Home লাইফস্টাইল পারকিনসন্স রোগে ফিজিওথেরাপি

পারকিনসন্স রোগে ফিজিওথেরাপি

দখিনের সময় ডেস্ক:
পারকিনসন্স হলো একধরনের নিউরো-ডিজেনারেটিভ বা স্নায়বিক রোগ। মস্তিষ্কের ডোপামিন তৈরির কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ রোগ হয়। এর প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য হলো স্নায়ুতে প্রিসাইনাপ্টিক প্রোটিন জমা হওয়া।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগের কারণ নির্ণয় করা যায় না। প্রাইমারি পারকিনসোনিজমের তেমন কোনো অন্তর্নিহিত কারণ পাওয়া যায় না। সেকেন্ডারি পারকিনসোনিজমের পেছনে কিছু কারণ আছে। যেমন পোস্ট-এনকেফালাইটিক বা প্রদাহ, টক্সিন যেমন এমপিটিপি, ম্যাঙ্গানিজ, কার্বন মনোক্সাইড দূষণে এটি হতে পারে। রেসারপিন, আলফা মিথাইলডোপা ওষুধ কিংবা মস্তিষ্কের টিউমার বা আঘাতের কারণেও হতে পারে।
লক্ষণ
প্রথমত, হাত ও পায়ে কাঁপুনি হয়। দ্বিতীয়ত, হাত ও পা স্বাভাবিকের তুলনায় শক্ত হয়ে যায়। তৃতীয়ত, চলাফেরার গতি ধীর হয়ে যায়।
আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারায় সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটতে দেখা যায়।
কণ্ঠস্বর নিচু হতে পারে বা কমে যেতে পারে। এমনকি চোখের পাতার নড়াচড়াও কমতে পারে।
শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে সমস্যা হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি বারবার পড়ে যেতে পারেন। বিশেষ করে হঠাৎ পেছনে ফিরতে সমস্যা হয়। ছোট ছোট পদক্ষেপে সামনে একটু ঝুঁকে হাঁটেন।
হতাশা, উদ্বেগ, উদাসীনতা, মনোযোগহীনতা, ঘুম কমে যাওয়া—এ ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও প্রস্রাব আটকে যাওয়ার মতো সমস্যাও হয়ে থাকে।
কারা ঝুঁকিতে
রোগটি পুরুষদের বেশি হয়। ৫০–এর বেশি বয়সীদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে জেনেটিক কারণে হলে অনেক কম বয়সে রোগটি হতে পারে।
চিকিৎসা
ওষুধের মাধ্যমে রোগটিকে একটি পর্যায়ে স্থির রাখার চেষ্টা করা হয়; যাতে আর না বাড়ে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির কর্মক্ষমতা ও ভারসাম্য বাড়ানোর জন্য ফিজিওথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মেকানিক্যাল থেরাপি
পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোগের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে আইআরআর, ওয়াক্স প্যাক, লো লেভেল স্টিমুলেশন, মাসেল ভাইব্রেটর দেওয়া যেতে পারে।
ম্যানুয়াল থেরাপি
আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্যাসিভ মুভমেন্ট অব দ্য জয়েন্ট, স্লো প্যাসিভ স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, প্রোগ্রেসিভ স্ট্রেন্থদেনিং এক্সারসাইজ, প্যাসিভ জয়েন্ট মোবিলাইজেশন এক্সারসাইজ, ব্যালেন্স এক্সারসাইজ ইন সিটিং ইত্যাদি থেরাপি দেওয়া যায়।
সচেতনতা
■ রোগটি প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা এখনো জানা নেই। তবে দুশ্চিন্তা কমানো, আত্মবিশ্বাস ও সাহস বাড়ানো, সুস্থ হওয়ার আগ্রহ তৈরি করতে হবে।
■ স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ করার চেষ্টা জরুরি।
লেখা:অধ্যাপক আবু সালেহ আলমগীর, বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব ফিজিওথেরাপি মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন, রয়েল ম্যাক্স হাসপাতাল, ঢাকা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments