আলম রায়হান ও মামুনুর রশিদ নোমানী, অতিথি প্রতিবেদক:
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি মোঃ আলমগীর হোসেন বেপরোয়া দানবে পরিণত হয়েছিলেন। মহানগরীর ভূমিদস্যু ও মাদকচক্রের রক্ষক হিসেবে তার কর্মকান্ডের বিষয়টি ছিলো অনেকটা ওপেনসিক্রেট। পুরো চাকুরী জীবনে নানান অঘটনের খল নায়ক পুলিশ ইন্সপেক্টর মো: আলমগীর হোসেন এতো দিন নানান বাঁকা পথে হেটে টিকে গেলেও এবার আর শেষ রক্ষা হলো না। গুরুদন্ড হিসেবে তাঁকে ৩০ মে চাকুরী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। তার চাকুরীর মেয়াদ ছিলো আরো দেড় বছর।
জানাগেছে, ১৮ এপ্রিল বরিশাল সদর উপজেলার এয়ারপোর্ট থানা এলাকার জনৈক ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আলমগীর হোসেনের লাগাতার অপকর্মের বিষয়টি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবিরের বিশেষ নজরে আসে। এরপর থেকেই মোঃ আলমগীর হোসেনের পতনের সূচনা হয়। তার বিদায় পর্ব চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে ৩০ মে ২০২৪। এদিন অপরাহ্নে গুরুদন্ড হিসেবে তাকে চাকরী থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। এদিকে আলমগীর হোসেন আছেন দুদকের নজরদারীতে। পুরণো পাপী আলমগীর হোসেন
দুর্নীতিবাজ পুলিশ ইন্সপেক্টর মো: আলমগীর হোসেন বরিশালে যোগদানের পর কেবল নয়, তিনি বেপরোয়া বহু আগ থেকেই। অনেকটা শুরু থেকেই। পুরো চাকুরী জীবনই অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন। সূত্রমতে, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এ পর্যন্ত মো: আলমগীর হোসেন অন্তত পাঁচটি বিভাগীয় মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বলে জানাগেছে। এরপরও রহস্যজনক কারণে এতোদিন তাঁর চাকুরী টিকেছিলো। যদিও নানান অনিয়মের অভিযোগে মো: আলমগীর হোসেন প্রমোশন পাননি। তার বেইসমেটরা প্রমোশন পেয়ে এডিশনাল এসপি পর্যন্ত হলেও তিনি ইন্সপেক্টর পদেই থেকে গেছেন ৩০ মে চাকুরী যাওয়া পর্যন্ত।
সূত্র বলছে, প্রমোশন বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টিকে মো: আলমগীর হোসেন মোটেই ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করতেন না। তার বিবেচনায়, ইন্সপেক্টর থেকে প্রমোশন পেয়ে উপরের দিকে গেলে ‘কাগুজে’ সম্মান বাড়ে। কিন্তু দুইহাতে টাকা কামাই করার সুযোগ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে যায়। এদিকে কেবল বিভাগীয় একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া নয়, দুর্নীতিবাজ পুলিশ ইন্সপেক্টর মো: আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে একাধিক চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশিত হয়েছে। যা রেকর্ড সৃষ্টি করে ২০১৫ সাল থেকে।
মো: আলমগীর হোসেনের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ‘সহিংসতাকে পুঁজি করে ব্যাপক আটক ও গ্রেফতার বাণিজ্যের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আলমগীর হোসেনকে আরএমপি থেকে বদলি করা হয়েছে।’ ‘বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার প্রাক্তন ওসি আলমগীর হোসেন গোদাগাড়ী থানায় বদলির আদেশ পাওয়ার আগেই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।’ ‘অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রশ্রয়ে আলমগীর বেপরোয়া দুর্নীতি ও অনিয়ম করে চলেছেন। আর এ কারণে শত অভিযোগের পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এদিকে জুনের প্রথম সপ্তাহে পবা থানায় যোগদানের পর তার অত্যাচারে থানার এসআই রূহুল আমিন, মেহেদী হাসান, এএসআই উজ্জ্বল ও আমিনুল ইসলামসহ ছয় পুলিশ দরখাস্ত দিয়ে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।’
সাইফুল ইসলামের সময় দানব হয়ে ওঠে আলমগীর
চরম দুর্নীতিবাজ মো: আলমগীর হোসেনকে ডাম্পিং হিসেবে বরিশালে পোস্টিং দেয়া হয়েছিলো। তখন বিএমপির কমিশনার ছিলেন মো: সাহাবুদ্দিন খান। তিনি বিএমপির দায়িত্বে ছিলেন ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ১৭ মে পর্যন্ত। অতীত বিবেচনায় আলমগীরকে কোন গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব দেয়া হয়নি। বরং অনেকটা ক্লারিক্যাল কাজ করানো হতো। কিন্তু মোঃ সাইফুল ইসলাম ২০২২ সালের ১৪ জুলাই বিএমপির কমিশনার হিসেবে যোগদান করার পর মো: আলমগীর লাইমলাইটে চলে আসেন, ‘মিউ থেকে হয়ে ওঠেন হালুম!’
বিএমপির সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলামের সময় দানব হয়ে ওঠা মো: আলমগীর হোসেন শুরুতেই টের পেয়েছিলেন, সতর্ক কমিশনার জিহাদুল কবিরের সময় সাবেক কমিশনারের মেয়াদের মতো আর সুবিধা হবে না। কিন্তু এরপরও তিনি পুরো প্রবনতা থেকে খুবএকটা উঠে আসতে পারেননি। আর এই ধারায় মাদক চক্রের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ২৫ মার্চ আদালতে মনগড়া এক প্রতিবেদন দিয়ে বসলেন। আর এটিই হলো তার জন্য মরন ফাঁদ।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, বিএমপির সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলামকে বরিশাল থেকে মেট্রোরেল পুলিশের ডিআইজি হিসেবে পোস্টিং দেয়া হয়। মেট্টোরেলের মেয়াদে তাঁর কাছে ‘মাছিও’ যেতো না বলে শোনা যায়। এখন হয়তো রাঘব বোয়ালরাও যাবে। কারণ, ২৩ জুন তাঁকে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবে পোস্টিং দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, বিএমপি’র কমিশনার হিসেবে সাইফুল ইসলাম বরিশাল থেকে তেমন সুনাম নিয়ে যেতে পারেননি। যদিও বিএমপি’র কোনকোন কমিশনার বরিশালে উচ্চ মাত্রার সুনাম অর্জন ও বিশেষ দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তাঁদের মধ্যে এস এম রুহুল আমিন পুলিশ প্রধান হবার দোড়গোড়ায় আছেন বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে।
আলমগীরের বিবাহ দোষ
নানান রকম দোষের কথা প্রচলিত আছে। এর মধ্যে অধিক প্রচলিত হচ্ছে, স্বপ্নদোষ ও মুদ্রাদোষ। এই দোষের কোনটি মো: আলমগীর হোসেনের ছিলো কিনা তা নিশ্চিত নয়। তবে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তার বিবাহ দোষ ছিলো। তা ছিলো সর্বোচ্চ মাত্রায়। বহু বিয়ের খবর জানাগেছে। আর সরকারী হিসেব মতে তার বিবাহ দোষের খবর মিলেছে ১৯৯২ সালেই। তখন তিনি শিক্ষানবীশ এসআই ছিলেন।
পুলিশের রেকর্ড অনুসারে ১৯৯৩ সালের ২ আগস্ট এসআই হিসেবে মোঃ আলমগীর হোসেনের চাকুরী স্থায়ীকরণ হয়। কিন্তু শিক্ষানবীশ এসআই হিসেবে চাকরিকালীন ১৯৯২ সালের ১৮ ডিসেম্বর তিনি মোঃ নাসিমা খাতুনকে বিয়ে করেন। কাবিননামা ধার্য করা হয় ৫০ হাজার টাকা। এর প্রায় দুই বছরের মাথায় ১৯৯৪ সালের ১ জুলাই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম জেসমিন আরা ঝুনু। এদিকে অপর একটি সূত্র বলছে, পুলিশের রেকর্ডের বাইরেও মোঃ আলমগীর হোসেনের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, একাধিক বিয়ে ছাড়াও পরকীয়া দোষ রয়েছে মোঃ আলমগীর হোসেনের। আর ‘অনপেমেন্ট বান্ধবী’ রয়েছে তার অসংখ্য।
আলমগীরের গলা
কাটলো পঁচা শামুকে
পঁচা শামুকে পা কাটা- বলে একটি প্রবচন আছে। মানে তুচ্ছ ঘটনায় বড় ক্ষতি হওয়া। তবে আলগীর হোসেনের বেলায় এই প্রবচন টপকে গেছে। পা নয়, পঁচা শামুকে আলমগীর হোসেনের গলা কেটেছে! মানে, চাকরি গেছে। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকলেও এমন এক অপরাধে তার চাকুরী গেলো যা সাধারণের দৃষ্টিতে অতি সাধারণ দোষ হিসেবে বিবেচিত হয়। কেউ কেউ আবার কোনো দোষই মনে করেন না। অথচ আইনের দৃষ্টিতে তা এক গুরুতর অপরাধ। যে অপরাধে অতি বিলম্বে হলেও আলমগীর হোসেনের চাকুরি গেছে।
আলমগীরের পতনের সূচনা যেভাবে
বরিশালে ভূমিদস্যু ও মাদকচক্রের রক্ষক হিসেবে খ্যাত ডিবি ওসি মো: আলমগীর হোসেন ছিলেন বেপরোয়া। এ ধারায় চলতে চলতে বরিশাল সদর উপজেলার ১নং রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের বিলামেরপুল এলাকার মাদক ও ভূমিদস্যু চক্রের এক ছিছকে গডফাদারের কারসাজিতে সাজানো দুটি ফৌজদারী মামলা আদালতে দাখিল করা হয়। এক বাদিনীর করা দুটি সাজানো মামলার একটি মামলা তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন পিবিআইতে এবং একটি প্রেরণ করেন ডিবিতে। পিবিআই যথাযথ প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু তৎকালীন বিএমপির ডিবি ওসি আলমগীর ২৫ মার্চ বরিশাল আদালতে সম্পূর্ণ বানোয়াট অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মাদকচক্রের দুই লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে বানোয়াট তদন্ত রিপোর্ট আলমগীর নিজেই অগ্রগামী করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, তখন তাঁর নিয়ন্ত্রকারী ডিসি অথবা ইম্মিডিয়েট বস কে ছিলেন?
আলমগীর হোসেন কর্তৃক উল্লেখিত মনগড়া প্রতিবেদন দেবার পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ব্যক্তি বিএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবরে ১৮ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় বিএমপির এডিসি(উত্তর) মোঃ ফারুক হোসেনকে। এই তদন্ত প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগী মামলার বিবাদী এবং অভিযুক্ত ডিবি ওসি মোঃ আলমগীর হোসেনকে শুনানী ও স্বাক্ষ্য দেবার জন্য ডাকা হয়। শুনানীতে অংশ নিতে গিয়েও মো: আলমগীর হম্ভিতম্ভি করে বারবার বলেছেন, ‘অভিযোগকারীর বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, কাজেই আমার বিষয়ে কোন তদন্ত হতে পারে না। আমি কনটেম্ট অফ কোর্ট মামলা করবো!’ কিন্তু তার অস্ফালন এবং ‘অন্য ধরনের’ ছুটাছুটি কোন কাজে আসেনি। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি বরিশাল থেকে সটকে পড়েন। তাকে পোস্টিং দেয়া হয় এপিবিএন-এ। কিন্তু তার আর শেষ রক্ষা হলো না, তাকে ৩০ মে পত্রপাঠ চাকুরি থেকে বিদায় করা হয়েছে । দুদকের নজরদারীতে আলমগীর হোসেন
বিএমপির গোয়েন্দা শাখার সাবেক ওসি সদ্য চাকুরিচ্যূত আলমগীর হোসেন দুদকের নজরদারিতে আছেন। একটি সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। এদিকে নানান সূত্রে জানাগেছে, দুর্নীতির শিরোমনি মো: আলমগীর হোসেনের বিপুল পরিমান সম্পত্তি ও নগদ অর্থ রয়েছে। এই অর্থ-সম্পদ নিজের নামের বাইরেও নানান ব্যক্তির নামে রেখেছেন বলে জানাগেছে। তবে এর সিংহভাগ রয়েছে তার একাধিক স্ত্রীর নামে। সূত্রমতে, তার একাধিক বিয়ে করার নেপথ্যে যত না জৈবিক চাহিদা, তার চেয়ে বেশি কারণ হচ্ছে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি রক্ষার কৌশল।
প্রসঙ্গগত, পুলিশ ইন্সপেক্টর মো: আলমগীর হোসেনের বিপুল সম্পত্তি ও অঢেল টাকা থাকার কথা তিনি প্রায়ই নিজের মুখেই বলে থাকেন। এমন কি বরিশালে তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালে তিনি এও বলেছেন, রিটার্মেন্টের ৬০/৬৫ লাখ টাকা না পেলে কোন অসুবিধা নেই। আমার একটি ‘খুটি ’ বেচলে দুই কোটি টাকা হবে। শুধু তাই নয়, থানার ওসি থাকাকালে মাসে কোটি টাকা ‘আয়’ করার গল্পও করেছেন মো: আলমগীর হোসেন তার ঊর্ধতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের কাছেও।
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠান...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক-এগারোর সরকারের মতো দুই নেত্রীকে মাইনাস করার কোনো কৌশল এ সরকারের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে...
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.