শামীম আহমেদ, অতিথি প্রতিবেদক:
বরিশাল নগরের আছমত আলী খান (এ.কে) ইনস্টিটিউশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এসময় তারা বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাস করা ওই শিক্ষকের কাছ থেকে শ্রেণি কক্ষ দখল মুক্ত করার দাবি জানান।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে বিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর উপস্থিতিতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইরীন পারভীন।
সকালে লিখিত বক্তব্যে এ.কে ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইরীন পারভীন বলেন, ‘দুর্নীতির দায়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক এইচ.এম জসীম উদ্দিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার আত্মঘাতি অপপ্রচার চালাচ্ছেন। শিক্ষক মন্ডলিকে বিভিন্নভাবে ভয়ভিতি দেখাচ্ছেন। শিক্ষকদের চরিত্র হরণের জন্য নানান রকম নাটক সাজাচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক এইচএম জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, সাবেক ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জলিয়াতি, বিধি বহিঃর্ভুতভাবে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন, দুই মাসের ভাড়া মৌকুফ দেখিয়ে এক মাসের ভাড়া আত্মসাত, ভাড়া মৌকুফের প্রত্যায়নপত্র প্রদান, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে নবম শ্রেণির অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ১০ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণের জন্য জামানত বাবদ ৭২ হাজার ৫শত টাকা আদায় করে আত্মসাত, স্টলের নাম পরিবর্তনের জন্য এক লক্ষ টাকা বিদ্যালয়ে প্রদানের নিয়ম থাকলেও তিনি ৩ নম্বর স্টলের নাম পরিবর্তন পূর্বক টাকা আত্মসাত করেন জসীম উদ্দিন।
এছাড়া ২০২০ সালের পহেলা জুলাই থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিধি বহিঃর্ভুতভাবে ভাউচার প্রধান করে অর্থ আত্মসাত করেন। কমিটির অনুমোদন ছাড়া করোনাকালিন সময়ে প্রণোদনা ভাতাবাবদ নিজে এবং আরও চারজন কর্মচারীকে এক লক্ষ ২ হাজার ৯০০ টাকা ভাতা প্রদান করেন। ঈদগাহ্ মাঠের ভাড়া বাবদ আদায়কৃত ৪৮ হাজার টাকা অবৈধভাবে আত্মসাত করেন। খেলার টুর্নামেন্ট দেখিয়ে ৩৩ হাজার টাকার ভাউচারের টাকা আত্মসাত করেন।
২০০৯ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই কমিটির অনুমোদন নিয়ে অস্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। যেখানে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করছেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত প্রধান শিক্ষক এইচ.এম জসীম উদ্দিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। যা বর্তমানে পিবিআইতে তদন্তাধিন আছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষক মো. জিয়াউল হক ফারুক, কাঞ্চন আলী, রতন কুমার মজুমদার, ইসরাত জাহান শিলভী, আচমা আক্তার, মো. মামুন হাওলাদার, আইরীন জাহান সালমা, তরিকুল ইসলাম, রোকসানা কনক প্রমুখ।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক এইচ.এম জসীম উদ্দিন। তার দাবি সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তার কোনটিরই প্রমান দিতে পারবে না শিক্ষকবৃন্দ। বরং বর্তমান শিক্ষক এবং অবৈধ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে বিস্তার অভিযোগ করেন তিনি।