধ থেকে অনেক দূরে।  বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় তথ্যমন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে মিজানুর রহমান চৌধুরীকে কেন্দ্র করে ‘নায়িকা সুচন্দা কাহন’ চাউড় হয়েছিলো। এ কারণে তাঁকে মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছিলো। কালের ধারায় এসব ঘটনা বিবেচনার বাইরেই চলেগেছে। ক্রমান্বয়ে দেশ যেনো কামিনী-কাঞ্চন লোটাদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। যদিও এবার রিমালে প্রামানিত হয়েছে,  অরণ্য এখন আর হরিনদের জন্য নিরাপদ নয়।  সুন্দন থেধকে প্রায় দেড়শত মৃত হরিণ উদ্ধার করা হযেছে। তবে শুকর মরেছে হাতে গোনা কয়েকটি।
প্রকাশিত খবর অনুসারে, নির্বাচনে আসার আগে আনার হেঁটেছেন অপরাধের নানান পথে। আর সেই সময় মোক্ষম ঢাল হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন রাজনীতি ও নির্বাচন। বিরাজমান বাস্তবতার তিনি ঠিকই বুঝেছিলেন, রাজনীতির সমান্তরালে জনপ্রতিনিধি হতে পারলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় না। আর এ ক্ষেত্রে তিনি এরশাদ শিকদারের মতো বনসাই হয়ে থাকার মতো ভুলটি করেননি। স্থানীয় পরিষদ থেকে একেবারে জাতীয় পরিষদে স্থান করে নিয়েছেন। একই ধারায় আমাদের দেশে হয়তো অনেক অপরাধী তৃণমূলের রাজনীতি থেকে মহান জাতীয় সংসদে স্থান পেয়েছেন। যে দ্বার খুলেছিলেন সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান। আর জেনারেল এরশাদ তো খুলেছিলেন একেবারে আলিবাবা চল্লিশ চোরের গুহাদ্বার। যে ধারা কোনো আমলেই একেবারে বন্ধ হয়েছে বলে মনে করার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না। এ ধারায় অনেকেই স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতি প্রভাবশালী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। একই ধারায় প্রতিষ্ঠিত আনোয়ারুল আজিম আনার।
একসময় ইন্টারপোলের তালিকাভুক্ত হয়ে অন্তত চার বছর আত্মগোপনে কিংবা ভারতে ছিলেন, ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ও তার আগে। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই তালিকা থেকে নাম সরাতে সক্ষম হন তিনি। মানে তিনি কামেল ব্যক্তি এবং কোনো সরকারই তাকে দূরে রাখেনি। হয়তো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মূলায়নে আনারের জনপ্রিয়তাই এর কারণ। তিনি বলেছেন, ‘আজিম কী ছিলেন তা বড় কথা নয়, জনপ্রিয়তা দেখে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল।’ প্রশ্ন হচ্ছে, তৃণমূল থেকে সংসদ পর্যন্ত আনোয়ারুল আজিমের মতো আর কতজন ‘জনপ্রিয়’ জনপ্রতিনিধি আছেন? এ প্রশ্নে আমজনতা বেশ শঙ্কিত, তাদের বেশ ভাবাচ্ছে। অবশ্য আমজনতার শঙ্কা আর ভাবনায় তেমন কিছু আসে-যায় বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না!
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
# দৈনিক কালেবেলায় প্রকাশিত, ১ জুন ২০২৪, শিরোনাম, ‘রাজনীতিতে আর কত আনার আছে!’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর ‍এবারের চীন সফর

দখিনের সময় ডেস্ক: আগামী আট থেকে এগারোই জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বেইজিং যাচ্ছেন। ভারত সফরের পরপরই চীন সফরকে ভূরাজনৈতিক অবস্থান ‍এবং...

গাজী গ্রুপে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পাবেন ভ্রমণ ভাতা

দখিনের সময় ডেস্ক: গাজী গ্রুপ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি টেরিটরি সেলস ম্যানেজার/এরিয়া সেলস ম্যানেজার পদে জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ০২ জুলাই থেকেই...

যমুনা গ্রুপে জব সার্কুলার, আবেদন শেষ ৩১ জুলাই

দখিনের সময় ডেস্ক: যমুনা গ্রুপে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির আর্কিটেক্ট বিভাগ সিনিয়র ম্যানেজার/এজিএম পদে জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ০৩ জুলাই থেকেই আবেদন...

ব্যবহারকারীদের লোকেশন হিস্ট্রি মুছে ফেলবে গুগল

দখিনের সময় ডেস্ক: বর্তমানে সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন প্রতি মুহূর্তে। ফলে অজানতেই অনেক ব্যক্তিগত তথ্য জমা হয়ে যাচ্ছে গুগলে। যার মধ্যে রয়েছে গুগল লোকেশনও। যদিও...

Recent Comments