দখিনের সময় ডেস্ক:
স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করায় মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়েছেন সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মাহমুদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী জিম্মি করা, পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মাহমুদুল ইসলাম তার শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বি অনিককে ইফতারের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছেন। এ সময় তিনি ওই শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপরই মাস্টার্সের মৌখিক পরীক্ষায় তাকে অকৃতকার্য করানোর অভিযোগ ওঠে।
মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শেষ পর্বের শিক্ষার্থী গোলাব রাব্বি অনিকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় নিয়ে দ্বিমত হলে বিভাগীয় প্রধানের। ফলে তিনি শিক্ষকের রোষানলে পড়েন। এরপর বিভাগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে অংশগ্রহণ করতে দেননি। এমনকি মাস্টার্সের ভাইভা ভালো হলেও তাকে ইচ্ছাকৃতভাবেই অকৃতকার্য করেছেন।
আরেক শিক্ষার্থী ইমদাদুল হক তুষার বলেন, বিভাগীয় প্রধান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তার কথার দ্বিমত করলেই পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন—ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়ার কথা বলেন। আমার সঙ্গেও তিনি এমন হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। বিভাগের আয়োজন থেকে বের করে দিয়েছেন।
মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, একজন বিভাগীয় প্রধানের কাছ থেকে আমরা কখনোই এমন আশা করি না। তার সঙ্গে আমাদের সর্ম্পক বন্ধুর মতো হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। তার কাছ থেকে আমরা কোনো সহায়তা পাইনি। আমার বন্ধু অনিককে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর যে ঘটনা ঘটেছে সেটি উচিত হয়নি। এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।
এদিকে অনিকের সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানের করা অন্যায় আচরণের বিচার চেয়ে কলেজ প্রশাসনে লিখিত আবেদন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি আন্দোলন কর্মসূচিও পালন করেন তারা। বিষয়টি স্বীকার করেছে কলেজ প্রশাসন। তবে এই সর্ম্পকে বিস্তারিত কোনো বক্তব্য দেয়নি।
অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মাহমুদুল ইসলাম বলেছেন, পরীক্ষার ফলাফল যখন হয়েছে, তখন আমি ঢাকাতে ছিলাম। ফলাফলে সে (অনিক) অকৃতকার্য হয়েছে। আমি ঢাকা থেকে এসে দেখলাম, তাকে ফেল করানো হয়নি। ভুলবশত প্রাপ্ত নম্বর পাঠানো হয়নি। পরে সংশোধনের জন্য নম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তার সঙ্গে হিংসামূলক কোনো আচরণ করা হয়নি।
বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন, ইচ্ছা করে ওই শিক্ষার্থীকে ফেল করানো হয়নি। ঘটনাটি ‘প্রিন্টিং মিসটেক’। আমরা সংশোধনের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই সংশোধন হয়ে চলে আসবে।