Home শীর্ষ খবর কবিরাজের ছদ্মবেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, নারীরাই ছিল মূল টার্গেট

কবিরাজের ছদ্মবেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, নারীরাই ছিল মূল টার্গেট

দখিনের সময় ডেস্ক:
সাজা থেকে বাঁচতে কবিরাজের ছদ্মবেশে ১৭ বছর পলাতক থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি হেমায়েত নামের এক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির। বুধবার(২৬ অক্টোবর)  রাতে প্রতারণার অভিযোগে রোগীর ছদ্মবেশে হেমায়েত কবিরাজের দরবারে যায় র‌্যাব। সেখানে তাকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে তিনি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
আজ বৃহস্পতিবার( ২৭ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি তুলে ধরেন লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে বাগেরহাট জেলার সদর এলাকায় মনু বেগম নামে এক নারীর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০০৯ সালে ওই হত্যাকাণ্ডে হেমায়েতকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এরপর সে গত ১৭ বছর ধরে দেশে ও ভারতে কবিরাজের ছদ্মবেশে পলাতক জীবনযাপন করেছেন।’
গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে হেমায়েত জানান, ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে কবিরাজি শুরু করেন হেমায়েত। কবিরাজি পেশার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা আদায় করতেন তিনি। তার বাবাও কবিরাজ ছিলেন। পারিবারিকভাবেই কবিরাজির বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল শেখেন হেমায়েত। মূলত নারীরাই ছিল তার প্রতারণার মূল টার্গেট। ২০০৩ সালে স্ত্রী-সন্তানসহ পিরোজপুর থেকে বাগেরহাটে এসে কবিরাজি ব্যবসা শুরু করেন হেমায়েত। কবিরাজি পেশায় তার অন্যতম সহযোগী ছিলেন ওই হত্যা মামলার অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সোবহান।
২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে সোবহান ভিকটিম মনুর মাথা ব্যথার রোগকে মানসিক রোগ আখ্যা দিয়ে চিকিৎসার জন্য হেমায়েতের কাছে নিয়ে আসেন। তখন মনুর কাছে সব শুনে হেমায়েত নজর পড়ে তার জমানো টাকার ওপর। এরপর পরিকল্পনা মোতাবেক মনুকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে দলিলপত্রে টিপসই নেওয়ার চেষ্টা করেন হেমায়েত ও সোবহান। এ নিয়ে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে হেমায়েত মনুকে কুপিয়ে এবং শেষ পর্যন্ত গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ ধান ক্ষেতে লুকিয়ে রাখেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হেমায়েতসহ ৫ জনকে আসামি করে ভুক্তভোগী মনুর বোন বাদী হয়ে বাগেরহাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা হওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে হেঁটে অবৈধভাবে ভারত যান হেমায়েত। আজমীর শরীফে ৩ বছর থাকার পর ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে রাজধানীর মিরপুরে বসবাস শুরু করেন। লম্বা চুল ও দাঁড়িওয়ালা ছবি ব্যবহার করে, আসল নাম ও স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করে জাহিদুল ইসলাম ছদ্মনাম ব্যবহারে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। মিরপুরে প্রতারণা করে বিগত ৫ বছর তিনি মোহাম্মদপুর বছিলায় বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছিলেন। এদিকে হত্যা মামলাটির তদন্ত শেষে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের জুন মাসে বিজ্ঞ আদালত হেমায়েতকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
এছাড়াও ২০১২ সালে দারুস সালাম থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও ২০১৭ সালে তিনি তার কবিরাজি কাজে ব্যবহৃত কষ্টি পাথরের মূর্তি রাখার দায়ে চোরাকারবারী হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর দেড়মাস কারাভোগ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

অনিয়ম-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হালিমা খাতুন স্কুল, ১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ

মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল: দখিনের সময় ডেস্ক: অনিয়ম ও দুর্নীতিতে চরম সংকটে পড়েছে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী বরিশালের হালিমা খাতুন স্কুল। শিক্ষকরা নিয়োজিত কোচিং বানিজ্যে। স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবকদের মধ্যে...

আধাঘণ্টায় ৫০ হাজার ইলেকট্রিক গাড়ির অর্ডার পেল শাওমি

দখিনের সময় ডেস্ক: নিজেদের প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) বাজারে এনেছে চীনের স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় এই গাড়ি উন্মোচন করা হয়। আর...

‘স্পেস স্যুট’ ছাড়া মহাকাশে কতক্ষণ বাঁচবেন নভোচারীরা?

দখিনের সময় ডেস্ক: ভীষণ কঠিন একটি কাজ মহাকাশ ভ্রমণ। যখনই একজন মহাকাশচারী যাত্রা শুরু করেন, তার আগে তাকে অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়। পৃথিবীর বাইরের এমন...

মোবাইল ফোন চার্জের সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

দখিনের সময় ডেস্ক: মোবাইল ফোনের ব্যাটারিতে হঠাৎ বিস্ফোরণ বা আগুন ধরার কারণে প্রায়ই প্রাণহানি ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। মোবাইল চার্জে থাকাকালীন এ ধরনের ঘটনা...

Recent Comments