Home লাইফস্টাইল ঘাড় ও কোমর ব্যথায় করণীয়

ঘাড় ও কোমর ব্যথায় করণীয়

দখিনের সময় ডেস্ক:

ব্যথা কোমর থেকে উরু, হাঁটু অথবা পায়ে চলে গেলে তাকে সায়াটিকা বলে। অনেক রোগী পা ঝিঁ ঝিঁ ধরা, পা চিবানোর কথাও বলে থাকেন। পিএলআইডি ও লাম্বার স্পন্ডাইলোলিসথেসিস থেকেই সায়াটিকা হয়ে থাকে। এই রোগীরা কোমরের চেয়ে পায়ে বেশি ব্যথা অনুভব করেন। দাঁড়িয়ে থাকলে, সামনে ঝুঁকে কাজ করলে বা হাঁটাহাঁটি করলে ব্যথা বেড়ে যায়।

বেশির ভাগ ঘাড় ও কোমর ব্যথা খুব সাধারণ কারণে হয়। কিন্তু এই সাধারণ ব্যথাই মানুষকে ভীষণ বিপদে ফেলে দেয়- অনেকে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন বা স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ঘাড় ও কোমর ব্যথা অবহেলার বিষয় নয়। প্রথমিক পর্যায়ে এই ব্যথা নির্মূল করতে না পারলে রোগীকে অনেক ভুগতে হতে পারে এমনকি অপারেশনের টেবিলে পর্যন্ত যেতে হতে পারে।

কোমরের গঠনতন্ত্র থেকে দেখা যায় মেরুদণ্ডের পাঁচটি হাড় নিয়ে কোমর গঠিত। প্রতি দুটি হাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে থাকে তালের শাঁসের মতো ডিস্ক। স্পাইনাল কর্ড বা মেরুরজ্জু থেকে যে স্নায়ু বের হয় তা হাড় ও ডিস্ক সমন্বয়ে গঠিত ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে কোমর নিতম্ব ও পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই হাড় ও ডিস্ক ছাড়াও কোমরে অনেক মাংসপেশি ও লিগামেন্ট রয়েছে। তাই এগুলোর কোনো একটিতে অসামঞ্জস্য তৈরি হলেই কোমর ব্যথা হয়।
কোমর ব্যথার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস ও পিএলআইডি। কোমরের হাড়ের ক্ষয় হলে তাকে লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস বলে। এই ব্যাপারটিকে বোঝাতে বিভিন্নজন ক্ষয় হওয়া, বেড়ে যাওয়া বা ফাঁকা হয়ে যাওয়া বলে থাকেন। তিনটি ব্যাপারই এক।

হাড় ক্ষয়জনিত কোমর ব্যথা সাধারণত চল্লিশের কাছাকাছি বয়সে বেশি হয়। তবে পিএলআইডি বা মাংসপেশিতে টানজনিত কোমর ব্যথা যে কোনো বয়সে হতে পারে। এটি রোগীর কাজের ধরন, খাদ্যাভ্যাস, শরীরের গঠন ও ওজন এমনকি বংশগত কারণের ওপরও অনেকাংশে নির্ভর করে। যারা ভারী কাজ করেন বা সারাদিন বসে কাজ করেন এবং যাদের ওজন অনেক বেশি তাদের কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।

ঘাড় বা কোমর ব্যথায় ব্যথানাশক সাময়িক মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যথানাশক সেবন মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। আর ব্যথানাশক ঘাড় বা কোমর ব্যথার কারণ নির্মূল করতে পারে না। ফিজিওথেরাপি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না এবং ব্যথার কারণকে নির্মূল করে।

গরম হিট সামান্য ট্রাকশান এমনকি সেরাজেম নামক অবৈজ্ঞানিক অপচিকিৎসাকেও অনেকে ফিজিওথেরাপি বলে চালিয়ে দিচ্ছে। তাই রোগীদের খুব সচেতন হতে হবে। ফিজিওথেরাপির প্রধান অংশ হলো রোগ নির্ণয়। শরীরের ঠিক কোন অংশে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা নির্ণয় করতে না পারলে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা কাজে আসবে না। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসককে অবশ্যই সঠিক ডায়াগনোসিস করতে হবে এবং সে মতো চিকিৎসা দিতে হবে, তবেই এই চিকিৎসা কাজে দেবে।

ডা. মোহাম্মদ আলী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

উপজেলা নির্বাচনের ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী

দখিনের সময় ডেস্ক: উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে সাতজন চেয়ারম্যান, নয়জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। এই সংখ্যা...

বাউফলে পুলিশ সদস্যর মৃত্যু

নয়ন সিকদার, বাউফল থেকে: পটুয়াখালীর বাউফলে হার্ট অ্যাটাকে মো. শাহআলম খান (৫৮) নামের এক পুলিশ সদস্যর মৃত্যু হয়েছে। তিনি রাজধাণীর গুলশানে পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত...

কাদের ভাই বলতেন, এখনো সময় হয় নাই

বলা প্রয়োজন, ওবায়দুল কাদেরের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসের ভিত্তি নিশ্চয়ই একদিনে সৃষ্টি হয়নি। এ প্রসঙ্গে ওয়ান ইলেভেনের সেই সময়কার পরিস্থিতিতে ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা অনেকেরই স্মরণে...

বেনজীর ও তাঁর পরিবারের দুর্নীতি তদন্তে দুদকের কমিটি গঠন

দখিনের সময় ডেস্ক: পুলিশের সাবেক মহাপরিচালক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে, পুলিশের সাবেক...

Recent Comments