দখিনের সময় ডেক্স:
চীনের গুয়ানঝউ শহরের একটি পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের মলমূত্র থেকেও ছড়াতে পারে করোনা। চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের গবেষকরা বলছেন, টয়লেট ফ্ল্যাশ থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। আগে মনে করা হতো, মলমূত্র থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায় না। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, মলমূত্রের মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়াতে পারে। সার্স ভাইরাসের সংক্রমণের সময়ও মলমূত্রের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছিল।
গুয়ানঝউ শহরের একটি শৌচাগার দীর্ঘদিন ধরেই কেউ ব্যবহার না করলেও ওই শৌচাগারের নিচের ফ্লোরেই একটি ফ্ল্যাটে পাঁচজন বাসিন্দার কোভিড পজিটিভ হয়েছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, রোগীদের মলমূত্র থেকে ভাইরাস ছড়িয়েছে। আবাসনের পাইপের মাধ্যমে সেই ভাইরাস ওই টয়লেটে গিয়ে পৌঁছেছে বলে অনুমান।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন বাতাসের কণা বা অ্যারোসলে ভেসে থাকতে পারে। বাতাসের চাপে যদি সেই ভাইরাস ড্রপলেট কোনও সারফেস বা পদার্থের উপরে পড়ে; তাহলে সেখানেও ঘন হয়ে জমাট বেঁধে থাকে। তৈরি হয় ‘ভাইরাস-ক্লাউড’। টয়লেটে এই ভাইরাস-ক্লাউড তৈরির সম্ভাবনা বেশি।
টয়লেটে ফ্ল্যাশ করলে পানির যে ঘূর্ণি তৈরি হয়, তার মাধ্যমেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এমনও দেখা গেছে, টয়লেটের ফ্ল্যাশ থেকে প্রায় তিন ফুট উচ্চতায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। অথবা টয়লেটের নানা জায়গায় ভাইরাসের-ক্লাউড তৈরি হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, কোভিড রোগীরা যে শৌচাগার ব্যবহার করছেন সেখানে এই ধরনের ভাইরাস-ক্লাউড তৈরির ঝুঁকি বেশি। চিন্তার কারণ হলো, ভাইরাসের স্ট্রেন জলকণায় ভর করে ড্রেন পাইপ বেয়ে ওঠানামা করতে পারছে। চিনের গুয়াংঝউ শহরে তেমনটাই দেখা গেছে।
সার্স ভাইরাসের সংক্রমণের সময়েও মলমূত্রের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছিল। গবেষকরা বলছেন, হংকংয়ের একটি আবাসনের পাইপের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াতে দেখা গিয়েছিল। যার কারণে ওই আবাসনের প্রায় ৩২৯ জন ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল ৪২ জনের। সার্স-কভ-২ হল সার্স ভাইরাসেরই প্রজাতি। যা আরও বেশি সংক্রামক।