Home আন্তর্জাতিক কারাগারে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক

কারাগারে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক

দখিনের সময় ডেস্ক:

মালয়েশিয়ার বহুল আলোচিত ওয়ান এমডিবি দুর্নীতির মামলার চূড়ান্ত আপিলে হেরে যাওয়ায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ১২ বছরের কারাদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্ট। তাৎক্ষণিকভাবে এই সাজা কার্যকরে মঙ্গলবারই(২৩ আগস্ট) তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ এই আদালত।

নাজিবের ঘনিষ্ঠ অপর একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, রায় ঘোষণার পর  রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে কাজাং কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নাজিবকে। পরবর্তী আদেশ আসার আগ পর্যন্ত এই কারাগারেই থাকতে হবে তাকে। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ২১ কোটি রিংগিত (৪৪৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা) জরিমানাও করা হয়েছে।

এর আগে, ২০২০ সালে মালয়েশিয়ার একটি নিম্ন আদালত অপরাধজনিত বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগে নাজিব রাজাককে এই সাজা দিয়েছিলেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবারের রায়ে শীর্ষ আদালত নাজিবের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মালয়েশিয়ার প্রধান উন্নয়ন তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ান এমডিবি) থেকে অবৈধভাবে ৪৫০ কোটি ডলার সরানোর অভিযোগ রয়েছে নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা সেই চুরি যাওয়া টাকার একটি অংশ উদ্ধার করেছেন; যার পরিমাণও ১০০ কোটি ডলারের বেশি।

মামলার তদন্তে দেখা গেছে, যেসব ব্যাংক হিসাব থেকে এই ডলার উদ্ধার হয়েছে, সেসব হিসাব নাজিব রাজাকের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। প্রথম যখন এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়, তখন পুরো বৈশ্বিক রাজনীতিতে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম চুরি’ বলে আখ্যা দেয়। ৬৯ বছর বয়সী নাজিব রাজাক অবশ্য বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে গেছেন। এমনকি মঙ্গলবার রায় ঘোষণার আগেও আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নাজিব বলেন, তিনি বিরোধীদের ষড়যন্ত্র ও অবিচারের শিকার।

যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নাজিব রাজাক মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অর্থ সরানোর কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়, যার জেরে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ঘটে নাজিবের। নির্বাচনের পরপরই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য জনসমক্ষে আসতে থাকে। ২০১৯ সালে নিম্ন আদালতে অভিযোগ গঠন শেষে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই বিচারের রায়েই ২০২০ সালে নাজিব রাজাককে ১২ বছরের কারাদণ্ড ও ২১ কোটি রিংগিত জরিমান করেন নিম্ন আদালত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

নিজের চেয়ার ঠিক রাখতেই ব্যস্ত পুলিশ কর্মকর্তারা

দখিনের সময় ডেস্ক: জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে গণহত্যার জন্য একক বাহিনী হিসেবে পুলিশকে দায়ী করা হয়। মানুষের ক্ষোভের আগুনে পুড়েছে বাহিনীটির শতশত থানা, যানবাহন। জীবন গেছে...

সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: তোফায়েল

দখিনের সময় ডেস্ক: সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে আর কখনোই সংস্কার হবে না। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন সদস্য...

না ভোট ফিরিয়ে আনার সুপারিশ সংস্কার কমিশনের

দখিনের সময় ডেস্ক: সরাসরি রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো প্রার্থী নির্বাচিত না হওয়া, না ভোট ফিরিয়ে আনা ও অর্থের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ...

সুযোগ পেলে গলা চেপে ধরবে আ.লীগ: রিজভী

দখিনের সময় ডেস্ক: গণহত্যার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও, সুযোগ পেলে আবারও তারা মানুষের গলা চেপে ধরবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র...

Recent Comments