কাজী হাফিজ ॥
তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় আবারও বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি এবং মশাল মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চল বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্যমে শিক্ষার্থীদের করা তিন দফা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। দাবি গুলো হলো, দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার পদক্ষেপ গ্রহণ, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা এবং অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা নেয়া। আজ শুক্রবার বিকাল ৫টায় আল্টিমেটামের ৪৮ ঘন্টা পূর্ণ হলেও শিক্ষার্থীদের তিন দাবির একটি দাবিও পূরন হয়নি বলেন জানান শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মীর শরীফ বলেন, আমার ভাইদের উপর নৃশংসভাবে হামলা করা হয়েছে। মধ্যরাতে বাসায় গিয়ে গিয়ে তাদেরকে মেরে ডাস্টবিনে ফেলা রাখা হয়েছে। আমাদের দেয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হয়েছে। হামলাকারীদের নাম বলার পরেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। তাই আমরা দাবি আদায়ের জন্য আবারও মাঠে নেমেছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বাস শ্রমিক রফিক কর্তৃক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ও ছুরিকাঘাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও ঢাকা-পটুয়াখালী সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত রফিক’কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তারই জের ধরে গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে হামলা চালায় দূর্বৃত্তরা। এতে ১৩ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে ঐ দিন শিক্ষার্থীরা তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, হামলাকারীদের গ্রফতারসহ ৩ দফা দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেন।
পরবর্তীতে গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ ঘটিকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে হামলার মদদদাতা হিসেবে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান মনির মোল্লা এবং শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন এবং মানিক এই তিন জনের নাম প্রকাশ করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।