Home শীর্ষ খবর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে প্রস্তুত, জানালেন  সালমান এফ রহমান

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে প্রস্তুত, জানালেন  সালমান এফ রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক:
১০ হাজার কো‌টি (১০০ বিলিয়ন) টাকার সম্পদ ক্ষতির চেয়ে একটি জীবন বেশি মূল্যবান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার নিজস্ব মালিকানাধীন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ মন্তব্য ক‌রেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, সামনে যে চ্যালেঞ্জ তা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জানান, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে প্রস্তুত আছেন।
বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, এ ঘটনায় হয়ত আমাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু ২০০ প্রাণের যে ক্ষতি সেটা কিন্তু আরও বড় ক্ষতি। এই প্রাণ আর ফেরত পাওয়া যাবে না, যাই হোক না কেন। এটা কিন্তু অনেক দুঃখজনক। এই পরিবারগুলো যা হারিয়েছে, যে ক্ষতি সেটা কোনোভাবেই পূরণ করা যাবে না। আমি তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই। আমি যেটা বুঝতে পারছি, শিক্ষার্থীরা বিচার চায়। বিচার তো আমরাও চাই। এটা নিয়ে কাজ চলছে। সমস্যা হলো, ওদের মধ্যে ঐক্যটা পাচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রী ওদের সঙ্গে দেখা করতে চান। তিনি মনে করেন ওরা উনারই ছেলে-মেয়ে। এখন তো অনেক তথ্য বের হচ্ছে। একটা ইনফরমেশন ব্ল্যাক আউট হয়েছিল। এখন অনেক তথ্য বের হচ্ছে। শিগগিরই ছাত্র ও জনগণ তা বুঝতে পারবে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকেও যদি কোনো ভুল হয় সেটা শোধরানোর কাজ হবে। আমি বলব, রাস্তায় না থেকে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান আসুক।
সহিংসতার বিষয়ে আগাম তথ্য না থাকাকে গোয়েন্দা ব্যর্থতা বলা হবে কিনা জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, যখন এ ধরনের পরিকল্পনা হয় বা ষড়যন্ত্র হয়, এটা কিন্তু গোপনে হয়। যতোই আমার গোয়েন্দা সংস্থা থাকুক। আমরা তদন্ত করছি, কারা করেছে। তবে এর পেছনে অনেক শক্ত হাত আছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, জামায়াত–শিবির–বিএনপি তারা তো সামনেই চলে এসেছে। আমি বলছি, তাদের পেছনেও কেউ আছে। আমি বলতে চাই, তাদের পেছনে একটি শক্তিশালী হাত আছে। সেটা আমাদের বের করতে হবে। এটা নিয়ে আমি কমেন্ট করতে চাই না। তদন্ত শেষ হোক। আমরা জানাবো।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যে সহিংস হয়ে উঠবে তা ধারণায়ও ছিল না জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, যে অবস্থা দেখেছি, এটা আমার জন্য একটা লার্নিং এক্সপেরিয়েন্স। একটা ষড়যন্ত্র কীভাবে প্লে আউট হয়। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এটা স্পষ্ট যে খুবই পরিকল্পিতভাবে এই আন্দোলনকে টেক ওভার করে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এটা এখন ক্লিয়ার। আমি মনে করি, ছাত্ররাও ডেফিনেটলি এটাকে সমর্থন করে না। তারা নিজেরাই বলেছে, এটার সঙ্গে নেই। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, জনগণও এটাকে সমর্থন করে না। কিন্তু এমন পরিকল্পিত করা হচ্ছে, যখনই আমরা একটা ধাপে সলিউশন করতে চাই, তখনই ঘটনা ঘটানো হয়। এতে এক কদম সামনে গেলে, দুই কদম পেছনে যেতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্দোলনের শুরুতে শিক্ষার্থীরাই ছিলেন। এখনও তারা আছে বুঝলাম। তাহলে হঠাৎ অন্যরা ঢুকলো কীভাবে? যখন শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে আসে, তখন তাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পেছনের জঙ্গিরা সামনে চলে আসে। তখন বিপজ্জনক অবস্থা হয়ে যায়। পরিকল্পনা এত সূক্ষ্ম। অনেক তরুণ যারা শিক্ষার্থী না, যেন কিশোর গ্যাং, বা বস্তির বেকার। এখন যদি আপনি দেখেন, সেটা শিক্ষার্থী না সন্ত্রাসী এটা বোঝা কঠিন হয়ে যায়। ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সন্ত্রাসীরা মিশে যায়। যখন সন্ত্রাস শুরু করে তখন পার্থক্য করা মুশকিল হয়ে যায়।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে দেরি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এটাতে একমত তবে আমি এটাকে বিলম্ব করব না। তবে যদি জানতাম এ ধরনের পরিকল্পনা আছে, তাহলে অন্যভাবে এটা হ্যান্ডেল করতাম। ছাত্রদের দাবি যেটা ছিল, তারা কিন্তু সংস্কার চেয়েছে। বাতিল নয়। আমাদের সমস্যা হলো এটা ছিল বিচারাধীন। এখন যদি কমিশনও করা হয় সেটা আদালত অবমাননা হয়। যদি আমরা বুঝতাম, তাহলে অন্য কিছু….। আমি বলব না, আমাদের ভুল হয়নি। কিন্তু বিষয়টা এতো ফাস্ট মুভিং হয়েছে। কল্পনাই করতে পারি নাই। এটা যে সরকার পতনের আন্দোলন হবে এটা ভাবিই নেই।’
সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা কিন্তু খুবই অস্বাভাবিক সময় পার করেছি। প্রায় ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এটা কিন্তু আমরা কল্পনাও করতে পারি না। বিটিভি, মেট্রোরেল, সেতুভবনে হামলা। ছাত্র আন্দোলন যখন এই আন্দোলন শুরু করেছে, তখন যদি আমরা এটা বলতাম কেউ বিশ্বাস করত না। আপনিও হাসতেন। এত প্রাণ যাবে কেউ কি মনে করেছিল? এখন তো হয়ে গেছে। আমাদের পেছনে না তাকিয়ে সামনে তাকানো উচিত।
৬ সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি, যখন তারা কথা বলছিলেন। আইনমন্ত্রী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যখন কথা বলছিলেন, তখন তাদের কয়েকজন ভাবছিলেন হেফাজত দরকার। তারা অবশ্য এখন বলছেন যে এটা বলেনি। আমার কাছে এখন এটার গুরুত্বও নেই। তারা এখন তাদের পরিবারের কাছে আছেন। এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, সামনে যে চ্যালেঞ্জ এটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কোটা আন্দোলন, এটা ছাত্রদের ন্যায্য দাবি। তারা এই দাবি আগেও তুলেছিল। সরকার কিন্তু ২০১৮ সালে বাতিল করে দেয়। আমি মনে করি মেধাবীদেরই চাকরি দেওয়া উচিত। আমার নিজের প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো, আইএফআইসি নতুন চাকরির সময় বলে দিয়েছি সবাইকে, যে মেধার ওপরই চাকরি হবে। সমাজে থাকলে তো তদবির থাকেই। আমি বন্ধু–বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদেরও বলেছি, আমাদের একটা প্রসেস আছে সেটার মধ্য দিয়ে আসলে চাকরি হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

কাজের বুয়ার ‍একাউন্টে ১৬ কোটি টাকা, এস আলম গ্রুপের কান্ড

দখিনের সময় ডেস্ক: বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। গ্রুপটির কর্ণধার মো. সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্য এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন...

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রসঙ্গত, ২০০১...

সীমান্তে আবারও মিয়ানমার থেকে গুলি, টেকনাফে আতঙ্ক

দখিনের সময় ডেস্ক: কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ গোলাগুলির ঘটনায় গুলি এসে টেকনাফ স্থলবন্দরের একটি পণ্যবাহী ট্রাক ও স্থানীয়...

জাবি’র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীমকে মারধর, হাসপাতালে মৃত্যু

দখিনের সময় ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। পরে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান...

Recent Comments