Home শীর্ষ খবর ইতিহাসে অমর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর আদর্শকে অবলম্বন করে এগিয়ে চলেছে...

ইতিহাসে অমর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর আদর্শকে অবলম্বন করে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ

দখিনের সময় ডেস্ক:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে কখনোই ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বই বাঙালিকে দিয়েছে নিজেদের রাষ্ট্র। শুধু রাষ্ট্রই নয়, জাতিকে আত্মনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালিরই নন, দুনিয়ার সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মুক্তির প্রতীক। বাঙালির বাংলায় কথা বলার অধিকারও স্বীকৃতি পেতনা পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে। তার কারণেই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। তার অসাধারণ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কিউবার মুক্তিসূর্য ফিদেল কাস্ত্রো তাই তুলনা করেছিলেন, হিমালয় পর্বতের।

সাবেক পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাঙালির মুক্তির আসল সূর্য ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধান স্থপতি। প্রকৃত অর্থেই তিনি জাতির পিতা। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৫৩ সালে গোপালগঞ্জ থেকেই তিনি সাবেক পূর্ববঙ্গ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ভাষা আন্দোলন করেছিলেন।ভাষার চেতনাকে ধারণ করেছিলেন বুকে। তার চিন্তা-চেতনায় ছিল মাতৃভাষার মর্যাদা ও স্বীকৃতি বিধানের সংকল্প। বাহান্নর ভাষা আন্দোলনে তার অবদান অনস্বীকার্য। গবেষকদের লেখায় উঠে এসেছে সেকথা।

প্রথম থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। বাঙালি জাতিসত্বা ছিল তার কাছে সবার আগে। পাকিস্তানের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে বাঙালির জাতিসত্বার বিকাশে লড়াইকে তিনিই গতি দেন। ১৯৭০ সালে তার নেতৃত্বেই অবিভক্ত পাকিস্তানে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু মানুষের ভোটে জয়লাভ করলেও সেনাবাহিনীর কর্তা ও পশ্চিম পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন আপসহীন সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু। একাত্তরের ৭ মার্চ তার সেই ঐতিহাসিক ভাষণ আজও বাঙালির শরীরে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। রমনা রেসকোর্সে (বর্তমানে সৌহরাওয়ার্দী উদ্যান) তার সেই ঐতিহাসিক ভাষণ, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’ সেইসঙ্গে, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ কবি নির্মলেন্দু গুণের ভাষায়,  ‘তারপর থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের’। বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।

মার্শাল ল-কে কাজে লাগিয়ে পূর্ববঙ্গে ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে শুরু হয় দমন-পীড়ন। ২৫ মার্চ রাতে শুরু হয় গণহত্যা, অপারেশন সার্চলাইট। পাকিস্তানি বর্বরতার শিকার হন গোটা বাঙালি জাতি। গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গবন্ধুকে। কিন্তু তারই নির্দেশে বাঙালি গর্জে ওঠে পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে। ৩০ লাখ শহীদ আর তিন লাখ নারীর ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।

বঙ্গবন্ধুই এই স্বাধীনতার স্থপতি। তিনি জেলে থেকেই বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত করেন। তারই নির্দেশে একাত্তরের ২৬ মার্চ ঘোষিত হয় স্বাধীনতা। স্বাধীন বাংলাদেশের স্রষ্টা তিনি। ভারত তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য করে। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিকস্তরে চাপ সৃষ্টি করে দিল্লি। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব আর ভারতীয় সেনাদের পেশাদারিত্বের কাছে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণের পর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়ে। ইসলামাবাদ বাধ্য হয় বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে।

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি দিল্লি হয়ে বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফেরেন ১০ জানুয়ারি। তেজগাঁও বিমানবন্দরে সেদিন লাখো বাঙালি তাদের মুক্তিসূর্যকে স্বাগত জানাতে সমবেত হন। দেশে ফিরেই যুদ্ধক্লান্ত দেশকে নতুন করে গঠন করার কাজে হাত দেন তিনি। ধর্মনিরপেক্ষতাকে আদর্শ করে গোটা দুনিয়ার সামনে নজির সৃষ্টি করতে চান জাতির পিতা। দেশকে স্বাবলম্বী করে তোলার পাশাপাশি বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রেও নিরলস চেষ্টা চালান বঙ্গবন্ধু। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পাকিস্তান মদদপুষ্ট ঘাতকের দল নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফের সোনার বাংলা গড়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অবলম্বন করে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হবিগঞ্জে মানহানির একটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন । বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আলীম...

Recent Comments