দখিনের সময় ডেস্ক:
সরকারি দায়িত্ব পালনে অনীহা, ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখতে ব্যস্ত থাকার অভিযোগে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। এদিকে শেবামেক অধ্যক্ষের কার্যালয়ে দুদকের অভিযানের নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের চেয়ে সক্রিয়ভাবে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন রোগীরা। মেডিসিন বহির্বিভাগে লাইনে দাঁড়ানো রোগী শরিফুল ইসলাম সৈকত বলেন, গত সপ্তাহে ডাক্তার দেখিয়ে গেছি। তখন অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আজ শুনেছি দুদক অভিযান চালিয়েছে। এখন সব রুমে ডাক্তার এসেছেন। ফলে অল্প সময়ে চিকিৎসা পাচ্ছি।
আরেক রোগী ইমরান বলেন, দুদক অভিযান চালিয়েছে শুনে অত্যন্ত আনন্দ লাগছে। আর না হোক অন্তত এক মাস গরিব-অসহায় মানুষগুলো একটু সহজে চিকিৎসা সেবা পাবে। আমি চাই দুদকের বুথ করা হোক এই হাসপাতালে। কারণ এই হাসপাতালের সকল কক্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত।
নাক কান গলা বিভাগের সামনে কথা হয় রোগী মেহেরুন্নেছার সঙ্গে। তিনি বলেন, আগে ডাক্তার দেখাতে আসলে ওষুধ প্রতিনিধিদের জ্বালায় ডাক্তার দেখাতে পারতাম না। আজ সেই জ্বালা নেই।
আরেক রোগী হারুন আর রশিদ বলেন, এতদিন যেসব কর্মচারী-ডাক্তার হাসপাতালে আসেনি তারাও আজ খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে কাজ করছেন। তাতে মন্দের ভালো সেবা পাচ্ছি।
এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে দুদকের অভিযানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৩টায় কলেজের কনফারেন্স রুমে হাসপাতালের ডাক্তার এবং ছাত্র-ছাত্রীরা জরুরি বৈঠক শেষে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় অভিযানের নেতৃত্বে থাকা দুদকের সহকারী পরিচালক রাজ কুমারের ‘অসদাচরণের’ কারণে তার বহিষ্কার দাবি করা হয়।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, আজকে বৈঠক ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোগীদের কথা চিন্তা করে বড় কোনো আন্দোলনে যাইনি। তবে যদি তারা (দুদক) কোনো মামলা করে, তাহলে আমরা কর্মবিরতিতে যাব।
প্রসঙ্গত, আ মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহিনের কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়। রোগীর চিকিৎসা না দেওয়া, সরকার নির্ধারিত সময়ে কার্যালয়ে না আসা, ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকাসহ বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালায় দুদক। অভিযোগে ডা. আনোয়ার হোসেন বাবলু ও অমিতাভ সরকারের নাম উল্লেখসহ হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক।