দখিনের সময় ডেক্স:
ভারতে এখন করোনা ভাইরাসের হটস্পট। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনা শনাক্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। একদিনে শনাক্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ৮২ হাজার ৮৬০ জনে করোনা রোগি ।ভারতে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত রোগির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৮ লাখ। এরমধ্যে কেবল আগস্ট মাসেই শনাক্ত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ। নতুন করে এক হাজার ২৬ জনসহ এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৭ হাজারের বেশি। মহারাষ্ট্রকে করোনার কেন্দ্র হিসেবে ধরা হলেও সম্প্রতি উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খান্ড, ছত্তিশগড় ও ওড়িশ্যায় করোনার প্রকোপ বেড়েছে। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে ব্রাজিলের পরেই তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৬১ লাখ ৭৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী মৃত্যু হয়েছে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৭ জন। এছাড়া করোনা আক্রান্ত হওয়ার সারা বিশ্বে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বে করোনা শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬২ লক্ষ ৯০ হাজারের বেশি মানুষ। আর মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬৪ জনের। আর আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ লাখ এক হাজারের বেশি মানুষ। এবং এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৯৯ জন। এক মাস লকডাউন থাকার পর অক্টোবর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু এবং সীমান্ত খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে পেরু।
ভারতের অর্থনীতি সঙ্কুচিত
খোদ ভারত সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় লকডাউন শুরুর পর তিন মাসে জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদন সঙ্কুচিত হয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। উৎপাদন, নির্মাণ, হোটেল, পরিবহন, আবাসনসহ অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই সঙ্কোচন দেখা গেছে। এপ্রিল থেকে জুন — এই তিন মাসের জিডিপি-র সরকারি হিসাবে দেখা যাচ্ছে কৃষি ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রেই সঙ্কোচন হয়েছে অর্থনীতির। অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিত বসুর মতে, ‘ভারতীয় অর্থনীতির একেবারে বারোটা বেজে গেছে।’
লকডাউনের কারণ ভারতের অর্থনীতি প্রায় স্তব্ধ হয়ে থেকেছে কোভিড মহামারির সময়কালে – শুধু খাদ্যপণ্য এবং ওষুধ উৎপাদন ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়া ওই সময়কালে সব কিছুই বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেজন্য একমাত্র কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩.৪ %। কিন্তু শুধুই কি লকডাউনের জন্য অর্থনীতির এই রেকর্ড সঙ্কোচন? অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিত বসু বলেছেন, লকডাউনের আগে থেকেই ক্রমাগত সঙ্কুচিত হচ্ছিল ভারতের অর্থনীতি, লকডাউন শুধু ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ দিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিত বসুর মতে, গত দুবছর ধরে প্রতিটা ত্রৈমাসিকেই ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ক্রমাগত কমেছে। বিনিয়োগ যেমন কমেছে, তেমনই কমেছে রপ্তানি। অর্থনীতির মূল অভিমুখটাই ছিল অনেকদিন ধরেই নিম্নগামী। তারওপরে এই লকডাউন হয়েছে – পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে কড়া লকডাউন হয়েছে। তার প্রভাব কোভিড সংক্রমিতর সংখ্যায় খুব একটা দেখিনি – কিন্তু অর্থনীতির একেবারে যাকে বলে বারোটা বেজে গেছে।