দখিনের সময় ডেস্ক
বাংলাদেশে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যার বহুল আলোচিত মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ওই হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই আলোচনায় এসেছিলেন তার সময়ে একের পর এক ক্রসফায়ার আর তার কঠোরতার জন্য। স্থানীয়দের অভিযোগ তিনি টেকনাফের ওসি থাকাকালীন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে টেকনাফে ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে দেড় শতাধিক মানুষ। খবর সূত্র: বিবিস।
সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের আশীর্বাদ আর স্থানীয় কিছু রাজনীতিকের অন্ধ সমর্থন তাকে ওই এলাকায় বেপরোয়া করে তুলেছিলো বলে মনে করেন স্থানীয়দের অনেকে। সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণার আগে কক্সবাজারে ‘অসহায় নির্যাতিত জনগণ’ এর ব্যানারে যে মানববন্ধন হয়েছে সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী অভিযোগ করেছেন যে ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে টেকনাফে ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে দেড় শতাধিক মানুষ।
দিনের পর দিন একের পর এক ক্রসফায়ার সহ নানা ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন, স্থানীয় রাজনীতিক কিংবা অন্যরা কেউ কোন কথা বলেনি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয়রা অনেকেই বলেছেন ওসি প্রদীপ দাশ ছিলেন সেখানকার সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ঘনিষ্ঠ। রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের কয়েকজন বলছেন যে টেকনাফে প্রদীপ কুমার দাশ এমন একটি ধারণা তৈরি করেছিলেন যে ‘মাদক দমনে তিনি যা খুশী তাই করতে পারেন’ এবং সরকার এটিই চায়।
মাদক দমনের নামে একের পর এক ক্রসফায়ারে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর মৃত্যুর পর স্থানীয়ভাবে দলটির এক পক্ষ ভয়ে আর অন্য পক্ষ নিজ স্বার্থে প্রদীপ কুমার দাশ পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতাদের কয়েকজন। তারা বলছেন সব মিলিয়ে টেকনাফে একটি ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা। একদিকে ইয়াবাসহ মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছিলো আর অন্যদিকে সরকারের তরফ থেকে অনেকটা ‘যা খুশী তাই করার’ সুযোগ পেয়েছিলেন টেকনাফ থানার এই সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে পুলিশে যোগ দেয়া প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানায় কর্মরত থাকার সময়েই ২০০৪ সালে এক নারীর জমি দখলের ঘটনায় বরখাস্ত হয়েছিলেন। পরে কক্সবাজারের চকরিয়ার এস আই হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এরপর জেলার মহেশখালীতে ও সর্বশেষ টেকনাফের ওসি হিসেবে কাজ করেন।