কাজী হাফিজ
“বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।” জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা পংক্তিটি সর্বকালেই প্রমাণিত হয়ে এসেছে৷ তার একটি বড় উদাহরণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর পৌঁছে দেয়া, চিকিৎসক ও সেবিকা হিসেবে কাজ করা ছাড়াও অস্ত্র হাতে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন নারীরা৷
সেই বীর নারীদের একজন বরিশাল মহানগরীর মোসাঃ হাজেরা বেগম। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পেলেন মুক্তিযুদ্ধের ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাব। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের সামাজিক স্বীকৃতি ও সম্মান প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু তাদের দিয়েছিলেন ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধি।
হাজেরা বেগমের বর্তমান বয়স ৭০ বছর , ১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ১৮ বছর। হাজেরা বেগম ৫ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধর সময় নিজ বাড়ি থেকে বোনের শশুর বাড়ি বরিশাল যাবার পথে বাবুগঞ্জ রহমতপুর ক্যাম্পের সন্নিকটে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক শারীরিক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতিত হয় হাজেরা বেগম। দুর্বিষহ সেই স্মৃতির কথা মনে করতেই কেঁদে ফেললেন হাজেরা বেগম। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল বিস্কুট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তাদের ৩ ছেলে ১ মেয়ে।
গতকাল রবিবার (২৭ জুন) জেলা প্রশাসক বরিশাল এর সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে তার হাতে ৮২ হাজার টাকার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা দেন জেলা প্রশাসক জসীমউদ্দিন হায়দার । জেলা প্রশাসক জসীমউদ্দিন হায়দার তার ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্ট থেকে স্টাটাসের মাধ্যমে জানান, “সম্মানি ভাতা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন হাজেরা বেগম। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও রয়েছে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ অংশগ্রহণ। নতুন প্রজন্মের কাছে নারীদের এই অসামান্য কীর্তিগাথা তুলে ধরার এখনই সময়। হাজেরা বেগমের মতো মহীয়সী নারীদের আমরা কখনই ভুলবোনা।বীরাঙ্গনাদের পুনর্বাসনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। “