আলম রায়হান:
এ ছবিটি ৭ এপ্রিল বেলা সোয়া ১২টার দিকে ফার্মগেটের পশ্চিম দিক থেকে তোলা। রিকশা চালককে সরে যাবার আদেশ শুনতে বাধ্য করার জন্য ট্রাফিক পুলিশ প্রথমে চাকার টায়ার ফুটো করে দেন। পরে রিকশাটিকে জোরে ধাক্কা দেন। ফলে এটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এ ঘটনায় অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় রিকশাচালক। এ ঘটনায় রিকশাচালক হঠাৎ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।
এ ধরনের ঘটনা মোটেই বিরল নয়। বরং অহরহ ঘটছে। এক গবেষনায় দেখা গেছে, ৯১ শতাংশ রিকশাচালক পুলিশের কাছে থেকে নানা রকম নিগ্রহের শিকার হন। এর মধ্যে আছে ধমক, তাচ্ছিল্য করা ও শারীরিক নিগ্রহ। পুলিশ রিকশার টায়ারের হাওয়া ছেড়ে দেয়, টায়ার ফুটো করে দেয়, সিট নিয়ে চলে যায়, কখনো কখনো কান ধরতে বাধ্য করা হয়।
রিকশাচালকদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ এই গবেষণা করেছে। বিলসের ‘অর্গানাইজিং দ্য ইনফরমাল ইকনোমি ওয়ার্কার্স: আ স্টাডি ইন রিকশাপুলারস ইন ঢাকা সিটি’ শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম ও খন্দকার আবদুস সালাম।
এ গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরের ৬০ শতাংশ বাসিন্দা তাদের প্রয়োজনে রিকশায় চড়ে। ঢাকা সিটি করপোরেশন রিকশার লাইসেন্স দেওয়ার একমাত্র কর্তৃপক্ষ। ১৯৮৬ সালে সিটি করপোরেশন সর্বশেষ ৭৯ হাজার ৫৫৪ রিকশার লাইসেন্স দিয়েছিল। এরপর থেকে লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ আছে। ঢাকা শহরে এখন আনুমানিক ১১ লাখ রিকশা আছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বিশাল সংখ্যায় অদক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয় রিকশা পরিবহন খাতে। এখানে বিনিয়োগ অল্প, এ পেশায় ঢোকা-বের হওয়া সহজ, নগদ আয় হয়। আবার এটি চালাতে কোনো বিশেষ দক্ষতারও দরকার পড়ে না। রিকশার আরেকটি দিক, এটা সহজেই পাওয়া যায়। এটি চালাতে নিয়মনীতির এত কড়াকড়ি নেই। গ্রামাঞ্চল থেকে নগরে আসা অদক্ষ শ্রমিকের ভরসা রিকশা।