Home শীর্ষ খবর খাদ্যে বিষ, বাড়ছে ক্যানসার-কিডনি-লিভারের রোগ

খাদ্যে বিষ, বাড়ছে ক্যানসার-কিডনি-লিভারের রোগ

দখিনের সময় ডেস্ক:

খাদ্যের বিষে বাড়ছে বাড়ছে ক্যানসার, কিডনি ও লিভারের রোগ। দূষিত খাবার ক্রমাগত গ্রহণের কারণে অকালে মানুষ মারা যাচ্ছে। ফলে কর্মক্ষম মানুষের অভাবে প্রকারান্তরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। ফসলে কীটনাশকের ব্যাপক অপপ্রয়োগ এবং মাত্রাতিরিক্ত সার ব্যবহারে খাদ্য দূষিত হচ্ছে। একই সঙ্গে অনেক মজুতদার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা খাদ্যে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক, যেমন—ফরমালিন, কার্বাইড, ইথোফেন, কীটনাশক, কাপড়ের রং মেশাচ্ছে। মেশানো হচ্ছে হরমোন ও অ্যান্টিবায়োটিক।

প্রতিদিন দেশে কমছে কৃষিজমি এবং প্রাকৃতিক পানির উৎসস্থলগুলো। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বাধ্য হয়ে অধিক শস্য ফলাতে গিয়ে জমিতে ব্যবহার করছে প্রাণ সংহারী বীজ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। অতিরিক্ত কীটনাশক, আগাছানাশক কিংবা ছত্রাকনাশক মাটির অণুজীব থেকে শুরু করে শামুক-কেঁচোসহ নানা উপকারী পতঙ্গ মেরে ফেলছে। দূষিত করছে সামগ্রিক পরিবেশ। ফলে মানবস্বাস্থ্যসহ অন্যান্য প্রাণবৈচিত্র্য ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে। জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে শেষ পর্যন্ত জলাশয়ের পানিতে গিয়ে মিশছে। এতে মাছ মরে যাওয়া ছাড়াও মাছসহ জলজ প্রাণী ও জলচর পাখিদের জন্যও খাদ্যসংকট তৈরি হচ্ছে।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে নানা ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে। ফলে প্রায় সব খাদ্য ও পানীয়তেই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। মাঠ থেকে ভোক্তা পর্যন্ত খাদ্যকে কীটনাশকসহ সব প্রকার ক্ষতিকর রাসায়নিক মুক্ত রাখতে হলে, সব খাবার ও পানীয় নিয়মিত পরীক্ষা এবং এর ফলাফল জনসম্মুখে প্রকাশ করা দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গবেষণা সংস্থা গ্লোবক্যানের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে মারা যায় ৯১ হাজার ৩০০ জন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কিডনি জটিলতায় দেশে ২০১৯ সালে যত মানুষ মারা গেছে, তার প্রায় তিন গুণ মানুষ মারা গেছে ২০২০ সালে। ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২৮ হাজার ১৭ জন। আর ২০১৯ সালে মারা গেছে ১০ হাজার ৬২২ জন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যার ৪ দশমিক ৪১ শতাংশের জন্য দায়ী ট্রান্সফ্যাট।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ধরনের রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম কারণ হচ্ছে খাদ্য ও পানীয়তে বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি। ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য। একই সঙ্গে আমাদের দেশের কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণের অভাব এবং যথাযথ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে অনেক খাদ্যশস্য নষ্ট কিংবা অপচয় হচ্ছে। তারা বলছেন, জমির মাটি থেকে খাবার থালা অবধি খাদ্য নিরাপদ হওয়া জরুরি। খাবার নিরাপদ কি না, এ নিয়ে নিয়মিত খাদ্য পরীক্ষাটাও জরুরি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

আধাঘণ্টায় ৫০ হাজার ইলেকট্রিক গাড়ির অর্ডার পেল শাওমি

দখিনের সময় ডেস্ক: নিজেদের প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) বাজারে এনেছে চীনের স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় এই গাড়ি উন্মোচন করা হয়। আর...

‘স্পেস স্যুট’ ছাড়া মহাকাশে কতক্ষণ বাঁচবেন নভোচারীরা?

দখিনের সময় ডেস্ক: ভীষণ কঠিন একটি কাজ মহাকাশ ভ্রমণ। যখনই একজন মহাকাশচারী যাত্রা শুরু করেন, তার আগে তাকে অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়। পৃথিবীর বাইরের এমন...

মোবাইল ফোন চার্জের সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

দখিনের সময় ডেস্ক: মোবাইল ফোনের ব্যাটারিতে হঠাৎ বিস্ফোরণ বা আগুন ধরার কারণে প্রায়ই প্রাণহানি ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। মোবাইল চার্জে থাকাকালীন এ ধরনের ঘটনা...

গরমে পুদিনা ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা

দখিনের সময় ডেস্ক: গরমে সবার প্রাণই হাঁসফাঁস। কী করলে একটু স্বস্তি পাওয়া যাবে সেই প্রচেষ্টাই সবার। এমন গরমে শরীর ও মন ঠান্ডা রাখে এমন খাবারই...

Recent Comments