দখিনের সময় ডেস্ক:
নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি হবে ২৫ জুন। এদিন বহু প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দিন সকাল ১০টায় পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নয়, সুফল মিলবে সারা দেশে। পূরণ হবে দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা।
পদ্মা সেতুকে ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়ে উঠবে বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক জোন। গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বাড়বে কর্মসংস্থান। গতি বাড়বে বেনাপোল, মোংলা, ভোমরা ও পায়রা বন্দরের। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। কৃষি, মৎস্যসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহণে ব্যয় ও সময় বাঁচবে এবং যাতায়াত সহজতর হবে।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি কাজি আমিনুল হক বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের স্বপ্ন ও গর্বের। সবাই বলছে যে পদ্মা সেতুর কারণে ২১ জেলার লোক উপকৃত হবে। এ বিষয়ে আমরা একমত না। আমরা মনে করি, সারা বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হবে। বেনাপোল, মোংলা, ভোমরা ও পায়রা এই চারটি পোর্টের আমদানি করা পণ্য কম খরচে ঢাকায় পৌঁছাবে। এই অঞ্চলের শাক-সবজি এবং খুলনা অঞ্চলের তাজা মাছ অনেক কম খরচে ঢাকায় যাবে। সেইসঙ্গে ভারত থেকে যেসব পেঁয়াজ, ফল আমদানি করি, সেগুলো ঘাটে ২-৩ দিন বসে থাকার পর নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ফ্রেস মাল পাঠাতে পারি না। সেগুলো স্বল্পমূল্যে এবং ফ্রেস পাঠাতে পারব।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের একটা অনুভূতির নাম। ২৫ জুনের পর থেকে এই পদ্মা সেতু দিয়ে আমরা পারাপার হতে পারব। আজ থেকে ১০ বছর আগে পদ্মায় সেতু তৈরি হবে মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি। আজ সেটিই বাস্তবে রূপ পেয়েছে।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ-জামান বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের একটি বড় অর্জন। আমরা কল্পনাও করতে পারি না যে আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় একটি প্রকল্প বাস্তাবায়ন হচ্ছে। রাজধানীর সঙ্গে কানিকটিভিটির বড় একটা সমস্যা ছিল বিভক্তি। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে সেই বিভক্তিটার অবসান হলো।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, আমাদের স্বপ্নের সেতু পদ্মা। এই সেতুর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বরিশাল এবং খুলনা বিভাগে যাতায়াতের অবাধ সুযোগ সৃষ্টি হবে। চিংড়ি এবং মাছের অবারিত সুযোগ আরও সম্প্রসারিত হবে। কারণ মাছ যখন জীবন্ত বাজারে নিয়ে যেতে পারবে, তখন মূল্যটা আরও বেশি পাবে। খুলনা থেকে প্রতিদিন হিমায়িত ও বরফায়িত মাছ ঢাকা এবং চট্টগ্রামের মার্কেটে নিয়ে যেত। এখন ৪-৫ ঘণ্টায় ফ্রেস মাছ নিয়ে যেতে পারব। এক্ষেত্রে আমি মনে করি চাষিরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। যেহেতু খুলনা চিংড়ি, মাছসমৃদ্ধ অঞ্চল, এই অঞ্চলে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে। পদ্মা সেতু হওয়াতে মৎস্য সেক্টর সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বলে আমার মনে হয়।