Home লাইফস্টাইল ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট কমে যাওয়া কতটা বিপজ্জনক

ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট কমে যাওয়া কতটা বিপজ্জনক

দখিনের সময় ডেস্ক:

ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ডেঙ্গু হলে প্রায় সবাই একটি বিষয় নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করেন। তা হলো প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকা কতটা কমে গেল। আসলে প্লাটিলেটের পরিমাণের ওপর ডেঙ্গুর তীব্রতা নির্ভর করে না।

প্লাটিলেটের সংখ্যা ভালো থাকলেই রোগী ভালো থাকবেন বা তাঁর ক্ষেত্রে কোনো আশঙ্কা নেই, তা যেমন নয়; তেমনি প্লাটিলেট দিলেই রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন, এমনও নয়। অনেক কারণেই প্লাটিলেট কমে যেতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় নয়, বরং রোগী মারা যায় ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে। তাই প্লাটিলেটের সংখ্যা ১০ হাজারের ওপরে থাকলে ও রক্তপাত (অ্যাকটিভ ব্লিডিং) না থাকলে, এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
ডেঙ্গু জ্বরে কী ঘটে
ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে রক্তনালিগুলোর দেয়ালে যে ছোট ছোট ছিদ্র থাকে, সেগুলো বড় হয়ে যায়। এতে রক্তনালির দেয়াল ভেদ করে রক্তের জলীয় উপাদান বা রক্তরস নালির বাইরে বের হয়ে আসে। এতে রক্তচাপ কমতে থাকে, হেমাটোক্রিট বা পিসিভি (প্যাকড সেল ভলিউম) বাড়তে থাকে। এটা ঠেকাতে তখন রোগীকে পর্যাপ্ত তরল (ফ্লুইড) দিতে হবে। এই তরল মুখে খাওয়ানো যেতে পারে বা শিরায় দেওয়া যেতে পারে। তবে এ সময় রোগীকে বেশ হিসাব–নিকাশ করে তরল দিতে হয়।
প্লাটিলেট কমে গেলে কী হয়
প্লাটিলেট কমে যাওয়ামাত্রই রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী হঠাৎ মারা যাবেন, বিষয়টি এ রকম নয়। প্লাটিলেট কমলে শরীরে একধরনের মাইনর ক্যাপিলারি ব্লিডিং হয়। সব রোগের ক্ষেত্রে প্লাটিলেটের লক্ষ্যমাত্রাও এক নয়।
মানুষের রক্তে তিন ধরনের রক্তকণিকার সবচেয়ে ছোটটি প্লাটিলেট। রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এটি। তাই এটি কমে গেলে রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং বেড়ে গেলে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোক হতে পারে।
প্লাটিলেট কমে যাওয়ার লক্ষণ
শরীরের যেকোনো স্থান থেকে সূক্ষ্ম রক্তপাত, যা পিনপয়েন্টের আকারে দেখা দেয়। ত্বকে বেগুনি রঙের চিহ্ন দেখা যায়। কারণ, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ হয়।
মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া। মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে। প্রস্রাব বা মলের সঙ্গে রক্তপাত। শরীরের কোথাও কাটলে অনেকক্ষণ ধরে রক্তপাত হওয়া ইত্যাদি।
ডেঙ্গু জ্বরে করণীয়
ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেট কত, তা ঘন ঘন না দেখে বরং রোগীর অন্যান্য বিষয়ে লক্ষ রাখুন। যেমন রক্তচাপ ঠিক আছে কি না, রোগী পানিশূন্যতায় ভুগছেন কি না, যথেষ্ট খেতে পারছে কি না, রক্তের পিসিভি বা হেমাটোক্রিট কেমন, তা দেখা উচিত। সে অনুযায়ী তরল দিতে হবে (ফ্লুইড কারেকশন)।
রক্তচাপ দেখতে হবে। জ্বর বা ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ দেওয়া যাবে না। বিশেষ করে ডাইক্লোফেনাক ও অন্যান্য ব্যথানাশক ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রয়োজন হলে দ্রুত রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন অথবা হাসপাতালে ভর্তি হোন।
ডা. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, ক্লিনিক্যাল হেমাটোলজিস্ট, সহকারী অধ্যাপক, হেমাটোলজি বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

কোথাও সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি, দেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে

দখিনের সময় ডেস্ক: সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের পাহাড়ি এলাকাতেও বহুমুখী ষড়যন্ত্র থেমে...

দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বিচারক নিয়োগ নীতিমালা: প্রধান বিচারপতি

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আইনও করা হবে বলে...

গায়েবি মামলার কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: আসিফ নজরুল

দখিনের সময় ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচার বিভাগ ব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিগত...

ইসরায়েলে মশাবাহিত ‘ওয়েস্ট নাইল’ ভাইরাসে নিহত ৭০, আক্রান্ত ৯১৩

দখিনের সময় ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের দু’টি দেশ লেবানন ও ফিলিস্তিনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় যুদ্ধ শেষ করতে না করতেই, দেশটি নতুনভাবে লেবাননে যুদ্ধ শুরু করেছে। এদিকে, মশাবাহিত...

Recent Comments