Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি ননী গোপাল হালদার একজন প্রধান শিক্ষক, যৌন হয়রানিতে ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ

ননী গোপাল হালদার একজন প্রধান শিক্ষক, যৌন হয়রানিতে ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক:

ননী গোপাল হালদারের বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের। তার বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিকৃত যৌন লালসার হাত থেকে বাঁচতে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছে শিশুরা। এই অবস্থায় অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানায়, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার স্কুলের পঞ্চম শ্রেনীর একাধিক ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন হয়রানি করে আসছেন। এর মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি পশ্চিম জিউধরা গ্রামের জনৈক ব্যক্তির পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া নাতনীকে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল যৌন হয়রানি করলে ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি তার নানা-নানীর কাছে বলে দেয়। সে আর ওই বিদ্যালয়ে যাবে না এবং জোর করে পাঠালে সে আত্মহত্যা করবে বলেও নানা-নানীকে হুমকি দেয়।

পরে গত ১১ জানুয়ারি যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে পঞ্চম শ্রেনীর ওই ছাত্রীর নানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষকের দ্বারা একাধিক ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি বেরিয়ে আসতে থাকে। পরে টাকার বিনিময়ে সমাধানের নামে ওই ছাত্রীর নানাকে অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য করে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এরপর থেকে ক্ষোভ বাড়তে থাকে প্রধান শিক্ষকের যৌন হয়রানির শিকার অন্যান্য ছাত্রীর অভিভাবকদের মধ্যে। ঘটনার পর থেকে ওই বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাদের মেয়েদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে।

প্রধান শিক্ষকের যৌন হয়রানির শিকার একাধিক ছাত্রী জানায়, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার বিভিন্ন সময় তার কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদেরকে যৌন হয়রানি করেন। একথা বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষিক ময়না রানী শিকদারকে জানালে তিনি তাদেরকে বলতেন, ‘ওতে কি হয়, স্যারতো তোমাদেরকে একটু আদর করতেই পারে।’ এ অভিযোগ শিক্ষকা ময়না রানী শিকদার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে কোন ছাত্রী কখনও অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সোহেল রানা।

শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবকরা জানান, প্রধান শিক্ষক একজন বিকৃত যৌন লালসার মানুষ। তার কাছে বিদ্যালয়ের মেয়েরা নিরাপদ নয়। এর আগে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিলেন, সেখানে এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করে জনতার হাতে মার খেয়েছেন এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে বর্তমান বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সব মিথ্যা। স্থানীয় একটি মহল তাকে হয়রানীর চেষ্টা করছিলো। যেটি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করা হয়েছে।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি দেখার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়। পরবর্তিতে বিষয়টি মিথ্যা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে আমাকে জানান ওই কর্মকর্তা। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি যে, ঘটনা সত্য। দ্রুতই সরোজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ঢাকা-চট্টগ্রামে নিয়োগ দিচ্ছে আগোরা

দখিনের সময় ডেস্ক: সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আগোরা লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি আউটলেট ইনচার্জ পদে একাধিক জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকেই...

ফোনে বিরক্তিকর নোটিফিকেশন বন্ধ করবে গুগল ক্রোম

দখিনের সময় ডেস্ক: স্মার্টফোনে গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় হঠাৎ নোটিফিকেশন বা বার্তা এলে মনোযোগে সমস্যা হয়। ঘন ঘন নোটিফিকেশন আসতে থাকলে অনেকে বিরক্তও হন। তবে গুগল...

যে ৫ বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করবে

দখিনের সময় ডেস্ক: অন্যদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সবার আগে কথা বলতে জানা প্রয়োজন। তবে সুন্দর করে কথা বলাই শেষ কথা নয়, সেইসঙ্গে...

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ

দখিনের সময় ডেস্ক: অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে সরকারি বাসভবন...

Recent Comments