Home বিশেষ প্রতিবেদন মোশতাকের ২৩ মন্ত্রীর ২১ আগের কেবিনেটের: হত্যা করা হয় ৫ জনকে

মোশতাকের ২৩ মন্ত্রীর ২১ আগের কেবিনেটের: হত্যা করা হয় ৫ জনকে

আলম রায়হান‍ ॥
খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভার ২৩ সদস্যের মধ্যে ২১ জনই ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন বাকশালের কেবিনেট সদস্য। তাদের দফতরও খুব একটা পরিবর্তন করা হয়নি। প্রায় সবাইকে আগের দফতর দেওয়া হয়েছিল। এদিকে জীবন নাশের হুমকী সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার অনেকেই খুনী মোশকাকের সঙ্গে হাত মিলাননি। মোশতাকের পাশাপাশি বাকশাল সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য তাহের উদ্দিন ঠাকুরও সম্পৃক্ত ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের সাথে।
যারা মোশতাকের মন্ত্রিসভায যোগ দিয়েছেন তারা তা চাপের মুখেই করেছেন বলে বলা হয়েছে  বিভিন্ন সময়ে। অবশ্য দু-একজন স্বেচ্ছায় খুনীর মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন বলেও পরে প্রমানিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মোশতাক ক্ষমতা গ্রহণের সময় প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করা হয়। ফলে তার সরকারে কোনও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৮ সালের ২৯ জুন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত ছিল।
খোন্দকার মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলাতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে কারাগারে। এদের সাথে হত্যা করা বাকশাল পূর্ববর্তী সরকারের অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকেও। এদিকে জাতির পিতার ক্যাবিনেটের একজনকে হত্যা করা হয়েছে ১৫ রাতেই। মোশতাকের সঙ্গে যোগ না দেবার কারণে জীবনে বেঁচে জেল-জুলুম ভোগ করতে হয়েছে।
বাকশালের মন্ত্রিসভার ২৯ সদস্যের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ শক্তি বিষয়ক মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা হত্যা করে। সেদিন তার বাড়িতে নিহত হন ছয়জন। সেদিন মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত ছাড়াও তার সন্তান ও স্বজনরা নিহত হন। এদের মধ্যে তাঁর বড় ছেলে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর শিশুপুত্র সুকান্ত বাবুও ছিলো।
মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যের মধ্যে জাতীয় তিন নেতা উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলী, শিল্পমন্ত্রী এইচ এম কামারুজ্জামান, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, তথ্য ও বেতার মন্ত্রী এম কোরবান আলী এবং ওই সময় বিদেশে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দেননি। প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মোমিন তালুকদার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দেননি। এদের  মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও কামারুজ্জামানকে মোশতাকের ক্ষমতাচ্যুতির দুই দিন আগে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখায় হত্যা করা হয়। তাদের সঙ্গে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতার অন্যতম এবং বাকশাল পূর্ববর্তী সরকারের অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকেও।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশের রাষ্ট্রপতির পবিত্র আসন কলংকিত করার ৮৩ দিনের মাথায় ৫ নভেম্বর ক্ষমতাচ্যুত হয় মোশতাক সরকার। পরে ৭ নভেম্বর আরেকটি পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতায় আসেন জিয়াউর রহমান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

প্রতি মিনিটে গুগলের আয় কত জানেন?

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো কিছু গুগলে সার্চ করছেন। আপনি ফ্রিতে তো গুগল ব্যবহার করেন কিন্তু জানেন...

অ্যাপলের নতুন আইপ্যাড, ম্যাজিক কি-বোর্ড ও পেনসিল প্রো, দাম কত?

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে ব্যবহারকারীরা অ্যাপল ইভেন্টের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এবার সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঙ্গলবার ‘লেট লুজ’ ইভেন্টে একাধিক নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ হয়েছে। এর...

নতুন যে চমক নিয়ে আসছে ইনস্টাগ্রাম 

দখিনের সময় ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুকের বাইরে আলাদা জনপ্রিয়তা তৈরি করেছে ইনস্টাগ্রাম। ফেসবুকের পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামেও নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের নানা খুঁটিনাটি তারা...

উৎসবমুখর বেসিস নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা

দখিনের সময় ডেস্ক: আনন্দমুখর এবং অংশগ্রহণমূলকভাবে সম্পন্ন হলো দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) ২০২৪-২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহী...

Recent Comments