Home শীর্ষ খবর বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ, ৭০ শতাংশই দেয় নারীরা

বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ, ৭০ শতাংশই দেয় নারীরা

বিশেষ প্রতিনিধি:

মহামারীর মতো বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ। বিবাহবিচ্ছেদের প্রবণতা উদ্বেগজনক। জরিপে দেখা গেছে, প্রতি ঘণ্টায় ভাঙছে একটি সংসার। এক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ ডিভোর্স দিচ্ছেন নারীরা, ৩০ শতাংশ দিচ্ছেন পুরুষরা। তবে এটা কেবল শহরের হিসাব। করোনার ধাক্কায় আয় সংকুচিত হয়েছে বহু মানুষের। তবে সংকটকালের এই অভিঘাত এখানেই থেমে নেই।

রাজধানী ঢাকায়ই দিনে ৩৮টি বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি মাসে ৯৯টি বিচ্ছেদ বেড়েছে। স্বার্থের সংঘাত, অর্থের অভাব, পর নর-নারীতে আসক্ত ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়া, যৌতুক, মতের অমিল আর আত্মসম্মান মোকাবিলায় চূড়ান্ত হচ্ছে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন নারীরাই। নারীরা দিচ্ছেন ৭০ শতাংশ ডিভোর্স।

ঢাকার দুই সিটির তথ্য বলছে, ৭৫ শতাংশ ডিভোর্সই দিচ্ছেন নারী। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে ৪ হাজার ৫৬৫টি বিচ্ছেদের আবেদন জমা পড়েছে, অর্থাত্ প্রতি মাসে ১ হাজার ১৪১টি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪২। এই হিসাবে চলতি বছর প্রতি মাসে বেড়েছে ৯৯টি বিচ্ছেদ। গত বছরও নারীদের তরফে ডিভোর্স বেশি দেওয়া হয়েছে, যা ৭০ শতাংশ।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, শিক্ষিত নারীদের নিয়ে সংসার পরিচালনা করতে এখনো প্রস্তুত নন ছেলেরা। তারা শিক্ষিত মেয়ের সঙ্গে সংসার করতে চান, কিন্তু শিক্ষিত মেয়ের চাকরি জীবন, তার ব্যক্তি স্বাধীনতা, তাকে কিছু বিষয়ে সহযোগিতা করা- এসবে পূর্ণ স্বাধীনতা বা সহযোগিতা করতে নারাজ স্বামীরা। ফলে একটি শিক্ষিত মেয়ের যখন আত্মসম্মানে আঘাত আসে, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন ডিভোর্সের। যেহেতু সমঝোতা কেবল নারীকেই করতে হয়, তাই মেয়েটি বেছে নেন একলা জীবন। করোনায় অর্থনৈতিক সংকট, মানসিক ও সামাজিক চাপের কারণে কলহ থেকে বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে।

এদিকে সমাজের ছেলেটি শিক্ষিত হলেও তার সঠিক সামাজিকীকরণের কারণে তিনি গতানুগতিক পুরোনো সংসারের ধ্যান-ধারণা লালন করেন। চান, তাদের মা-মাসি বা দাদি-নানিরা যেভাবে শ্বশুরবাড়ির এবং স্বামীর সব সিদ্ধান্তে সায় দিয়ে সংসারে টিকে থাকতেন, ঠিক তেমনিভাবে এ প্রজন্মের মেয়েটির কাছেও প্রত্যাশা করেন স্বামী পুরুষটি। কিন্তু বর্তমান সমাজের শিক্ষিত, কর্মজীবী নারীর পক্ষে সেই বউ হয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। শুরু হয় সংসারে অশান্তি। ফলে অন্যের বাড়িতে চাপের মুখে কিংবা গুমট পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে মেয়েটি সিদ্ধান্ত নেন বিবাহবিচ্ছেদের।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ১৭ শতাংশ বিবাহবিচ্ছেদ বেড়েছে। মহামারিকালে এ সংখ্যা আরো বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন। গত বছর রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে ১২ হাজার ৫১৩টি ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৪৮১টি আবেদন করেছিলেন নারী, বাকি ৪ হাজার ৩২টি বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন পুরুষ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নারী এবং পুরুষ উভয়েই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে

দখিনের সময় ডেস্ক: নারী এবং পুরুষ উভয়েই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে, পুরুষের স্তন ক্যান্সার অনেকাংশে বিরল। নারীদের মধ্যে প্রতি ৪ জন ক্যান্সার আক্রান্তের অন্তত...

পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত

দখিনের সময় ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিষ্ঠিত সূচনা ফাউন্ডেশনের সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সূচনা ফাউন্ডেশনের...

হিজবুল্লাহর হামলায় পিছু হটলো ইসরায়েলি বাহিনী

দখিনের সময় ডেস্ক: লেবাননে হিজবুল্লাহর হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তায়ার নামক অঞ্চলের আল-বায়াদায় ইসরায়েলি ট্যাংক লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি মিসাইল ছোড়ে...

সাংবাদিক মুনির হোসেনের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

দখিনের সময় ডেস্ক:  ঐতিহ্যবাহী বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মুনির হোসেনের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর আজকের এই দিনে দুনিয়ার মায়া কাটিয়ে...

Recent Comments