Home বরিশাল বরিশাল বিভাগে ইটিপি চলে কাগজপত্রে, পরিবেশের সর্বনাশ

বরিশাল বিভাগে ইটিপি চলে কাগজপত্রে, পরিবেশের সর্বনাশ

আলম রায়হান ও মশিউর রহমান তাসনিম:

বরিশাল বিভাগের জেলা সমূহে ইপিটি প্লান্ট স্থাপনের বাধ্যবাধাকতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১৪টি। এ মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানে ইটপি নির্মানাধিন। একটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ইটিপি নাই মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানে। বাকী ১০টি প্রতিষ্ঠানেই ইটিপি সচল। এ নিশ্চয়ই শুভ সংবাদ। কিন্তু আসল খবর নয়।

আসল খবর হচ্ছে, উল্লেখিত পরিসংখ্যান সরকারী নথি থেকে প্রাপ্ত। এ ক্ষেত্রে ফারাক হচ্ছে, কাজীর কেতাবের এবং গোয়ালের গরুর মতো। সরেজমিনে দেখাগেছে, বেশির ভাগ সংস্থার ইটিপি ব্যবহৃত হয় না। এই সব প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য সরাসরি ফেলা হয়। কোনটির বর্জ্য ফেলা হয় সরাসরি নদীতে। কোনটির বর্জ্য ড্রেন ও খাল হয়ে মিশে যায় নদীর পানিতে। ফলে ভয়াবহ দূষণের শিকার হচ্ছে বরিশাল বিভাগের নদী-খাল-নালা-মাটি।

পরিবেশ অধিদফতরের নথি অনুসারে বরিশালে জেলার কেমিস্ট ল্যাবরেটরীজ লিঃ, রেফকো ল্যাবরেটরীজ লিঃ, ইন্দো বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, সামিট বরিশাল পাওয়ার লিঃ, মেডিমেট ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ, অপসোনিন ফার্মা লিঃ এবং অপসোনিন বাল্ক লিঃ -এর ইটিপি সচল রয়েছে। ইটিপি নির্মানাধীন রয়েছে গ্লোবাল ক্যাপসুল লিঃ -এর ইটিপি। সরকারী নথী অনুসারে পটুয়াখালীর প্রিস্টাল ফর্মাসিউটিক্যালস লিঃ এবং পায়রা ১৩২০ মে. ওয়াট পাওয়ারে প্লান্ট-এর -এর ইপিটি সচল আছে। পটুয়াখালীর বায়োজেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ-এর ইপিটি নেই। একই জেলার মেসার্স হাসান মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ আছে। ভোলা জেলার শেলটেক সেরামিক লিঃ -এর ইটিপি চালু। ভোলার ২২০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট-এর ইটিপি প্রসঙ্গে কোন তথ্য উল্লেখ নেই পরিবেশ অধিদফতরের নথিতে।

কলকারখানায় ব্যবহৃত কেমিক্যালযুক্ত পানি নদী, খাল, বিল ও কৃষিজমিতে অবাধে ছাড়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর আইনে বলা হয়েছে, কলকারখানার কেমিক্যালযুক্ত ময়লা পানি তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি প্ল্যান্ট ব্যবহার করে আবার সেই পানি কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু এই পদ্ধতি ব্যবহারে প্রচুর টাকা প্রয়োজন হওয়ায় অধিকাংশ কারখানার ইটিপি প্ল্যান্ট বন্ধ থাকে।

ইটিপি প্লান্টের ব্যয় অনেক। মূলত এজন্যই কারখানা মালিকদের ইটিপি ব্যবহারে ঘোর অনিহা। সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারী বিধিবিধানের বাধ্যবাধকতার কারণে সংস্থাগুলো ইটিপি নির্মাণ করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো ব্যবহার করা হয় না। বছরে একদিনও ইটিপি মেশিন চালু করে না- এমন প্রতিষ্ঠান আছে। অন্যদিকে আইনের চোখ এড়াতে অনেক কারখানা মালিকই দিনের নির্ধারিত সময়ে ইটিপি সচল রাখেন। রাতে কিংবা যখন পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট বিভাগের অভিযানের সম্ভাবনা কম ওই সময় ইটিপি মেশিন বন্ধ রেখেই তরলবর্জ্য সরাসরি ফেলে দেয়।

এ ব্যাপারে জনৈক শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, বিষয়টি শাখের করাতের মতো বিষয় হয়ে দাঁড়িযেছে। শিল্প বর্জ্যে পরিবেশ ভয়ানক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে- এটি সত্য। পাশাপাশিও এও সত্য, ইটিপি চালাবার ব্যয় এতো বেশি যে তা বহন করার সক্ষমতা অনেক প্রতিষ্ঠানেরই নেই। তার মতে ইটিপি বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

ইটিপি ছাড়া শিল্প বর্জে সর্বনাশের খন্ড চিত্র, মানুষের আহাজারী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

এক কিশোরের গলা কাটল আর এক কিশোর

দখিনের সময় ডেস্ক: পরনে লাল গেঞ্জি। গলা থেকে ঝরছে রক্ত। করুণ অবস্থায় ১১ বছরের শিশু শফিকুল কাতরাচ্ছিল চট্টগ্রাম নগরের ফয়’স লেক এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনে।...

তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে লড়বেন স্বামী-স্ত্রী

দখিনের সময় ডেস্ক: বরগুনার তালতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন এক দম্পতি। তারা হলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবী...

স্ত্রীর ওপর অভিমান করে  আমিরাত প্রবাসীর আত্মহত্যা

দখিনের সময় ডেস্ক: সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গলাই ফাঁস লাগিয়ে ফারুক হোসেন (৩৫) নামে এক প্রবাসী আত্মহত্যা করেছেন। স্ত্রীর সঙ্গে কলহ আর কর্মহীন বেকার জীবনযাপনের...

নিয়োগ দিচ্ছে আবুল খায়ের গ্রুপ, আজই আবেদনের শেষ সময়

দখিনের সময় ডেস্ক: সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আবুল খায়ের গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি ইঞ্জিনিয়ার/সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে একাধিক জনবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। গত ০২ মে...

Recent Comments