দখিনের সময় ডেস্ক:
আপনি কী বড় অঙ্কের টাকা খরচ না করে এসি ছাড়া ঘর ঠান্ডা রাখতে চান? তা হলে আপনার জন্য ১৫টিপস আছে। বিশেষজ্ঞরাও এসি বসানোর চেয়ে বরং এই টিপসগুলো মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। যেগুলো কার্যকর এবং একইসাথে পরিবেশ বান্ধব। এই ১৫টি পদক্ষেপ নিলে আপনার ঘর এসির মতো না হোক, আগের চাইতে অনেকটাই ঠান্ডা থাকবে, সেটা বলা যেতে পারে।
১. জানালা খোলা ও বন্ধ রাখার সময়
ঘরের জন্য প্রাকৃতিক আলো জরুরি হলেও গরমকালে ঘরে যত সূর্যের আলো ঢুকবে, ঘর তত গরম হয়ে উঠবে। তাই দিনের বেলায় জানালা বন্ধ রাখুন। বিশেষ করে পশ্চিম ও উত্তরমুখী জানালাগুলো। জানালাগুলোয় হালকা রঙের, মোটা, সূতির পর্দা টেনে দিন। পর্দাটি এমন পুরু হবে যা ঘর অন্ধকার করে দেবে। পর্দার বাইরের দিকে, অর্থাৎ যে অংশ সূর্যের দিকে থাকে সেদিকে সাদা কাপড় সেলাই করা থাকলে বা আরেকটি সাদা পর্দা থাকলে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে ঘর ঠান্ডা থাকবে।
পর্দায় ঠান্ডা পানি স্প্রে করলে বা পর্দার উপর ভেজা চাদর ঝুলিয়ে দিলে সেই পানি বাষ্পীভূত হয়ে ঘর কিছুটা শীতল হবে। সম্ভব হলে জানালাগুলো পানিতে ধুয়ে নিতে পারেন। যতক্ষণ সূর্য প্রখর থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত জানালা-দরজা বন্ধ রাখবেন। তবে সূর্যাস্তের পর যখন পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা হতে শুরু করবে, তখন পর্দা সরিয়ে ঘরের সব দরজা জানালা খুলে দেবেন যাতে শীতল বাতাস ঢুকতে পারে৷ ঘরের গরম তাপ বাইরে বের করে দিতে যে ঘরে আপনি থাকবেন, তার জানালা খুলে বাতাস ঢুকতে দিন। তার বিপরীত কোনে থাকা অপর ঘরের জানালা খুলে বাইরের দিকে মুখ করে ফ্যান বসিয়ে দিন। এতে ঘরের গরম বাতাস বাইরে বেরিয়ে যাবে। একে বলা হয় ক্রস ভেন্টিলেশন যা ঘর দ্রুত ঠান্ডা করে। তবে সকালে কড়া রোদ ওঠার আগেই সব দরজা জানালা আবার বন্ধ করে দিতে হবে।
২. জানালা-দেয়াল-ছাদে প্রলেপ
জানালায় যদি হিট প্রোটেক্টিভ উইন্ডো ফিল্ম লাগানো হয় তাহলে সেটা ৭৮ শতাংশ সৌর তাপ এবং ৯৯ শতাংশ ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি আটকে দিতে পারে। যার ফলে ঘর গরম হওয়া অনেকটা ঠেকানো যায়। উইন্ডো ফিল্ম হলো রঙিন স্টিকারের মতো আবরণ যেটা জানালার কাঁচের উপর বসানো হয়। এটা বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটে পাওয়া যায়। তবে উইন্ডো ফিল্ম না পেলে জানালার বাইরের কাঁচ সাদা রঙ করে বা সাদা কাগজ লাগিয়ে দিলেও হবে। এছাড়া দু’টি স্তর বিশিষ্ট কাঁচের জানালা সাধারণ জানালার চেয়ে অনেক ভালো তাপ নিরোধক হিসেবে কাজ করে।
অন্যদিকে, ঘরের ছাদে ও দেয়ালে ইনসুলেশন করলে গরমকালে ঘর ঠান্ডা থাকে আবার শীতকালে ঘর গরম থাকে। এই ইনসুলেশন হলো এক ধরনের মোটা প্রলেপ। এক্ষেত্রে কন্সট্রাকশন বা ইন্টেরিয়র নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সেবা ক্রয় করতে পারেন। আপনার ঘরে কোন ইন্সুলেশন সবচেয়ে ভালো কাজ করবে সেটা তারাই বলে দেবেন।
৩. জানালায় সানশেড
জানালার উপরে বিশেষ করে পূর্ব পশ্চিমের জানালায় সানশেড থাকলে তা রোদের তাপ অনেকটাই আটকে দেয়। সানশেড না থাকলে জানালার ওপর হালকা রঙের ছাউনি টানিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, জানালার উপর ছাউনি বসালে সূর্যের তাপ ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত আটকানো যায়।
ঘরের দেয়াল, মেঝে, আসবাবপত্রের রঙ যত গাঢ় হয় তত বেশি আলো শোষণ করে এবং তাপমাত্রা বাড়ে। আর রঙ যত হালকা হয়, আলো তত কম শোষণ হয়, প্রতিফলিত হয় বেশি এতে তাপমাত্রা তেমন বাড়ে না। তাই ঘরের দেয়াল, মেঝে ও আসবাবপত্রের রঙ হালকা রাখার চেষ্টা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে দেয়ালে তাপনিরোধী পেইন্ট ব্যবহার করা যায়। এছাড়া মেঝে ঠান্ডা রাখার ক্ষেত্রে মার্বেল, স্যান্ডস্টোন বা গ্রানাইটের টাইলস খুব ভালো। তবে এগুলো অনেক দামি। এক্ষেত্রে কাঠ, ভিনাইল প্ল্যাঙ্ক, সাদা রঙের সিরামিকের টাইলস বা পোরসেলিন টাইলস ব্যবহার করলে ঘর ও আশেপাশের তাপমাত্রা অনেক কমে আসবে। মাটির ঘর হলে মাটি নতুন করে লেপে দিলেও ঘরে ঠান্ডা ভাব থাকবে।
এছাড়া আসবাবপত্র কাঠের হলে হালকা রঙের বার্নিশ করিয়ে নেয়া যেতে পারে। সবকিছু হালকা রঙ হলে দিনের আলো চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘর ঠান্ডা হতে শুরু করবে। আরেকটি বিষয়; ঘরের ভেতর আসবাবপত্র যতটা সম্ভব কম রাখলে তাপ শোষণও কম হবে।
৫. ছাদে সাদা রঙ
কারও ছাদ যদি গাঢ় রঙের হয় তাহলে ওই বাড়ির তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়। অন্যদিকে, বাড়ির ছাদ যদি সাদা রঙে ছেয়ে দেয়া যায় সেটা টিনের ছাদ হোক বা কংক্রিটের, সূর্যের আলোর বেশিরভাগই প্রতিফলিত হবে। এতে বাড়ি ঠান্ডা থাকবে। দেখা গিয়েছে সাদা রঙ ৮৫ শতাংশ আলো প্রতিফলিত করতে পারে যেখানে গাঢ় রঙ প্রতিফলন করে মাত্র ২০ শতাংশ। সাদা রঙ করা ছাদের বাড়িগুলো দ্বিগুণেরও বেশি ঠান্ডা থাকে। অনেকে আছেন বাড়ির ছাদে ও আশেপাশে কংক্রিট পেভমেন্ট ব্লক বসান। কিন্তু এই ব্লকগুলো গরম ধরে রাখে। এতে দিন ও রাত দুই সময়ে পরিবেশ প্রচণ্ড গরম থাকে। এক্ষেত্রে সাদা টাইলস বিকল্প সমাধান হতে পারে।
ছাদ ঠান্ডা রাখার আরেকটি ভালো উপায় ছাদে বাগান করা। আবার ঘাসও বিছিয়ে দেয়া যায়। এক্ষেত্রে ছাদটি ওয়াটার প্রুফ বা পানি নিরােধক হতে হবে। এছাড়া ছাউনি লাগিয়ে বা ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়েও সমস্যার সমাধান করা যায়।
৬. সিলিং ফ্যান
কখনও কখনও আপনার মনে হতে পারে সিলিং ফ্যান ঘর তো ঠান্ডা করছেই না বরং গরম বাড়াচ্ছে। এমনটা হওয়ার কারণ ফ্যানটি ঠিক দিকে ঘুরছে না। ফ্যানের পাখাগুলো ঘড়ির কাঁটার গতিতে ঘুরলে ছাদের গরম বাতাস চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু পাখাগুলো ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরলে সেটা গরম বাতাস ঠেলে বের করে দিয়ে ঘর ঠান্ডা করতে পারে। তাই খেয়াল করে দেখুন আপনার ফ্যান ঠিক দিকে ঘুরছে কি না। সিলিং ফ্যান সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। অপরিষ্কার ফ্যান থেকে ঠিকঠাক বাতাস পাওয়া যায় না।
৭. ঠান্ডা বাতাস
ঘরের ফ্যান থেকে এয়ার কুলারের মতো ঠান্ডা বাতাস পেতে একটি প্লেটের উপর বড় বেশ খানিকটা বরফ রেখে সেই বরাবর টেবিল ফ্যান ছেড়ে দিন। সিলিং ফ্যানের সরাসরি নীচে রাখলেও হবে। এতে ঘরের বাতাস দ্রুত ঠান্ডা হয়ে আসবে। তবে বরফ রাখার পাত্রটি অগভীর হলেই ভালো। বরফ না থাকলে ফ্যানের সরাসরি নীচে ঠান্ডা পানির বালতি রাখলেও কাজে দেবে। এছাড়া ঘর ঝাড়ু দেয়ার পর দিনে কয়েকবার বরফ ঠান্ডা পানিতে ঘর ভেজা ভেজা করে ঘর মুছে নিলে তা ঘর ঠান্ডা রাখতে বেশ কার্যকর উপায়।
৮. এক্সস্ট ফ্যান
ঘর ঠান্ডা রাখতে বিশেষ করে ঘরের ভেতরের তাপ বাইরে বের করে দিয়ে এবং বাইরের ঠান্ডা বাতাস ভেতরে টেনে আনতে এক্সস্ট ফ্যান একটি ভালো সমাধান। এটি মূলত দেয়ালের উপরের দিকে বসানো বৈদ্যুতিক পাখা। এটি রান্নাঘর ও টয়লেটসহ যেকোনও ঘরেই বসানো যেতে পারে। রান্নাঘরে যতক্ষণ রান্না করবেন ততোক্ষণ ফ্যানটি চালিয়ে রাখতে হবে। এই পদ্ধতিটি তখনই ভালো কাজ করে যখন ভিতরের তাপমাত্রা বাইরের থেকে বেশি হয়।
৯. বিছানা তোশক বালিশ
বিছানা, বালিশ, তোষকের জন্য ১০০ শতাংশ পাতলা সুতির কাপড়ের বিকল্প নেই। কারণ সিল্ক বা পলেস্টার জাতীয় কাপড় তাপ ধরে রাখে, যেটা সুতিতে হয় না। বিছানার চাদরের ক্ষেত্রে হালকা রঙ বিশেষ করে সাদা একরঙা চাদর বেছে নেয়া যেতে পারে। বেশি রঙিন ও নকশাদার চাদর তাপ শোষণ করে থাকে।
এছাড়া আমরা সচরাচর বিছানায় যেমন তুলার তোশক, জাজিম ব্যবহার করি বা সোফায় যেসব গদি বসাই তা শরীর এবং আশেপাশের থেকে প্রচুর তাপ শোষণ করে। এক্ষেত্রে বাঁশ বা অন্যান্য প্রাকৃতিক ফাইবারের তোশক, জাজিম ও গদি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো উপায়। এটা সম্ভব না হলে বিছানা বা সোফায় সুতি চাদর বিছিয়ে দিলেও কিছুটা কাজে দেবে। এছাড়া বালিশের ক্ষেত্রে চিলো নামের বালিশগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে যা গরমের সময়েও মাথা ঠান্ডা রাখে। এছাড়া বরফ জমানো পানির বোতল বিছানার পায়ের কাছে রাখলেও ঠান্ডার অনুভূতি পাবেন, তবে এতে বিছানা ভিজে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। আপনি যদি দোতলা বাসায় থাকেন, তাহলে খেয়াল করে দেখবেন, নিচতলা অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা। তাই মেঝেতে যদি মাদুর, চাটাই বা শীতলপাটি বিছিয়ে ঘুমান তাহলে বিছানার চাইতে আরাম লাগতে পারে।
১০. বাতি পরিবর্তন
আপনি ঘরে কী ধরনের বাতি জ্বালান তার সাথে তাপমাত্রার বড় যোগ আছে। বাংলাদেশে একসময় হলদে আলোর হ্যালোজেন বাতি ব্যবহৃত হতো, যা প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে। তবে গত দুই দশক ধরে এলইডি লাইটের মতো বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী বাতির ব্যবহার বেড়েছে। যার বড় সুবিধা এতে তাপ উৎপন্ন হয় খুব কম। একটি বৈদ্যুতিক বাতি খুব সামান্য হলেও তাপ উৎপন্ন করে থাকে। তাই যেসব বাতির প্রয়োজন নেই সেগুলো বন্ধ রাখা দরকার।
১১. রান্না
আপনি কখন ও কতক্ষণ ধরে রান্না করছেন সেটিও বেশ জরুরি। কেননা রান্না অনেক তাপ উৎপন্ন করে এবং আপনার বাড়ির তাপমাত্রা অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়। তাই গরমে এমন খাবার খাওয়া যেতে পারে, যেগুলো অল্প সময়ে রান্না হয়ে যায় বা যেগুলো রান্নার প্রয়োজন নেই। এতে চুলা বা ওভেন অল্প সময় চালু থাকে, ফলে উত্তাপ কম ছড়ায়। তবে যাদের রান্নাঘর মূল ঘরের বাইরে তাদের ঘর অনেকটা ঠান্ডা থাকে।
১২. বৈদ্যুতিক যন্ত্র
আপনার ঘরে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি যেমন মোবাইল, চার্জার, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ওভেন, আয়রন, হেয়ার ড্রায়ার, প্রতিনিয়ত তাপ উৎপন্ন করে। আপনি যন্ত্রটি চালাচ্ছেন না কিন্তু প্লাগ ইন করে রেখেছেন, এতেও তাপ উৎপন্ন হয়। তাই যন্ত্র ব্যবহার শেষে প্লাগের সংযোগ খুলে ফেলাই ভালো। আর গরমকালে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যতটা কম ব্যবহার করা যায়, এতে বিদ্যুৎ খরচ কম আসবে, ঘরও ঠান্ডা থাকবে।
১৩. গাছ
আপনার বাড়ির আঙিনায় যদি খোলা জায়গা থাকে তাহলে সেখানে ছায়া দেয়ার মতো বড় গাছ লাগাতে পারেন। গাছ বড় করে তুলতে সময় ও ধৈয্যের দরকার কিন্তু এর ফলাফল খুবই কার্যকর। কারণ একটি ছায়া দেয়া বড় গাছ ৭০ শতাংশ রোদ ঠেকাতে সক্ষম। এক্ষেত্রে জরুরি হলো সঠিক গাছ বাছাই করা যা আপনার ঘরকে আসলেও ঠান্ডা রাখবে, বাতাস বিশুদ্ধ রাখবে, ছায়া দেবে। এটা ফুল গাছ বা ফল গাছ কিংবা অন্য গাছও পারে, নির্ভর করবে মাটি ও জায়গার পরিধির ওপর।
এছাড়া ঘরে গাছ থাকলে ভিতরে জমা হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়, ফলে ঘরের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। এক্ষেত্রে মানিপ্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, অ্যারিকা পাম-জাতীয় গাছ বেছে নিতে পারেন। ঘরের বাইরে ঘাসজাতীয় গাছ লাগালে কিংবা বাগান বিলাস গাছ লাগালেও ঘর ঠান্ডা থাকবে।
১৪. এসির বিকল্প
আপনি যদি এসি কিনতে না চান সেক্ষেত্রে ডিহিউমিডিফায়ার কিনতে পারেন। এর কাজ হলো ঘরের আর্দ্রতা শোষণ করা। বাংলাদেশের জলবায়ুতে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকায় গরম বেশি অনুভূত হয় এবং অস্বস্তি লাগে। তবে ডিহিউমিডিফায়ারের সাহায্যে আর্দ্রতা বের করে দিতে পারলে অনেকটাই ঠান্ডা আর আরামদায়ক লাগে।
১৫. শরীর ঠান্ডা রাখা
ঘর ঠান্ডার রাখার ক্ষেত্রে জরুরি হলো ঘরে থাকা মানুষদের শরীর ঠান্ডা রাখা। আর এজন্য তাদের পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে, সহজে হজম হয় এমন খাবার খেতে হবে, দিনে অন্তত একবার বা দু’বার ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে হবে এবং সুতির হালকা রঙের পাতলা ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। প্রয়োজনে গায়ে পানি ছিটিয়ে ফ্যানের বাতাসে শরীর ঠান্ডা করতে হবে।