দখিনের সময ডেস্ক:
সরকারি বিধিনিষেধের কারণে চলাচল সীমিত করা হয়েছে। এটি ‘সর্বাত্মক’ পর্যায়ে উপনীত হতে পারে ১ জুলাই থেকে। এ অবস্থায় উপার্জনের পথ সীমিত হয়ে যেতে পারে। এমন আশঙ্কায় ঢাকা ছাড়তে মানুষের চাপ বেড়েছে। সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আজ সোমবার(২৮ জুন)থেকে সারাদেশে বিধিনিষেধ। কেউ কেউ মনে করতে শুরু করেছেন, এই লকডাউন ঈদ পর্যন্ত গড়াতে পারে। সে জন্য চলছে মানুষের ঢাকা ছাড়ার হিড়িক। তা পরিনত হয়েছে করোনা ছড়ানো ও আক্রান্ত হবার তান্ডব!
ঢাকা ছেড়ে মানুষ দলে দলে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছেন। যান চলাচল বন্ধ থাকলেও কোনো সমস্যা মনে করছে না। যে কোনো মূল্যে বাড়ি ফিরতে হবে। টঙ্গী থেকে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ কিংবা নরসিংদী অঞ্চলের মানুষ ঢাকা খালি করছে। সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী এলাকা দিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চাঁদপুর অঞ্চলের মানুষ। গাবতলী দিয়ে ঢাকা ছাড়ছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ।
বেশির ভাগের একই মন্তব্য- জীবিকার তাগিদে তারা বাড়ি চলে যাচ্ছেন। এই শহরে তারা থাকেন কেবলই বাঁচার অবলম্বন হিসেবে। কঠোর লকডাউনের আশঙ্কা থেকে তারা বাধ্য হচ্ছেন ঢাকা ছাড়তে। বৃহস্পতিবার থেকে কঠোর লকডাউন হতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা মনে করছেন, আগেভাগে বাড়ি না ফিরতে পারলে এই শহরে আপাতত জীবন-জীবিকা দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। একে তো দীর্ঘ যানজট, তার ওপর সেই কষ্ট দূরে ফেলে রেখে হেঁটেই পথ পাড়ি দিচ্ছেন তারা।
সড়কে মানুষের চাপ অনেক বেশি। সবকিছু বন্ধ হওয়ার আগে মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যেতে চাইছে। এ কারণেই সড়কে প্রচুর মানুষ। অন্যদিনের তুলনায় গতকাল রবিবার(২৭ জুন) গ্রামে ফেরা মানুষের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। বিশেষত প্রথম তিন দিন ‘লকডাউন’ শিথিল করায় এ হার যেন আরও বেড়েছে।
ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার ছাড়াও পরিবহন হিসেবে এ রুটে চলাচল করছে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, এ এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ও সিএনজির সংখ্যাও কম নয়। তবে এ মাধ্যমে ভাড়া বেশ বেশি। জনপ্রতি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। নৌরুটের প্রতিটি ফেরিতেই অল্পসংখ্যক যানবাহন সঙ্গে যাত্রীদের ভিড়। রাজধানীর কর্মস্থল ছেড়ে দক্ষিণবঙ্গগামী মানুষের ঢল নামে গতকাল রোববার(২৭ জুন) মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। শনিবার দিবাগত রাত ও রবিবার থেকে এ ঘাট হয়ে হাজার হাজার যাত্রীর ভিড় দেখা গেছে।
কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় গতকাল সকাল থেকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রী চাপ শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ আরও বাড়ে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া দিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে এসে ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দেন। শুধু রাজধানী ঢাকা থেকে আসা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রীই নন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রাজধানীগামী যাত্রীদেরও চাপ দেখা গেছে। যাত্রীরা প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যানে করে ভেঙে ভেঙে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।