Home লাইফস্টাইল নবজাতকের ঘুমের আদ্যোপান্ত

নবজাতকের ঘুমের আদ্যোপান্ত

দখিনের সময় ডেস্ক:

যদি জিজ্ঞেস করা হয়, সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে একজন মায়ের জন্য সবচেয়ে দুরূহ কাজ কোনটি? জানি, অনেকগুলো সম্ভাব্য উত্তর পাওয়া যাবে। সেগুলোর মধ্যে কোনটি যে আদতেই সবচেয়ে কঠিন, তা হয়তো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হবে না কোনো দিনই। তবে একটি ব্যাপার নিশ্চিত করেই বলা যায়, তালিকায় একটি কাজের উল্লেখ থাকবে। সেটি হলো: নবজাতককে ঘুম পাড়ানো। সন্তান জন্মের পর প্রথম কয়েক মাস একজন মা মাত্রাতিরিক্ত উদ্বিগ্ন থাকবেন, এটি খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আর এই প্রথম কয়েক মাসেই নবজাতকের ঘুমের রুটিন সবচেয়ে বেশি অনিয়মিত থাকে। দেখা যায়, সারাদিন ঘুমিয়ে মাঝরাতে জেগে উঠছে সে।

নবজাতকের ঘুমের সাধারণ প্যাটার্ন : নবজাতকেরা প্রচুর ঘুমিয়ে থাকে- সাধারণত দিনে ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত। তবে অধিকাংশ নবজাতকই জন্মের পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ একটানা বেশিক্ষণ ঘুমায় না। দুই ঘণ্টা থেকে বড়জোর চার ঘণ্টা অবধি ঘুমানোর পরই জেগে যায় তারা। আর এর ফলাফল? নবজাতক অনিয়মিতভাবে হলেও প্রতিদিন লম্বা সময় ঘুমিয়ে কাটায়, কিন্তু সেটির সাথে প্রথম প্রথম মানিয়ে নিতে না পারার ফলে ঘুমের পরিমাণ কমে যায় তার মায়ের।

দৈনিক পর্যাপ্ত যে পরিমাণ ঘুম তাদের প্রয়োজন, সেটুকু ঘুমাতে পারেন না তারা। সারা দিন তো তারা সন্তানের পেছনে ব্যয় করেনই, পাশাপাশি রাতেও সন্তান জেগে গেলে সঙ্গে সঙ্গে জেগে যেতে হয় তাদেরও। নবজাতকের ঘুমের চক্র প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে সংক্ষিপ্ত। নবজাতকেরা ঘুমের মধ্যে বেশিরভাগ সময় চোখের পাতা হালকা নাড়াতে থাকে। এর কারণ, তখন তাদের হালকা ও অগভীর, র‌্যাপিড আই মুভমেন্ট ঘুম হয়। মস্তিষ্কের বিকাশে এটি খুবই প্রয়োজনীয়। নবজাতকের জন্য ঘুমের অনিয়ম ও অননুমেয়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফেজ এবং এটি বেশিদিন স্থায়ী হয় না।

এছাড়া সাধারণত জন্মের ছয় সপ্তাহ পর থেকেই নবজাতকের ঘুমের রুটিন নিয়মিত হয়ে উঠতে শুরু করে। ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ বয়স থেকেই অধিকাংশ শিশু দিনের বেলা অপেক্ষাকৃত কম সময় এবং রাতের বেলা বেশি ঘুমাতে শুরু করে। অবশ্য বেশিরভাগ শিশুই রাতের বেলা খিদে পেয়ে জেগে ওঠা অব্যাহত রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে অধিকাংশ শিশুই রাতের বেলা একটানা ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুমানোর ক্ষমতা অর্জন করে। কিছু কিছু শিশু হয়তো মাত্র ৬ সপ্তাহ বয়স থেকেই এই অসামান্য সাফল্য লাভ করে, তবে বেশিরভাগ শিশু এই মাইলফলক স্পর্শ করতে ৫ থেকে ৬ মাস লাগিয়ে ফেলে।

লেখক : অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু, বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments