Home শীর্ষ খবর চাঁদা তুলে নির্বাচন করা চুন্নু হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক, করেছেন কানাডায়...

চাঁদা তুলে নির্বাচন করা চুন্নু হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক, করেছেন কানাডায় বাড়ি

দখিনের সময় ডেস্ক:

জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু শুরুতে শুভাকাক্সক্ষী ও আত্মীয়দের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নির্বাচন করেছেন। এখন তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে ক্ষমতার সবটুকু স্বাদ নিয়েছেন চুন্নু। কানাডায় তাঁর একটি বাড়িও রয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর মুজিবুল হক চুন্নু আর এলাকায় যাননি।

মুজিবুল হক চুন্নু ২০০১ সালে যখন নির্বাচন করতে আসেন তখন তাঁর আর্থিক দৈন্যদশা ছিলো। সে সময় তিনি কিশোরগঞ্জ শহরের একটি বাড়ি ও দুটি বাস বিক্রি করে নির্বাচন করেছিলেন। ওই নির্বাচনে করিমগঞ্জের একটি ভোট কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক সিল মারা এবং ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে চুন্নুর সমর্থকরা। পরে ওই কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনেও হেরে যান চুন্নু। কিন্তু ২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত এমপি হয়ে তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কানাডায় তাঁর একটি বাড়িও রয়েছে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ঐকমত্যের সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর ভাগ্য বদলে যায় বলে জানান করিমগঞ্জের একাধিক নেতা। সে সময় গার্মেন্ট সেক্টর থেকেই কয়েক শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে সূত্রটি জানায়।

মুজিবুল হক চুন্নু এমপি থাকাকালে শুধু উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং কাজ শেষে উদ্বোধন করে গেছেন। মূল কাজটি করতেন তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) আমিরুল ইসলাম খান বাবলু। মূলত বাবলুই ছিলেন চুন্নুর বিশ্বস্ত ও দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত। দুই উপজেলাতেই বাবলুর দুর্নীতির বিষয়টি এখন মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। বাবলু আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় পার্টির এমপির এপিএসের দায়িত্ব পালন করেছেন নির্দ্বিধায়।

মুজিবুল হক চুন্নুর সময়ে প্রকল্পের কাজের ভাগবাঁটোয়ারা, নিজস্ব ঠিকাদারকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া, বিশেষ প্রকল্প বণ্টন, কৃষি যন্ত্রপাতি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট প্রকল্প, টিআর-কাবিখা, ৪০ দিনের কর্মসৃজনসহ বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতি ছিল ওপেন সিক্রেট। স্থানীয়রা জানান, এসবের মাধ্যমে এমপি চুন্নু যেমন লাভবান হয়েছেন, এপিএস বাবলুও হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক।

এদিকে এমপি হওয়ার শুরুটা মোটেই সুখকর ছিল না মুজিবুল হক চুন্নুর। ১৯৮৬ সালে প্রথমবার এমপি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির আশ্রয় নেন বলে জানান তখনকার প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাড়াইলে ভোট ডাকাতি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হন চুন্নুর ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম। এরপর প্রতিটি নির্বাচনেই তিনি এর স্বাক্ষর রেখেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিলে চুন্নুর কপালে ভাঁজ পড়ে। এ আসনে তখন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। এ অবস্থায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে মোটা অঙ্কের টাকা ঢেলে কোনো রকমে নির্বাচনি বৈতরণী পার হন বলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ।

হাসিনা সরকারের পতনের পর মুজিবুল হক চুন্নু আর এলাকায় যাননি। এখন তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। গত ২৫ আগস্ট করিমগঞ্জে চুন্নুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন তারা। মিছিল শেষে জাপা মহাসচিব চুন্নুর কুশপুতুল দাহ করা হয়। তারা আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম ‘গৃহপালিত’ আখ্যা দিয়ে চুন্নুর দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত এবং তাকে গ্রেপ্তারের     দাবি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রশিক্ষণ শেষ করা ৬২ এএসপি বাদ পড়ছেন?

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রশিক্ষণ শেষ, সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষ করে রবিবার(২০ অক্টোবর) কর্মস্থলে যেতে বদলি আদেশ পাওয়ার কথা। সমাপনী কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করতে রাজশাহীতে হাজির হয়েছেন...

চাঁদা তুলে নির্বাচন করা চুন্নু হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক, করেছেন কানাডায় বাড়ি

দখিনের সময় ডেস্ক: জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু শুরুতে শুভাকাক্সক্ষী ও আত্মীয়দের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নির্বাচন করেছেন। এখন তিনি হাজার কোটি টাকার...

শেখ হাসিনার পতন ভারত হজম করতে পারেনি: বদরুদ্দীন উমর

দখিনের সময় ডেস্ক: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, ভারত এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের পতন হজম করতে পারেনি। এ কারণ হচ্ছে ভারতের সঙ্গে...

কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোরের রহস্যজনক মৃত্যু, নিজ বাসা থেকে লাশ উদ্ধার

দখিনের সময় ডেস্ক: কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোরের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে ৯০ দশকের এই জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা,...

Recent Comments