স্টাফ রিপোর্টার ॥
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেনের চাকরি মেয়াদ আগামী মার্চ মাসে শেষ হবে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ১৭২ পদে নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করে ২১২ জনকে নিয়োগ দিতে গিয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিলো তৎকালীন হাসপাতাল প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করলে নিয়োগপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। আর উচ্চ আদালতের রায়ে নিয়োগপ্রাপ্তরা কাজেও যোগ দেন। এরপর বেশ কয়েকটা বছর কেটে যাওয়ার পরে ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ১২টি ক্যাটাগরিতে ৩২ জন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আর তা নিয়েও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এরইমধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বর্হিভূত নিজ জেলার প্রার্থীদের ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার পায়তারার অভিযোগে পরিচালকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন দুই পরীক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে পাবনা জেলার জাবরকোলের দুই পরীক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম ও জুয়েনা নীতি যৌথভাবে অভিযোগ দাখিল করেন।
মামলায় অন্যান্য বিবাদীরা হলেন, শেবাচিম হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও কর্মচারী নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বরিশাল জেলা প্রশাসক, বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক ও মেহেন্দিগঞ্জ উলানিয়ার আশা এলাকার আবুল কালাম, পটুয়াখালী বাউফল বিলবিলাস এলাকার আশ্রাফুজ্জামান ও ঝালকাঠী কাঠালিয়ার জোরখালী এলাকার মিজানুর রহমান।
মামলা পরিচালনাকারী আজাদ রহমান জানান, ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ১২টি ক্যাটাগরিতে ৩২ জন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, মাদারীপুর ও বাগেরহাট জেলার প্রার্থীদের আবেদন না করার জন্য বলা হয়। এরপ্রেক্ষিতে সিরাজুল ইসলাম ও জুয়েনা নীতি সব কাগজপত্র সংযুক্ত করে ফার্মসিস্ট পদে আবেদন করেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব হাসপাতালের উপ-পরিচালক তাদের প্রবেশপত্র ইস্যু করেন। কিন্তু ৫ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষার দিন কমিটির সদস্যরা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ পাইয়ে দিতে বাইরে থেকে নকল সরবরাহ করেন।
একইসঙ্গে ৬ ফেব্রুয়ারি পরিচালক ২৪ ঘণ্টায় ৪৪৪ জন প্রার্থীর পরীক্ষার ফলাফল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় নিয়োগের সব কার্যক্রম বাতিল চেয়ে পুনরায় সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।