দখিনের সময় ডেস্ক:
যৌনতার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রিপাবলিক অফ কঙ্গোর একাধিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে। ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কঙ্গোয় ইবোলা মহামারি চেহারা নিয়েছিল। সে সময় বহু কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছিল ইবোলার সঙ্গে লড়াই করার জন্য। একাধিক নারী কর্মীকে যৌনতার বিনিময়ে চাকরির শর্ত দিয়েছিল সেখানকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীরা। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। অভিযোগ আগেই এসেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে। তারই ভিত্তিতে একটি স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সম্প্রতি তাদের রিপোর্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হাতে এসেছে। ৩৫ পাতার রিপোর্টে একাধিক অভিযোগের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। অন্তত ৮০টি এমন অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। অভিযুক্ত প্রায় ২০ জন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্মী। তাদের অধিকাংশই কঙ্গোর নাগরিক। তবে বিদেশিও আছে। অন্তত ৩০ জন নারী সরাসরি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অন্তত ৫১ জন নারীবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়াও ইউনিসেফ, অক্সফ্যামের মতো সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছেন।
আক্রান্ত নারীদের অভিযোগ, ইবোলার সময় বেশ কিছু চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছিল। ইবোলার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য সাময়িক সময়ের শর্তে বহু স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অভিযুক্ত কর্মীরা সে সময় বহু চাকরিপ্রার্থী নারীর ইন্টারভিউ নেয়। তাদেরকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়, বসের সঙ্গে যৌনতায় তাদের আপত্তি আছে কি না। যৌন সংসর্গ করলে পদোন্নতির কথাও বলা হয়। আক্রান্ত নারীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, কাজের প্রয়োজনে তারা রাজি হয়েছিলেন। সেই সুযোগে তাদের ধর্ষণও করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, যে ব্যক্তিদের নামে অভিযোগ, তাদের অধিকাংশই টেম্পোরারি স্টাফ। অর্থাৎ, তাদেরকেও ইবোলা মোকাবিলা করার জন্য দ্রুত নিয়োগ করা হয়েছিল। সকলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশিত হয়নি। তবে কঙ্গোর ঘটনা একটি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলেও একইরকম ঘটনা ঘটছে না তো?
ছবি: বিবিসি’র সৌজন্যে।