Home আন্তর্জাতিক জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পারভেজ মোশাররফ

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পারভেজ মোশাররফ

দখিনের সময় ডেস্ক:

পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ দুবাইয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় তিনি বেঁচে আছেন। তবে তার সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা নেই। খবর আল-জাজিরার।

শুক্রবার (১০ জুন) হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানি সূত্রের বরাতে ভারতের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ হয়। খবরে বলা হয়, দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ৭৮ বছর বয়সী পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল মোশাররফ।

এদিকে জেনারেল পারভেজ মোশাররফের টুইটার আইডি থেকে দেওয়া পোস্টে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থতার (অ্যামাইলয়েডোসিস) কারণে তিন সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পারভেজ মোশাররফের শারীরিক অবস্থা একটি কঠিন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে আরোগ্য লাভ সম্ভব নয়। তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও ঠিকমতো কাজ করছে না। পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধানের দৈনন্দিন জীবনযাপনে স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তার পরিবার।

মোশাররফের দল অল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এপিএমএল) একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, সাবেক সামরিক শাসককে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক অথবা তাকে ভেন্টিলেটরে রাখার খবরটি সঠিক নয়। দলের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, অ্যামাইলয়েডোসিসে আক্রান্ত পারভেজ মোশাররফের চিকিৎসা চলছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল।

২০১৬ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন ৭৮ বছর বয়সী এই নেতা। ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট থাকার সময় বেআইনিভাবে সংবিধান বাতিল ও জরুরি অবস্থা জারির দায়ে ২০১৩ সালে মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ তাকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে বিশেষ আদালতের কাছে বিচারের জন্য সব তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়। তবে আপিল ফোরামে মামলাটি তোলার পর বিচারকাজ দীর্ঘায়িত হয়ে পড়ে এবং মোশাররফ ২০১৬ সালের মার্চ মাসে চিকিৎসার জন্য পাকিস্তান ছেড়ে চলে যান। এ জন্য তাকে দেশত্যাগের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি পারভেজ মোশাররফ। তার কয়েক মাস পরেই পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত তাকে অপরাধী ঘোষণা করে। বারবার আদালতে হাজির না হওয়ায় পাকিস্তানে থাকা তার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। বাতিল হয় তার পাসপোর্ট এবং পরিচয়পত্রও।

২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের বিশেষ আদালত পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। পাকিস্তানের ইতিহাসে এ ধরনের রায়ের ঘটনা ছিল এটিই প্রথম। তবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসকের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেন দেশটির আদালত। যে প্রক্রিয়ায় পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল, তাকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে মৃত্যুদণ্ডাদেশের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

টিকটকে নিরাপদ রাখবে যে ১০ ফিচার

দখিনের সময় ডেস্ক: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে টিকটক। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে টিকটক। যেখানে ‘ফিডস’ নেটওয়ার্কের...

প্রতিদিন খেজুর খাবেন যে কারণে

দখিনের সময় ডেস্ক: আপনার কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য সুস্বাদু কোনো খাবার প্রয়োজন এবং সেইসঙ্গে অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইছেন? এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হতে পারে খেজুর।...

পরীমণি প্রথম স্বামীর পরদিন মারাগেলো প্রথম পরিচালক

দখিনের সময় ডেস্ক: লাইফ সাপোর্টে থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির প্রথম সিনেমা ‘ভালোবাসা সীমাহীন’-এর পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল।  গুলশানের...

বাউফলে ইউএনও’র বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

নয়ন সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজীর বিরুদ্ধে অনিয়ম,দুনীতি ও অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈশোম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গতকাল...

Recent Comments