Home বিশেষ প্রতিবেদন যৌনহয়রানির স্বীকার হয় প্রায় প্রতিটা মেয়ে ই

যৌনহয়রানির স্বীকার হয় প্রায় প্রতিটা মেয়ে ই

কানিজ নুসরাত :

পঞ্চম শ্রেণী থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ওঠা ছাত্রী সুমি যার চোখে রঙ্গীন স্বপ্ন, পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাড়াবে। তারই বাসার পাশে থাকা একদল বখাটের নজরে পরে সে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া অবস্থাতেই। দিনে দিনে ক্রমশ বড়তে থাকে অশ্লীলতার মাত্রা । সুমি জানায় তার পরিবার কে। যখন সুমির বাবা প্রতিবাদ করতে যায় তাকেও অপমান অপদস্ত হতে হয়।কেননা বখাটের দলেই রয়েছে প্রবাবশালী ব্যাক্তিদের সন্তান । ভয়ে সবাই চুপকরে থাকে । মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী অবস্থাতেই জীবনকে  রঙ্গীন করে সাজানোর রং তুলির পরিবর্তে  হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় হাতা খুন্তি ।

বিভিন্ন ভাবে উত্তক্তের স্বীকার ১৫ বছর বয়সের মেয়ে শিফা । একা স্কুলে যাওয়া কিংবা সাইকেল চালানোর সময় শুনতে হয় নোংরা অশ্লিল কথা। বাসায় এসে বাবা- মায়ের কাছে খুলে বলতেও পারে না। তাহলে হয়ত শখের সাইকেল চালানোই বন্ধকরে দিবে বাবা- মা কিংবা স্কুলে যাওয়া হবে না আর । অথবা সুমির মতো হয়ত বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় । ভয়ে দ্বীধায় চুপ করে শুনে যায় প্রতিনিয়ত। আধুনিকতার এ যুগে দাড়িয়েও  আমাদের দেশের অনেক মেয়ে ই পারেনা মনের প্রশান্তিতে বাহিরে একা চলাফেরা করতে। অনেক ক্ষেত্রে বন্ধু-বান্ধব, আত্বীয়-পরিজন এমন কি পরিবারের সদস্যদের সাথে চললেও স্বীকার হতে হয় ইভটিজিং এর। ইভটিজিং শব্দটা মনে হয় কিছুটা হালকা শোনায়। তাই এর বাংলা প্রতিশব্দ বেছে নেয়া হয়েছে ‘যৌন হয়রানি’। শব্দের উন্নয়ন ঘটলেও বস্তবতার উন্নয়ন খুব একটা ঘটেনি। এখনও আমাদের দেশে অসংখ্য যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। আইন এর প্রয়োগের ফাঁক গলে বের হয়ে যেতে অভ্যস্ত অপরাধীরা এই ভয়ঙ্কর সামাজিক অপরাধ করে চলছে প্রতিনিয়ত।

ইভটিজিং বা যৌন হয়রানিকে প্রতিরোধ করতে ১৩ জুন পালন করা হয় ‘নারী উত্যক্তকরণ প্রতিরোধ দিবস’। এই দিবস পালনের উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে আছে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নারীর স্বাভাবিক চলাচল, জীবনযাপন অবাধ, সমুন্নত করা ও তাদের অধিকার এবং সন্মান বজায় রাখা। যৌন হয়রানির শিকার নারীদের মধ্যে মেয়ে শিশুর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। দেশে ১০ থেকে ১৮ বছর বযসের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মেয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়। এরমধ্যে ৩৬ শতাংশ মেয়েকে উত্যক্ত করা হয় তাদের স্কুলের সামনে। আর দেশের প্রায় প্রতিটি মেয়েই কোনো না কোনোভাবে জীবনের কোনো এক সময় যৌন হয়রানির শিকার হয়।

বিভিন্ন সামাজিক সচেতনতা মূলক প্রতিষ্ঠান ইভটিজিং তথা যৌন হয়রানীর প্রতিবাদে কাজ করলেও তা সময়ের তুলনায় সামান্যই। দুঃখজনক হলে সত্য যে বিশ্বব্যাপি ১৩ জুনকে নারী উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধ দিবস পালন করা হলেও আমাদের দেশে তেমন কোনো কর্মসূচী  দেখা যায় না। সুমি কিংবা শিফাদের মতো স্বপ্ন মুছে যাওয়ার আগেই আমদের সচেতনতা পারে নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথ দেখাতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments