বিশেষ প্রতিনিধি:
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী মূলত আন্ডারগ্রাউন্ড ডন। ভাড়াটে কিলার থেকে সে হয়ে ওঠে মাদক ও নারারী ব্যবসায়ী। একাধিক এলাকায় দামী ফ্লাটে গড়েতোলে বার ও অভিজান পতিতালয়। তার এ মধুকুঞ্জে বহু রাঘব বোয়ালদের আনাগোনা ছিলো।
আশিষ চৌধুরীর মধুকুঞ্জে নিয়মিত যাতায়াত ছিলো মিডিয়ার কিছু পরিচিত মুখেরও। এরা মূলত বিনে পয়সায় মদ খেতেন। আর সঙ্গে নিয়েযেতেন নিজস্ব ‘বান্ধবীকে’। তবে একএকদিন একএকজনকে। আবার কখনো কখনো এই ‘বান্ধীও’ সরবরাহ করতের আশিষ চৌধুরী। আর এই বান্ধবী দেবার বিনিময়ে কোন পেমেন্ট নিতেন না সদাসয় আশিষ চৌধুরী। তবে বিনিময়ে অবশ্যই মিডিয়া প্রটেকশন আশা করতের চতুর আশিষ। যার রয়েছে অন্য দেশের নাগরিকত্বও।
আজিজ মোহাম্মদ ভাইর ছত্রছায়ায় উত্থান আশিষ রায় চৌধুরীর। বলা হয় সোহেল চৌধুরকে হত্যা করেছিলো এই আজিজজ মোহাম্ম ভাইর ইঙ্গিতেই। তবে আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এক পর্যায়ে ‘গুরু’ আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে টপকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এবং গড়ে তোলে নিজস্ব বলয়। এ ক্ষেত্রে তার প্রধান উপকরণ ছিলো মদক ও নারী।
নারী ও মাদক ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক অবস্থানও ধরে রাখার বাপারেও সচেতন ছিলো আশিষ চৌধুরী। এ জন্য তার প্রয়োজন ছিলো পরিচয় দেবার মতো একটি পদ। এ ক্ষেত্রে তার প্রধান পছন্দ ছিলো এয়ার লাইন্স। এতে সুবিধা প্রধানত দুটি। এক. ফুটানীর পরিচয় দেয়া। দুই. এয়ার হোস্টেজদের মধ্য থেকে নারী বাছাই করার অবারিত সুযোগ। এধারায় সে একাধিক বেসরকারি এয়ারলাইনসের ঊর্ধ্বতন পদে আসীন ছিলো। সর্বশেষ সে ছিলো জিএমজি এয়ারলাইনসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর গুলশানের ২৫/বি ফিরোজা গার্ডেন নামের একটি ফ্লাট থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মদের প্রচুর বোতল পাওয়া গেছে। দামি দামি এসব মদের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে আশিষ বাসায় মিনি বার গড়ে তুলেছে। তার এই মিনি বার থেকে প্রায় ১৯-২০টি দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের মদের বোতল জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া তার মিনি বারে শিশা সেবনের নানা উপকরণও পাওয়া গেছে বলে র্যাবের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানীর ক্লাব ট্রামসের নিচে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় তার বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়।