ঠুনকো অজুহাতে ব্রাহমা গরু আমদানি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক:

সরকারের আশংকা, ব্যাপক হারে ব্রাহমা গরু উৎপাদন হলে হোলস্টেইন জাতের বা ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর উৎপাদনে আগ্রহ হারাবে খামারিরা। এই জাতের গরু দুধের উৎপাদনের জন্য খ্যাত। বাংলাদেশে দুগ্ধ উৎপাদন খাতকে সুরক্ষা দেবার জন্যই মূলত নিষিদ্ধ করা হয়েছে ব্রাহমা জাতের গরুর আমদানি। অনেকেই ‍এই যুক্তিকে ঠুনকো অজুহাত হিসেবে বিবেচনা করছেন।

ব্রাহমা জাতের গরু বাংলাদেশে উৎপাদন ও পালন নিষিদ্ধ না হলেও ২০১৬ সালে এক নীতিমালা দিয়ে এই জাতটিকে আমদানি নিষিদ্ধের তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। ফলে ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে আটক করা ব্রাহমা গরুগুলিকে আনা হচ্ছিলো ফ্রিজিয়ান জাত বলে ঘোষণা দিয়ে। যদিও এই ব্রাহমা জাতের উৎপাদন বাড়ার কারণে বাংলাদেশে মাংসের উৎপাদন বেড়েছে এবং চাহিদা মেটানো সহজ হয়েছে।

বাংলাদেশে যত পশু কোরবানি হয়, এক সময় তার একটা বড় অংশ আসতো ভারত থেকে। কিন্তু ২০১৪ সালে ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে গরু আসা বন্ধে সীমান্তে কড়াকড়ি দেয়। যে কারণে এক পর্যায়ে দেশীয় পর্যায়ে মাংসের চাহিদা পূরণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. সরকার বলেছেন, সেসময় দেশীয় মাংসের চাহিদা পূরণে সরকার ব্যাপকভাবে ব্রাহমা গরু উৎপাদনের দিকে যায়।

ব্রাহমা জাতের গরু পালন খামারিদের জন্য সহজ এবং লাভজনক হওয়ায়, আর রোগ বালাইও অন্যান্য জাতের গরুর চেয়ে কম হওয়ায় স্থানীয় খামারিদের কাছে এই গরু অল্প সময়েই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই মূহুর্তে বাংলাদেশে গরুর মাংসের চাহিদা একটি বড় অংশ আসছে ব্রাহমা জাতের গরুর মাংস থেকেই। কিন্তু ২০১৬ সালে সরকারের কৃত্রিম প্রজনন নীতিমালার অধীনে বেসরকারিভাবে এবং ব্যক্তি উদ্যোগে খামারিদের মাধ্যমে ব্রাহমা গরু আমদানি নিষিদ্ধ করে।

ব্রাহমা গরু আমদানি নিষিদ্ধ করার কারণ ব্যাখ্যা করে ডা. সরকার বলছেন, এখন খামারিরা সরকারের কাছ থেকে সিমেন নিয়ে প্রজনন ঘটাচ্ছে, কিন্তু আমদানির অনুমতি পেলে খামারিরা ব্যাপক হারে এই গরু উৎপাদন করবে। তিনি বলেন, এই জাতের গাভী তার আকৃতি অনুযায়ী অনেক দুধ দেয় না। এখন খামারিরা যদি ব্যাপক হারে ব্রাহমা উৎপাদন করে তাহলে দেশে গরুর দুধের উৎপাদন একেবারেই কমে যাবে। মূলত সেই জন্যই বেসরকারি পর্যায়ে ব্রাহমা গরু আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।