Home বিশেষ প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের পিছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র: জাহাঙ্গীর

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের পিছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র: জাহাঙ্গীর

আলম রায়হান ॥
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের পিছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। এর সঙ্গে আইএস এবং হেফাজত-জামায়াত-বিএনপি জড়িত। এরা দীর্ঘ দিন ধরে আলেম সমাজে আওয়ামী লীগ বিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। এ জন্য তারা ভালোভালো বক্তা সংগ্রহ করেছে। এরা ওয়াজের নামে আওয়ামী লীগ প্রচারণা চালিয়েছে। তাদের বিবেচনায় ‘মোক্ষম সময়’ আঘাত হেনেছিলো। কিন্তু অপশক্তি ব্যর্থ হয়েছে।
দৈনিক দখিনের সময়-এর সঙ্গে গতকাল সোমবার একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বরিশাল মহানগর :বাকি অংশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, মূর্তি আখ্যায়িত করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর হামলা আসলে বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার উপর হামলা। তবে অপশক্তির অমার্জনীয় এই অপরাধের সময়োচিত জবাব দিয়েছে গোটা জাতি। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পিপি এ কে এম জাহাঙ্গীর আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের মাধ্যমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য ছিলো সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করা। এ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জামায়াত-বিএনপি জড়িত। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ ও দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে ষড়যন্ত্রকারীদের অপচেষ্টা সাময়িকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রশ্ন: ‘সাময়িকভাবে’ বলছেন কেন? উত্তর: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে মূর্তি আখ্যায়িত করে যেই পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে তা হঠাৎ কোন ঘটনা নয়। এটি একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তির ধারাবাহিক ও লাগাতর অপচেষ্টার একটি দিক। পরাজিত অপশক্তি একাত্তরের পরাজয়কে মেনে নেয়নি। এ কারণে তারা বারবার বাংলাদেশকে পরাজিত করার ষড়যন্ত্র করেছে। এর ধারাবাহিকতায়ই ১৫ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। এ সময় ঘাতকরা শিশু রাসেলকেও রেহাই দেইনি। একই সময় ঘাতকরা আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও শেখ ফজলুল হক মনির বাড়িতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায়ই জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। এখানেই থেমে থাকেনি ষড়যন্ত্রকারীরা। এই অপশক্তি অন্তত ১৯ বার আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা করেছে। আর ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে প্রকাশ্যে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সকল শীর্ষ নেতাকে হত্যার অপচেষ্টা করেছে। সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা ভাগ্যক্রমে বেঁচেগেলেও আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অসংখ্য নেতা-কর্মী। এই অপচেষ্টার ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা বিরোধীরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর হামলা করেছে বলে আমি মনে করি। কাজেই এরা আবার অন্য কোন বিষয়কে ইস্যু বানিয়ে আরকোন অপচেষ্টা করবে না- তা মনে করার কোন কারণ নেই!
প্রশ্ন: তা হলে এখন করণীয় কী? উত্তর: সচেতনতা, সতর্কতা এবং রুখে দাঁড়ানোই হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিহত করার ক্ষেত্রে প্রধান করণীয়। এবারের ঘটনাই দেখেন না! ষড়যন্ত্রকারীরা দীর্ঘদিন পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়েই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর আঘাত হেনেছে। কিন্তু এই অপশক্তির পরিকল্পনা সফল হয়নি। বরং প্রতিহত করা গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষতা, জনগণের সচেতনতা এবং প্রশাসনের সকল স্তরের সম্পৃক্ততা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। এবার নিশ্চিতভাবে প্রমানিত হয়েছে, প্রশাসন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন কোন শ্রেনী নয়। বরং প্রশাসন এখন অধিকতর জনসম্পৃক্ত।
প্রশ্ন: আগামী সম্ভাব্য পরিস্থিতি কী হতে পারে?
উত্তর: বলা কঠিন! তবে ষড়যন্ত্রকারীরা অপচেষ্টা চালিয়ে যাবে- এ আশংকা থাকাটাই স্বাভাবিক। এর বিপরীতে আমাদেরকে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে। প্রশাসনকে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে। সামগ্রিক বিবেচনায় সঠিকভাবে এগোতে পারলে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি তেমন মাথাচাড়া দিতে পারবে বলে মনে হয় না। এরপরও এদের তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে হবে। এই ধরেন, কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর হামলার পরপরই বরিশালের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বরিশালবাসী তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করেছে। এটি একটি বড় ম্যাসেজ। লক্ষ্য করলে দেখবেন, ভাস্কর্য ইস্যুতে বরিশালের কোথাও গোলযোগ করার সাহস পায়নি স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। অথচ মুক্তিযুদ্ধের কিছু দিনের মধ্যেই বরিশাল অঞ্চলে বিএনপির ছদ্মাবরণে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি শক্ত অবস্থান করে নিয়েছিলো। এর আগে ক্ষমতাধর ছিলো খুনী মোশতাকের দোসররা। এর বিপরীতে দক্ষিণ বঙ্গের অভিভাবক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর বলিষ্ট নেতৃত্ব বরিশাল অঞ্চল আবার স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনীতির উপযুক্ত স্থানে পরিণত হয়েছে। এখন এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করার ক্ষেত্রে বরিশাল একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে আমি মনে করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করলে কী হয়?

দখিনের সময় ডেস্ক: ওজন কমানো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। কঠোর ডায়েট অনুসরণ করা, খাবারের প্রতি লোভ নিয়ন্ত্রণ করা, প্রতিদিন জিমে যাওয়া, কঠোর ওয়ার্কআউট করা...

ডিভোর্সের দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: নিন্দুকরা মনে করছে বাংলার মেয়ে গিটার বাদক মোহিনী দে-র জন্যই হয়ত সায়রাকে ছেড়েছেন ভারতের অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ও সুরকার এ আর রহমানের। তবে...

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র টোকিও, সেক্স ইন্ডাস্ট্রির জড়িত কিছু চক্র

দখিনের সময় ডেস্ক: যখন স্বর্ণযুগ ছিল, শহরটি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নতি দেখেছে। এটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বাসযোগ্য শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে আশঙ্কার বিষয়...

Recent Comments