গৌরনদীর স্কুল ছাত্রী লামিয়ার ঠেকালেন ইউএনও

গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি

শুক্রবার দুপুরে এস.এস,সি পরীক্ষার্থী স্কুল ছাত্রী বরিশালের গৌরনদীর কিশোরী লামিয়া আক্তার (১৬)’র বাল্যবিয়ে ঠেকালেন ইউএনও। এ সময় পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত ওই কিশোরী’র বাবার কাছ থেকে কিশোরী মেয়েকে বিয়ে দেবেন না মর্মে মুচলেকা আদায়সহ তাকে নগদ অর্থ জরিমানা করে ছেড়ে দেয়।

জানাগেছে, উপজেলার বাটাজোড়া ইউনিয়নের সিংগা গ্রামের মোঃ নুরুল হক হাওলাদার তার ১৬ বছর ৮ মাস ২৮ দিন বয়সের কিশোরী মেয়ে উপজেলার চন্দ্রহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এস.এস,সি পরীক্ষার্থী স্কুলছাত্রী লামিয়া আক্তারকে পার্শ্ববর্তি উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা গ্রামের মোঃ খলিলুর রহমান খলিফার ছেলে মোঃ এনামুল খলিফা (২৫)’র সাথে বিয়ে দিচ্ছিলেন। বর ও কনে পক্ষের সম্মতিতে শুক্রবার বাদজুমা লামিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়ার ক্ষন নির্ধারন করা হয়।

দেশব্যাপী লকডাউন চলার মধ্যেও মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে লামিয়ার বাবা মোঃ নুরুল হক হাওলাদার তার আতœীয় স্বজন ও এলাকাবাসীকে দাওয়াত দেন মেয়ের ওই বিয়ের ভোজ অনুষ্ঠানে। বিয়ের রান্না বান্নাও হয় মহা ধুমধামে। শুক্রবার দুপুরে ওই বাড়িতে জরো হতে থাকেন তাদের আতœীয় স্বজন ও এলাকাবাসীরা। দুপুর ১টার দিকে বাল্যবিয়ের এ খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ওই বাড়িতে ছুটে যান গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস। ইউএনও’র আগমনের খবর পেয়ে দ্রুত বিয়ের সকল আয়োজন সরিয়ে ফেলে বাড়ির লোকজন। বিয়ের প্যান্ডেল ভেঙ্গে ফেলে, টানানো সামিয়ানা খুলে ফেলে, গেট খুলে সরিয়ে নেয়। এমনকি খাবার দাবারও অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। এ খবর বর পক্ষের কাছে পৌছলে ৭০জন বরযাত্রী’র বহর নিয়ে রওনা হয়ে আসা বরসহ ররপক্ষের লোকজন মাঝ পথ থেকে নিজেদের এলাকায় ফিরে যায়। ভ্রাম্যমান আদালত ঘটনাস্থলে পৌছে লামিয়ার বাবা-মাকে আটক করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, লামিয়ার বাবা ওই বিয়ের অনুষ্ঠান হবেনা এবং মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিবেন না মর্মে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে মুচলেকা দেয়। স্থানীদের অনুরোধে ভ্রাম্যমান আদালত তখন লামিয়ার বাবা ও মাকে ছেড়ে দেয়। তবে দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালে সরকারি আদেশ অমান্য করে লোক সমাগম ঘটিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করার অপরাধে তার আদালত লামিয়ার বাবাকে (২,০০০/-) দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছে। গৌরনদী মডেল থানার এস.আই মোঃ শাহজাহান এর নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি টিম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় তাকে সার্বিক সহতায় করে। আমাদের তৎপরতায় বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে মুক্তিপেয়ে কিশোরী স্কুল ছাত্রী লামিয়াও এখন বেশ খুশি।