Home শীর্ষ খবর জ্বালানি খাতকে ঝুকিতে ফেলছে আমদানি নির্ভরতা

জ্বালানি খাতকে ঝুকিতে ফেলছে আমদানি নির্ভরতা

দখিনের সময় ডেস্ক:

আমদানি নির্ভরতা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে দিন দিন অনিশ্চয়তায় ফেলছে। দেশীয় জ্বালানির ব্যাপকহারে অনুসন্ধান ও উদ্ভাবন আশার আলো দেখাতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পেট্রো বাংলাও সেই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে। দেশের জ্বালানি চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করে প্রাকৃতিক গ্যাস।

চাহিদার একটা অংশ আসে আমদানি করা এলএনজি থেকে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় কমেছে এলএনজি আমাদানি। ফলে তীব্র হচ্ছে জ্বালানি সংকট। ২০২৫ সালের মধ্যে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সংযোজনের পরিকল্পনা পেট্রো বাংলার। বর্তমান উৎপাদন হয় ২ হাজার ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, তিন ধরনের কূপ মিলিয়ে মোট ৪৬টি কূপ আমরা খনন করব। লক্ষ্যমাত্রা হলো ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আহরণ। আমরা আশাবাদী এই কূপগুলো সঠিক সময়ে খনন করতে পারব। এর মাধ্যমে আমরা দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবো। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমদানি নির্ভরতা জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম বলেন, আমরা যদি এই পথ থেকে সরে না আসি। নিজস্ব সম্পদের ওপর ভর করার কার্যক্রম শুরু না করি। তাহলে আমাদের সংকট দিন দিন বাড়তে থাকবে। বঙ্গবন্ধু যদি আজকে থাকতেন, তাহলে এটা কেউ করতে পারত না। বাংলাদেশের গ্যাসকে উত্তোলন না করে বিদেশিদের শরণাপন্ন হয়ে এই সংকটে পড়তে দিতেন না বঙ্গবন্ধু।

বর্তমানে নিজস্ব গ্যাসের পুরোটাই আসে স্থলভাগ থেকে। ২০১২ সালে মিয়ানমার আর ২০১৪-তে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র বিজয় নতুন দ্বার উন্মোচন করে। সীমানা বিভক্তির কয়েক বছরের মধ্যেই প্রতিবেশী দেশ দুটি সামুদ্রিক গ্যাস আহরণ শুরু করে। তবে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে।

ড. বদরুল ইমাম বলেন, মিয়ানমার দাগের ওপারে যে বড় বড় গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করছে, সেটার একই ধরনের গ্যাসক্ষেত্র দাগের এপারে আছে। বাংলাদেশ জলসীমায় আমরা কি অনুসন্ধান করছি? সেখানে আমরা একটা কূপও এই ১০ বছরে খনন করি নাই। অথচ বিজ্ঞানীরা এবং জরিপকারী তেল কোম্পানিগুলো বলছে, একই ধরনের স্ট্রাকচার বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে রয়েছে।

তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য সমুদ্রের অংশকে ২৬টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১টি অগভীর। ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ওএনজিসি অনুসন্ধান করছে। তবে এখনো কিছু পাওয়া যায়নি। সূত্র জানিয়েছে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহী করতে চুক্তিকে আকর্ষণীয় করতে চাচ্ছে পেট্রো বাংলা।

পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসানের সঙ্গে কথা বলছেন দৈনিক দখিনের সময়-এর প্রধান সম্পাদক আলম রায়হান। ছবি দখিনের সময়

পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, প্রোডাকশন শেয়ার চুক্তিকে আমরা রিভিউ করছি। আশা করছি খুব সহসাই আমরা এর ফলাফল পেয়ে যাব। আমরা সেখানে কনসাল্টেন্ট নিয়োগ করেছি। এই পরামর্শকের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা চুক্তিটি আরেকবার দেখে চূড়ান্ত করব। দেশের ২২টি গ্যাস ক্ষেত্রে ৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে। বছরে প্রয়োজন ১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। এ হিসেবে আগামী ৯ বছরেই মজুদ ফুরিয়ে যাবে। তাই জ্বালানী নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত নতুন গ্যাসক্ষেত্র উদ্ভাবনের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

টিকটকে নিরাপদ রাখবে যে ১০ ফিচার

দখিনের সময় ডেস্ক: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে টিকটক। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে টিকটক। যেখানে ‘ফিডস’ নেটওয়ার্কের...

প্রতিদিন খেজুর খাবেন যে কারণে

দখিনের সময় ডেস্ক: আপনার কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য সুস্বাদু কোনো খাবার প্রয়োজন এবং সেইসঙ্গে অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইছেন? এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হতে পারে খেজুর।...

পরীমণি প্রথম স্বামীর পরদিন মারাগেলো প্রথম পরিচালক

দখিনের সময় ডেস্ক: লাইফ সাপোর্টে থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির প্রথম সিনেমা ‘ভালোবাসা সীমাহীন’-এর পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল।  গুলশানের...

বাউফলে ইউএনও’র বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

নয়ন সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজীর বিরুদ্ধে অনিয়ম,দুনীতি ও অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈশোম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গতকাল...

Recent Comments