আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নানান প্রশ্ন বিরাজমান, আছে ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠাও। এরই মধ্যে খোদ রাজধানীতেই উদ্বেগজনক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রধান শক্তি পুলিশের ভঙ্গুর দশা। এই বাহিনীর মনোবলের মাজুল দশা খুবই প্রকট। এমনকি রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে অবশেষে রাষ্ট্রীয়ভাবে ছাত্রদের নিয়োগ করতে হয়েছে। আরো নাকি নিয়োগ করা হবে। তা হলে গ্রাম-গঞ্জ-শহরে নাগরিক নিরাপত্তার কী হবে বিধান? এ বাস্তবতায় র্যাবকে কেন ব্যবহার করা হচ্ছে না? র্যাব কি শোপিস?
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ৫ আগস্টে পলায়নের পর অনেক ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি প্রধান ঘটনা হচ্ছে অনেক পুলিশ সদস্যের চাকরিতে না ফেরা। ধারণা করা হচ্ছে, এরা পালিয়ে গেছেন, তাদের ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এদের প্রসঙ্গে ১ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মন্তব্য, ‘তাদের আর পুলিশ বলব না, তারা অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।’ এই পলাতকদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করে ধরার কথাও বলেছেন। এ দিকে ৬২ এসপির পাসিং আউট প্যারেড আকস্মিকভাবে স্থগিত করতে হয়েছে ২০ অক্টোবর। এ অবস্থায় তিনি নতুন নিয়োগের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন। কিন্তু এই নিয়োগের ফল মাঠে প্রতিফলিত হতে তো সময় লাগবে। কারো কারো মতে, নিদেন পক্ষে এক বছর। ফলে চলমান সময় কিভাবে চলবে? এ দিকে দৃশ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি কুষ্টিয়ায় দিনের বেলায় এক চেয়ারম্যানকে হত্যার ধরন অন্যরকম বার্তা দিচ্ছে বলে পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা। কারো কারো মতে, উল্লিখিত হত্যাকাণ্ডের মাধমে বিভিন্ন নামে জোটবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপের আগমনের বার্তা ঘোষিত হলো। এ দিকে এলিট ফোর্স র্যাব খুবই ‘সুশীল’ প্রবণতায় নিমজ্জিত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংস্থাটি এখন নিউট্রাল গিয়ারে আছে। কেবল তাই নয়, এই ফোর্সের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত বলে বলা হচ্ছে কোনো কোনো মহল থেকে। এ পরিস্থিতে কে লাভবান হবে? আর কেই বা হবে ক্ষতিগ্রস্ত?
সব মিলিয়ে র্যাব এখন দেশে-বিদেশে অনেক ব্যক্তি ও সংস্থার সমালোচনার কাঠগড়ায়। আমেরিকার স্যাংশন খাওয়া এই সংস্থার বিলুপ্তির দাবি তোলা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে একাধিক মহল ও কেন্দ্র থেকে। সম্প্রতি এই দাবি তুলেছে নিউইয়র্ক-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটি অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে র্যাব বিলুপ্ত করার আহ্বান জানিয়ে একটি খোলা চিঠি দিয়েছে। সে চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে সংস্থার ওয়েবসাইটেও। বিরাজমান বাস্তবতায় এই খোলা চিঠিকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখায় সুযোগ কম। এ অবস্থায় প্রথম প্রশ্ন উঠতে পারে, তা হলে কি র্যাব বিলুপ্ত হচ্ছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, র্যাব অনিশ্চিত অবস্থানে পৌঁছানোর দায় কার? এই দুই প্রশ্নে খানিকটা মীমাংসার জন্য কিছু পেছনে ফেরা যাক। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখা ভালো, সুনির্দিষ্ট দায় রয়েছে র্যাব গঠনের আইনেরও। যা রূপকথার গল্পে কাজল দীঘির গভীরে কৌটায় লুকিয়ে থাকা প্রাণভোমরার বিপরীতে মৃত্যু পরোয়ানার সাথে তুলনীয়। র্যাব গঠনের এই আইন প্রসঙ্গে আসছি শেষের দিকে। কলামের শুরুতে র্যাবের সূচনা পর্বে আলোকপাত করা যাক।
প্রায় দুই যুগ আগে ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতাসীন হয় বিএনপি। এই বিএনপি-জামায়াত সরকারকে বিব্রত করার নেপথ্য খেলা ছিল সূচনালগ্নেই। ফলে শুরুতেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি হতে থাকে। খোদ রাজধানী ঢাকার রাস্তায় ঘটতে থাকে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ওয়ার্ড কমিশনারও ছিলেন। পরিস্থিতির অধিকতর অবনতি ঘটলে ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ শুরু হয়। এতে পরিস্থিতির উন্নতি হয় প্রত্যাশিত মাত্রারও বেশি। সেই সময় ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্নে চলেছে গভীর রাত পর্যন্ত। কিন্তু চিরকাল অথবা দীর্ঘ সময়ের জন্য তো আর সেনাবাহিনী মাঠে রাখা যায় না। ফলে তিন মাসের মাথায় ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে সেনাবাহিনী ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া হয়। পরিস্থিতি আবার অবনতির দিকে যেতে থাকে। এ দিকে আগের সিদ্ধান্ত অনুসারে গঠিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ কার্যক্রম শুরু করে। সাত বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত এলিট এই সংস্থার কার্যক্রম শুরু হলে আইনশৃঙ্খলার বেশ উন্নতি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধ কার্যক্রম ও চাঁদাবাজি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে। জনমনে অভূতপূর্ব স্বস্তি ফিরে আসে। র্যাব এতটাই জনপ্রিয় হয় যে, সেই সময় র্যাব সাজার বিষয়টি ছিল শিশু-কিশোরদের খেলার একটি বিশেষ দিক। কিন্তু এই ধারায় ছন্দপতন হয় ক্রসফায়ারের পথ ধরে। আর র্যাবের বন্দুকযুদ্ধের সূচনা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানের কথিত ‘ক্রসফায়ারের’ মধ্য দিয়ে। সে সময় অনেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী র্যাবের সাথে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হওয়ায় রাতারাতি অধিকতর জনপ্রিয় হয়ে ওঠে র্যাব। কোনো কোনো ‘ক্রসফায়ারের’ ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় মিষ্টি বিতরণের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাকেই এক পর্যায়ে কুকর্মের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়। সরকারের শাসন বহাল রাখা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির লালসায় জর্জরিত হয়ে ‘ক্রসফায়ার’ কাণ্ড ঘিরে র্যাবের দানবীয় ইমেজ প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। ক্রসফায়ারের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া শর্টকাট জনপ্রিয়তাই আখেরে সর্বনাশের সূতিকাগার হয়ে দাঁড়ায়। এলিট এই বাহিনীটি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। প্রসঙ্গত, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। আর এপিবিএনের আইনের ধারায়ই চলছে র্যাব। এর আগে এই বাহিনীর নাম ছিল র্যাপিট অ্যাকশন টিম (র্যাট)। র্যাটের বাংলা অর্থ হচ্ছে ইঁদুর। সম্ভবত এই বিপত্তির কারণেই র্যাট থেকে নামকরণ করা হয়েছে র্যাব।
র্যাবের আগেও পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে র্যাবের সাথে ‘ক্রসফায়ার’ যেন একসময় অনেকটা নিয়মিত ঘটনা হয়ে ওঠে। এ ধারায় অনেক প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে। র্যাবের কর্মকাণ্ড তখন থেকেই বিদেশীদের নজরে আসতে থাকে। ২০০৫ সালে ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ওয়াশিংটনে যে তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন সেখানে এ চিত্র ফুটে ওঠে। র্যাব নিয়ে বিশ্লেষণে ২৩ আগস্ট উল্লিখিত মার্কিন তারবার্তায় বলা হয়েছিল- ‘র্যাবের সবচেয়ে পরিচিত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্রসফায়ার নামের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, যার কারণে পথঘাট নিরাপদ হয়ে উঠেছে বলে তারা দাবি করেছে। প্রতিবারের গল্প প্রায় একই রকম। র্যাবের কোনো কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়া, চাঁদা আদায়, এমনকি ডাকাতির অভিযোগও উঠেছে।’ এ দিকে সেই সময়কার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান পুরুষ প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছিলেন, ‘যদি কোনো র্যাব সদস্য বিশৃঙ্খলা করে, তার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’ এই হুঁশিয়ারিতে র্যাব কিছুটা সংযত হলেও পরবর্তী সময়ে আবার বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকে। আওয়ামী শাসনামলে হয়ে ওঠে রীতিমতো রক্তপিপাসু মূর্তিমান এক দানব! মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, শুরুর সময় থেকে বিএনপির ক্ষমতার মেয়াদ ২০০৬ সালে শেষ হওয়া পর্যন্ত র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ৩৮০ জন নিহত হয়েছেন। আর আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ধারাবাহিক একাধিক মেয়াদে র্যাব ও অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কথিত ক্রসফায়ারে অন্তত ৬০০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ছয় শতাধিক লোকের নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। এ দিকে র্যাবের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের নামে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ ব্যাপক প্রচার পায় ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায়। অভিযোগ আছে, অর্থের বিনিময়ে এ খুন করানো হয়েছে। এর পর র্যাবের বিরুদ্ধে সমালোচনা অধিকতর জোরালো হয় ২০১৮ সালে টেকনাফে পৌর কাউন্সিলর ও স্থানীয় যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো: একরামুল হকের নিহত হওয়ার ঘটনায়। সেই হত্যাকাণ্ডের প্রাক্কালে অডিও রেকর্ড প্রকাশিত হওয়ার পর কেবল সচেতন মহল নয়, সারা দেশের মানুষ র্যাবের ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এই ঘটনা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রচারণা পায়। মানুষের দৃষ্টিতে র্যাব এবং ক্রসফারায় সমার্থক হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে। এদিকে ‘ক্রসফায়ার’-এর নামে কেবল খুন নয়- ঘুষ, চাঁদাবাজি এবং অর্থের বিনিময়ে অন্যের হয়ে জমি দখল করার মতো নানা অভিযোগও দানা বাঁধতে থাকে র্যাবের বিরুদ্ধে।
এ অবস্থায় অনেকটা আকস্মিকভাবে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আমেরিকার দিক থেকে র্যাব এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে। সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হয়। প্রসঙ্গত র্যাবের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পথও বাতলে দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস ২০২২ সালে বলেছিলেন, র্যাবের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হলে মানবাধিকার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে, র্যাব ও এর কিছু কর্মকর্তার ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় না নিয়ে হাসিনা সরকার লোকদেখানো দেন-দরবার করেছে। পাশাপাশি বলেছে, অনেক বেফজুল কথাবার্তা। এমনকি নিষেধাজ্ঞার জন্য তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতা বিএনপিকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন। শুধু তাই নয়, আমেরিকার স্যাংশন খাওয়া র্যাবের দুই ডিজি বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পুলিশের আইজি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এটি ছিল প্রকারান্তরে আমেরিকাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করা। চপেটাঘাত করার ধৃষ্টতাও বলা যায়। সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে- সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাম্য মোড়লের মতো বাগাড়ম্বর করতেও ছাড়েননি। তিনি বলেছেন, ‘প্রথম প্রথম অনেকে ঘাবড়ে গিয়েছিল। আমি বলেছি, ঘাবড়ানোর কিছু নেই। স্যাংশন কখনো একতরফা হয় না। দরকার হলে আমরাও স্যাংশন দিতে পারি, সে অধিকারও আমাদের আছে।’
কিন্তু শেখ হাসিনা আসলে কী পারেন তা প্রমাণ করেছেন পদত্যাগ করে ৪৫ মিনিটের নোটিশে দেশ ছেড়ে পলায়নের মধ্য দিয়ে। তবে একটানা ক্ষমতা দখলে রেখে তিনি অনেক কিছুর সর্বনাশ করে গেছেন। যার মধ্যে আছে র্যাবও। র্যাবের পক্ষ থেকে সাধারণভাবে বলা হয়, জমিজমা বা টাকা-পয়সা সংক্রান্ত এবং ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কোনো সমস্যার বিষয়ে অভিযোগ র্যাব গ্রহণ করে না। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে র্যাবকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত এই আহ্বানে কতটা সাড়া মিলেছে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবে কোনো সংশয় নেই, নীতিনির্ধারণী বিষয়াদি এবং র্যাবের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ছিল। আর অবারিত এই অপরাধ করার সুযোগ স্পষ্টই আইনে বিদ্যমান।
আইনে র্যাবের দায়িত্ব হিসেবে ছয়টি বিষয়ের উল্লেখ আছে : ১. অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক এবং এ জাতীয় অন্যান্য বস্তু উদ্ধার। ২. অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার। ৩. আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা দান। ৪. সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। ৫. সরকার নির্দেশিত যেকোনো অপরাধের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা এবং ৬. সরকার নির্দেশিত যেকোনো জাতীয় দায়িত্ব পালন। সহজেই বোধগম্য, ৫ ও ৬ নম্বর দায়িত্বের আওতায়ই র্যাবকে দানব করে তোলার আইনগত সুযোগ দেয়া হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এই দুই ধারা অপসারণ করলে র্যাবকে ‘যেমন ইচ্ছা তেমন’ ব্যবহার করার আইনগত সুযোগ অনেকটাই সীমিত হয়ে যাবে। তবে কেবল আইন নয়, সরকার কার দ্বারা পরিচালিত হয় তাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর উদাহরণ হচ্ছে বর্তমান র্যাব। জনধারণা ধারণ করে- র্যাব প্রসঙ্গে ২০০৬ সালে হুমায়ূন আহমেদ তার উপন্যাস ‘হলুদ হিমু কালো র্যাব’-এ লিখেছিলেন, ‘অপরাধ করেছেন কী করেন নাই এসব বিবেচনা করবে না র্যাব। ধরা খাওয়া মানে ঢিসুম ঢিসুম। ক্রসফায়ার। আল্লাহ খোদার নাম নেন হিমু ভাই। দোয়া ইউনূস পড়তে পড়তে যান।’ সেই র্যাব প্রসঙ্গেই অতিসম্প্রতি ভারতের প্রভাবশালী একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম- ‘হাসিনার আমলের হেলিকপ্টার জনতার ওপর গুলিবৃষ্টি করত, ইউনূসের হেলিকপ্টার দুর্গতদের প্রাণ বাঁচাচ্ছে।’ মোদ্দা কথা হচ্ছে, র্যাব আইনের ৫ ও ৬ নং ধারা অপসারণ যেমন প্রয়োজন, তেমনি গুরুপূর্ণ হচ্ছে ক্ষমতাসীন সরকারের ধরনও। আশার কথা হচ্ছে, অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য র্যাব প্রসঙ্গে দেশী ও অন্তর্র্বতীকালীন সংস্থাগুলো অভিযোগ-সুপারিশ গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সরকার বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এই প্রতিবেদন এবং র্যাব পরিচালনার ধরন হয়তো সন্তুষ্ট করতে পারবে দেশী-বিদেশী সংস্থাগুলোকে। তা না হলে কিন্তু বিপদ। মহাবিপদও বলা চলে! অন্য দিকে র্যাবকে অনেকটা ঘোমটা পরিয়ে রাখার চলমান ধারায় দেশে আইনশৃঙ্খলার ভয়ঙ্কর অবনতি হতে পারে।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক
দৈনিক নয়াদিগন্তে প্রকাশিত, ২৪ অক্টোবর ২০২৪। শিলোনাম, “
দখিনের সময় ডেস্ক:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিষ্ঠিত সূচনা ফাউন্ডেশনের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সূচনা ফাউন্ডেশনের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
লেবাননে হিজবুল্লাহর হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তায়ার নামক অঞ্চলের আল-বায়াদায় ইসরায়েলি ট্যাংক লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি মিসাইল ছোড়ে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সৈয়দ আলী আকনে (১০৪) নামের এক শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সৈয়দ আলী পিরোজপুরের ইন্দুরকানী...
দখিনের সময় ডেস্ক:
নারী এবং পুরুষ উভয়েই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে, পুরুষের স্তন ক্যান্সার অনেকাংশে বিরল। নারীদের মধ্যে প্রতি ৪ জন ক্যান্সার আক্রান্তের অন্তত...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিষ্ঠিত সূচনা ফাউন্ডেশনের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সূচনা ফাউন্ডেশনের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
লেবাননে হিজবুল্লাহর হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তায়ার নামক অঞ্চলের আল-বায়াদায় ইসরায়েলি ট্যাংক লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি মিসাইল ছোড়ে...
দখিনের সময় ডেস্ক:
ঐতিহ্যবাহী বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মুনির হোসেনের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর আজকের এই দিনে দুনিয়ার মায়া কাটিয়ে...
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.