Home শীর্ষ খবর ব্রাহমা জাতের গরুতে মাংশ-পুষ্টিগুণ বেশি, উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল হবায় রোগবালাই কম

ব্রাহমা জাতের গরুতে মাংশ-পুষ্টিগুণ বেশি, উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল হবায় রোগবালাই কম

দখিনের সময় ডেস্ক:
ব্রাহমা গরু মূলত মাংসের জাত বলে পরিচিত। দুধের জন্য এই গরুর তেমন খ্যাতি নেই। ব্রাহমা গরু দেখতে অনেকটাই দেশি গরুর মতো, কিন্তু আকৃতিতে বেশ বড় হয়। এই গরুর মাংসের স্বাদ দেশি গরুর মতো। এর গায়ে চর্বি কম হয়, যে কারণে পুষ্টিগুণ বেশি। এই মূহুর্তে বাংলাদেশে যেসব ব্রাহমা জাতের গরু রয়েছে তার প্রায় সবই কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রজনন করা গরু।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মি. রহমান বলেছেন, মাংস বেশি হবার কারণে বাংলাদেশে দ্রুতই জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই জাতের গরু। কোরবানির সময় বাজারে অস্বাভাবিক দাম হাঁকানো গরুগুলো মূলত এই ব্রাহমা জাতেরই গরু। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রাহমা জাতের গরুর সিমেন বা বীজ বা শুক্রাণু এনে সরকার কয়েকটি জেলায় স্থানীয় খামারিদের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে এই জাতের গরু উৎপাদন শুরু করে। বাংলাদেশে ২০০৮ সালে প্রথম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ‘বিফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রাহমা উৎপাদন কর্মসূচি শুরু করে। শুরুতে ১১টি উপজেলায় তিন বছরের জন্য এ কর্মসূচি চালু হলেও এখন প্রায় ৫০টির মত জেলায় চলছে এ কর্মসূচি।
সাধারণভাবে ব্রাহমা গরুর জনপ্রিয়তার প্রধান কারণের মধ্যে তিনটি বৈশিষ্ট্যকে গুরুত্ব দেয়া হয়- এর উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীলতা, দীর্ঘ জীবন এবং ক্রস-ব্রিডিংয়ে উচ্চফলন। সাধারণত একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহমা জাতের ষাঁড়ের ওজন ৮০০ কেজি থেকে ১০০০ কেজির বেশি হতে পারে, আর একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহমা জাতের গরুর ওজন হবে ৫০০কেজি থেকে ১০০০ কেজি। তীব্র গরমে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় ব্রাহমা গরু সুস্থ-স্বাভাবিক থাকতে পারে। সাধারণত একটি ব্রাহমা গরু ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরো দীর্ঘ জীবন পাওয়ার নজির আছে। এছাড়া উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল হবার কারণে ব্রাহমা জাতের গরুর রোগবালাই অনেক কম হয়।
প্রাণী পুষ্টি ও জেনেটিক্স বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাহমা গরুর আদি নিবাস ছিল ভারতে। বর্তমানে যেসব ব্রাহমা গরু বাংলাদেশ, ভারত কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় দেখা যায় সেগুলো মূলত ব্রাহমার সিমেন বা শুক্রাণু দিয়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে জন্ম নেয়া শংকর জাতের গরু। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল নিউট্রিশন, জেনেটিক্স অ্যান্ড ব্রিডিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল-নূর মোহাম্মদ ইফতেখার রহমান বলেছেন, ব্রাহমা জাতের গরু নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে, যে কারণে এই জাতের গরুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এখনো চূড়ান্ত কথা বলা যায় না। বাংলাদেশের কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ব্রাহমা জাতের গরু নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। সেগুলোর ফলাফল জানা গেলে আগামী দিনে এ জাতের গরুর উৎপাদন দেশে আরো বাড়বে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি হার্টের জন্য ভালো?

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিমকে সবচেয়ে উপকারী এবং পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি যুগ যুগ ধরে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যুক্ত রয়েছে। ডিম...

মানবাধিকার কর্মী মিনা ফারাহকে জামায়াত আমিরের ফোন

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন...

পঞ্চগড়ে চা খামারিদের ক্ষমতায়নে ইউসিবির কর্মশালা

দখিনের সময় ডেস্ক: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার চা খামারিদের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আর্থিক...

সন্তানের অত্যাচারে শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যা

দখিনের সময় ডেস্ক: সৈয়দ আলী আকনে (১০৪) নামের এক শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সৈয়দ আলী পিরোজপুরের ইন্দুরকানী...

Recent Comments